সমকালীন প্রসঙ্গ-সত্য-অসত্যের রকমফের by আবু সাঈদ খান

সরকার ও বিরোধী দল একই সুরে কথা বলেছে_ এমন দৃষ্টান্ত বিরল। সরকার তার ব্যর্থতা আড়াল করে সাফল্যকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বলে, আর বিরোধী দল সাফল্য বেমালুম অস্বীকার করে কেবল ব্যর্থতাই তুলে ধরে। এবার ঈদের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতার দুটি মন্তব্য দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করতে চাই।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'এবার ঈদে প্রচুর কেনাকাটা হয়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে।' পক্ষান্তরে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, অর্থনৈতিক দুরবস্থায় মানুষ এবার ঈদ করতে পারেনি। কোরবানির পশুর দাম সস্তা হলেও অর্থের অভাবে অনেকে কিনতে পারেনি।' এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোনটি সত্য? একটি সত্য হলে অপরটি অসত্য হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে কোনোটিই ১০০ ভাগ সত্য কিংবা ১০০ ভাগ অসত্য নয়। বলা যায়, দুটি অর্ধ-সত্য কিংবা দুটিই অর্ধ-অসত্য।
আসল সত্য হচ্ছে, গত দুই দশকে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির উন্নতি ঘটেছে, অর্থনীতির আকার বেড়েছে। ফলে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের একাংশের কাছে বেশ নগদ অর্থ জমেছে। তারা অর্থাৎ ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনীতিক, করপোরেট হাউসের কর্মকর্তাসহ বিত্তবানরা বেশ ঘটা করে ঈদ উদযাপন করেছেন। বড় বড় গরু কোরবানি দিয়ে, মাংস বিলিয়ে পরম তৃপ্তি লাভ করেছেন। আর শহরের কেরানি, মধ্যবিত্ত, স্বল্প আয়ের চাকুরেরাও কোরবানি দিতে পেরেছেন ভাগাভাগি করে। অন্যদিকে পিয়ন, হকার, গার্মেন্টকর্মী, কলকারখানা-রেস্তোরাঁ-পরিবহন শ্রমিক, গরিব চাষি, ক্ষেতমজুরসহ স্বল্প আয়ের দরিদ্র মানুষ বাজার থেকে এক-আধ কেজি মাংস কিনে কিংবা ধনীদের বিলি করা মাংস পেয়ে ঈদে আনন্দে শামিল হয়েছেন।
ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়া বড় ও মাঝারি কৃষকদের জন্যও কোরবানি দেওয়া ছিল এবার কঠিন ব্যাপার। তারপরও কৃষকসহ স্বল্প আয়ের অনেকেই সামাজিক মর্যাদার কারণে কোরবানি দিয়েছেন দিতে হয় বলে। তাই অনেককেই ধারদেনা করেও কোরবানি বা ঈদের মেহমানদারিসহ বিভিন্ন খরচ করতে হয়েছে। দেখা যাবে, তাদের ঈদের খরচ সমন্বয় করতে আরেক ঈদ এসে যাবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের স্বল্প আয়ের মানুষের জন্যও কথাটি সত্য। ধার করা পূজার ব্যয়ের সমন্বয় করতে তাদের আরেক পূজার সময় হবে। মধ্যবিত্তের একাংশ ও বিত্তহীন মানুষের ঈদ-পূজা আনন্দের এটিই রহস্য। যাদের ওপরতলায় বসবাস, তাদের জন্য এই মর্যাদা রক্ষার রহস্য অনুধাবন করা কঠিন। তবে রাজনীতিকদের তা বোঝার কথা। এক সময়ের রাজনীতিকরা তা বুঝতেন। শেরেবাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদের মতো রাজনীতিকরা কৃষক ও সাধারণ মানুষের হাঁড়ির খবর রাখতেন। এসব নেতার সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগও ছিল। কিন্তু কালক্রমে রাজনীতিকদের সেই