এই অসম্ভব কীভাবে সম্ভব হলো!
উত্তর
কোরিয়ার নেতা কিম জং আনের সাথে আলোচনায় বসার এক আমন্ত্রণ মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রহণ করার পর সারা দুনিয়ায় হৈচৈ পড়ে গেছে
বললে একটুও কম বলা হয় না। এর গুরুত্ব-তাৎপর্য কত বিরাট? এ নিয়ে এখন
বিশ্লেষকদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা। "প্রেসিডেন্ট নিক্সন যখন চীনের
চেয়ারম্যান মাও জেদং-এর সাথে দেখা করেছিলেন - ট্রাম্প-কিম বৈঠকের তাৎপর্য
প্রায় তার সাথে তুলনীয়" - বলছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মার্কিন-কোরিয়া
ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক মাইকেল ম্যাডেন। এই প্রথম উত্তর কোরিয়া এবং
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দুই নেতার মধ্যে বৈঠক হবে। কি করে এটা সম্ভব হলো?
কেউ বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার নেতা মুন জে-ইনের কূটনৈতিক প্রতিভা, কেউ আবার
বলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপজ্জনক চাল দিয়ে খেলায় জিতে আসার ক্ষমতা একে
সম্ভব করেছে। তবে সোল থেকে বিবিসির লরা বিকার বলছেন, এই রাজনৈতিক জুয়ায়
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়তো কিম জং উন-ই - যিনি এখন পর্যন্ত কোনো
কথাই বলেননি। কিছুদিন আগেও ট্রাম্প এবং কিম জং-উন পরস্পরের উদ্দেশ্যে
কটু্ক্তি করে চলেছিলেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংস করে
দেবেন। তার পর হঠাৎ করেই তাদের মধ্যে বৈঠক হওয়ার খবর সবাইকে চমকে দিয়েছে।
মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, এটা প্রমাণ করে যে আমেরিকার
কঠোর নীতিতে কাজ হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই বৈঠকের খবর জানানোর পর এখন
পর্দার পেছনে কী ঘটবে? বৈঠকটি কোথায় কখন হবে সে সম্পর্কে এখনো জানা যাচ্ছে
খুবই কম।
হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করেছে যে এই বৈঠক হবে মে মাসের মধ্যে। কোথা
হবে তা ঠিক হয়নি। ম্যাডেন বলছেন, এ বৈঠক হয়তো উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার
সীমান্তের মধ্যেকার অ-সামরিকীকৃত গ্রাম পানমুনজমে-এ হতে পারে। অন্য আরেক
বিশ্লেষক কোরিয়া ওয়ার্কিং গ্রুপের ড. জন পার্ক বলেছেন, বৈঠকটি একটা চীনে
বা অন্য কোন নিরপেক্ষ বা তৃতীয় দেশে হতে পারে। কী নিয়ে আলোচনা হবে -
সেটাও একটা বড় প্রশ্ন। কিম যদিও বলেছেন, তিনি 'পারমাণবিক অস্ত্র বিলোপের
ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ' - কিন্তু বিশ্লেষক ব্রুস বেনেট বলছেন, এটা মনে
রাখতে হবে যে কিম বার বার বলেছেন তিনি তার পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবেন
না। এ ছাড়া হয