গণযোগাযোগ ফিকে হয়ে এসেছে। রাজনীতিতে জনবিচ্ছিন্ন ধনিক-বণিক-আমলাদের প্রাধান্য বেড়েছে। তারা ধনিক শ্রেণীর চিত্রই শীর্ষ নেতাদের গোচরে আনেন। তাই শীর্ষ নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতিতে সেই চিত্রেরই প্রতিফলন পাই। আমলারা মন্ত্রীদের কেবল প্রশংসাসূচক তথ্যাদি দেন। অনুন্নয়ন-ব্যর্থতার কথা গোপন রাখেন। এই গোলকধাঁধার মধ্যে অর্ধ-সত্যই পরিপূর্ণ সত্য হয়ে ওঠে এবং সেটিই বয়ান হতে থাকে। এ প্রসঙ্গে দারিদ্র্য হ্রাসের বিষয়টি ধরা যাক। বলা হচ্ছে, ২০০৫ সালে দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত জনগোষ্ঠীর শতকরা ৪০ ভাগ। ২০১০ সালে তা কমে শতকরা ৩১.৫ ভাগ হয়েছে। এটি সত্য। কিন্তু দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কি কমেছে? ২০০০ সাল থেকে ২০০৫ পর্যন্ত দারিদ্র্য যে হারে কমেছিল, ২০০৫ থেকে ২০১০ সালে সে হারে কমেনি। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালে সমগ্র জনগোষ্ঠীর ৮.৯% দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছিল, অথচ ২০০৫ থেকে ২০১০ সালে সেই হার ৮.৫ শতাংশ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিলে দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেশি। অর্থাৎ ২০০৫ সালের তুলনায় এখন আরও অধিকসংখ্যক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে শামিল হয়েছে।
এই বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবনকে ঈদের আনন্দ স্পর্শ করেছে? এর বাইরেও দারিদ্র্যসীমার ওপরে যাদের বসবাস, তাদের একাংশকেও কোরবানি বা কেনাকাটা থেকে বিরত থাকতে হয়েছে।
মানুষ কেমন আছে_ তা বোঝার জন্য ভুক্তভোগীদের কাছে কোনো পরিসংখ্যান বা সূচকের দরকার নেই। জনগণ প্রতিদিনের জীবন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করে, তারা কেমন আছে, জীবনের কী পরিবর্তন ঘটছে। তাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-নেত্রীরা যখন বলেন, মানুষের কোনো কষ্ট নেই, দ্রব্যমূল্য তাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে, শ্রমিক-কর্মচারীরা ন্যায্য বেতন পাচ্ছেন, কৃষকদের ফসলের যৌক্তিক মূল্য দেওয়া হচ্ছে, দেশে কেউ অনাহারে নেই ইত্যাদি এখন ভুক্তভোগী জনগণ এসব কথাকে বাগাড়ম্বর মনে করে। আবার বিরোধীরা যখন বলে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। এ বক্তব্যও জনসাধারণ গ্রহণ করে না। তাই সরকার ও বিরোধী দল একে অপরকে ঘায়েল করার প্রবণতা ত্যাগ করে সত্য তুলে ধরলে তা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।
কী সেই সত্য? গত দুই-আড়াই দশকে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে। সবচেয়ে বড় ঘটনা, কৃষক দেশটাকে খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। প্রবাসী শ্রমিকের রেমিট্যান্সে অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল হয়েছে। আরেক সাফল্যের খাত গার্মেন্ট শিল্প। উদ্যোক্তাদের কৃতিত্বকে ছোট করে দেখছি না। তবে এই সাফল্যের মূল নায়ক শ্রমিক, বিশেষ করে নারীরা। সেই সঙ্গে ওষুধ, সিরামিক, কসমেটিকসহ ছোট-মাঝারি বিভিন্ন শিল্পের প্রসার ঘটছে। রাজনৈতিক ঝঞ্ছা-বিক্ষোভের মধ্যেও এসব ক্ষেত্রে অগ্রযাত্রা থেমে নেই। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে এ ক্ষেত্রগুলোর আরও শ্রীবৃদ্ধি ঘটত, অর্থনৈতিক বিকাশ দ্রুততর হতো। এটি কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না যে, উদ্যোক্তা ও কর্মজীবীদের প্রতি রাষ্ট্রীয় যে সমর্থন থাকা প্রয়োজন ছিল, সেটি নেই। যতটুকু আছে তা অপর্যাপ্ত।
কৃষিতে সাফল্যের কথাই ধরা যাক। আশির দশকে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের পরামর্শে ভর্তুকি তুলে দেওয়ায় কৃষক দুর্বিপাকে পড়েছিল। নব্বইয়ের পটপরিবর্তনের পর কৃষিকে বিএনপি-আওয়ামী লীগ সব সরকারই খানিকটা সাপোর্ট দিতে শুরু করে। সেটি উৎপাদনের জন্য সহায়ক হয়েছে। সেই কৃতিত্ব আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের সরকার দাবি করতে পারে। তবে আমি আমার এলাকাসহ আরও কিছু জায়গায় দেখেছি যে, কৃষকের সন্তানরা মধ্যপ্রাচ্য থেকে যে অর্থ পাঠিয়েছে, তা দিয়েই কৃষির আধুনিকায়ন ঘটেছে। প্রবাসী শ্রমিকের পাঠানো অর্থে শ্যালো, পাওয়ার পাম্পসহ কৃষি সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। এমন নানা কারণে উৎপাদন বেড়েছে, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার পথে ধাপে ধাপে এগিয়েছে। তাই খরা-বন্যা, অতিবর্ষণে ফসলের যে বিপর্যয় ঘটত, এখন তা ঘটতে পারে না। আগের মতো মঙ্গা-দুর্ভিক্ষ ঘটছে না। তাই হতদরিদ্র মানুষ দিনান্তে এক মুঠো ভাত খেতে পারছে সত্য, কিন্তু একজন মানুষ সুস্থ থাকার জন্য যে পুষ্টির খাদ্য বা খাদ্যের ক্যালরি দরকার, তা কি তারা পাচ্ছে? একসময় বিলগুলো মাছ, খাসজমি ও জঙ্গল সবজি ও ফলফলাদির উৎস ছিল, যা গরির মানুষরা ভোগ করতে পারত_ আজ সেটি নেই। ফলে গ্রামীণ গরিব মানুষের মধ্যে পুষ্টিহীনতা প্রকট। তাই সরকার যত বড়াই করে বলুক না কেন, মানুষ অনাহারে মরছে না_ সেটিও আপাত সত্য। আসল সত্য হচ্ছে, শিশু, নর-নারী আজ অপুষ্টিতে ধুঁকে ধুঁকে মরছে, যা অনাহারে মৃত্যুরই শামিল।
এটি দ্বিধাহীনভাবে বলা যায় যে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনীতি বিকাশের প্রধান নায়ক কৃষক, প্রবাসী শ্রমিক ও গার্মেন্টকর্মী। তারা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অংশের প্রতিনিধি। তারাই এখন দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরাচ্ছে, আর সুবিধাভোগীরা লুটপাট করে বিদেশে অর্থ পাচার করছে। লন্ডন-নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন দেশে আবাস গড়ছে তারা।
দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে তিন চালিকাশক্তি কৃষক, প্রবাসী শ্রমিক ও গার্মেন্টকর্মীরা ক্ষুব্ধ। কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না, প্রবাসীরা নানা হয়রানির শিকার; সরকার তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে না। ঊর্ধ্বমুখী বাজারে গার্মেন্টকর্মীরা সামান্য বেতনে দিশেহারা। তাদের আবাসন সমস্যার সমাধান আজও হয়নি। রেশনিং ব্যবস্থার দাবিও সরকার শুনছে না। কৃষক, শ্রমিক, প্রবাসীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত না করে উন্নয়নের ধারা কি অব্যাহত রাখা আদৌ সম্ভব?
এটি সত্য, দেশে জাতীয় প্রবৃদ্ধি বা জিডিপি বাড়ছে, মানুষের মাথাপিছু আয়ও বাড়ছে। কিন্তু আরও সত্য, মানুষে মানুষে বৈষম্যও বাড়ছে। ধনীর সংখ্যা বেড়েছে, বেড়েছে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যকার বৈষম্য। বৈষম্য যে হারে বেড়ে চলেছে, তা দেশের টেকসই উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্য বড় হুমকি। কোনো ক্ষেত্রে উৎপাদন বা উন্নয়নের সূচনাই শেষ কথা নয়, তা ধরে রাখা এবং উত্তরোত্তর এর অগ্রগতি ঘটানো জরুরি। তা না করা হলে সেই উন্নয়নের ধারা থেমে যাবে। তখন সেটি হবে আরেক বিড়ম্বনা, সমূহ বিপদ। দেশের উৎপাদন ও উন্নয়নের মুনাফা যদি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী ভাগীদার না হয় তবে তা দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। তাই উন্নয়নের সঙ্গে বণ্টনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ৫৬ হাজার বর্গমাইলে ১৬ কোটি মানুষের বাস, সীমিত সম্পদের ওপর ধনবাদী শোষণের লাগাম টেনে না ধরলে অর্থনীতি টেকসই হতে পারে না। সে ক্ষেত্রে সংবিধান নির্দেশিত পরিকল্পিত অর্থনীতির কথা ভাবতে হবে।
দেশে অর্থনীতির বিকাশ ঘটলেও পরনির্ভরতা থেকে দেশ মুক্ত হচ্ছে না। বাংলাদেশের ঋণের বোঝা কমছে না। এখন দেশের মাথার ওপর ১৪ হাজার ৩৬ কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণের বোঝা। জনগণের মাথায় বিরাট ঋণের বোঝা চাপিয়ে স্বনির্ভরতা অর্জন কবে, কীভাবে হবে_ সেটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
দেশের কোনো কোনো ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটেছে সত্য। কিন্তু তা বিশ্ব প্রেক্ষাপটে পরিমাপ করা দরকার। আমাদের মেধাবী পরিশ্রমী জনগোষ্ঠী, উর্বর জমি, বিস্তীর্ণ সমুদ্র, প্রাকৃতিক সম্পদ থাকার পরও স্বাধীনতার ৪১ বছরে আমরা কতটুকু এগিয়েছি? আমাদের হিসাব মেলানো দরকার, এই সময়ে একই ধরনের অর্থনীতির দেশগুলোর কতখানি অগ্রগতি ঘটেছে। সাদা চোখেই দেখা যায়_ এই ৪১ বছরে মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডের যে অগ্রগতি ঘটেছে, সেই তুলনায় আমাদের অগ্রযাত্রা সামান্যই; এমনকি গৃহযুদ্ধে বিপন্ন শ্রীলংকার তুলনায়ও অনেক পিছিয়ে আমরা। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হানাহানির রাজনীতিই আমাদের উন্নয়নের চাকাকে খামচে ধরে আছে। রাজনীতির সুস্থধারা তৈরি হলে বাংলাদেশের পক্ষে অনেক আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব হতো।
প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, শেয়ারবাজারের রাঘববোয়াল-ডেসটিনি-হলমার্ক যখন প্রতারণা-জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের অর্থ লোপাট করছে, যখন ভোগ-বিলাস-ভ্রমণে দেদার রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তখন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও সৎ উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় ঋণ সহায়তা পাচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে আমরা সরকারের বক্তব্য ও বিরোধী দলের প্রস্তাবনা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুনতে চাই। শিশু-কিশোরদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত হবে কিনা, বেকারের কর্মসংস্থান হবে কিনা, সে ব্যাপারে যৌক্তিক কর্মসূচির কথা আমরা শুনতে চাই। কার আমলে দেশে উন্নয়ন বন্যা বইছে, সেই ঢালাও মন্তব্য শুনতে চাই না। কোন সরকার কী করেছে, তা দেশবাসীর অজানা নয়। তা জানার চেয়ে জরুরি, কোন সরকার আগামীতে কী করবে, কী তাদের কর্মসূচি। তাদের কর্মসূচিতে কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, শিল্পনীতি কী হবে, সে লক্ষ্যে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে_ জনগণ সেটি জানতে উদগ্রীব। জনগণ সরকারি ও বিরোধীদলীয় নেতাদের কাদা ছোড়াছুড়ি-হানাহানি দেখতে চায় না। কে কাকে এক হাত দেখিয়ে দেবে_ এই সামন্তবাদী আস্ফালন বন্ধ করে সরকার ও বিরোধী দল ইতিবাচক রাজনীতির ধারা সূচনা করবে_ সেটাই আজ কাম্য।

আবু সাঈদ খান : সাংবাদিক
ask-bangla71@yahoo.com
www.abusayeedkhan.com

No comments

Powered by Blogger.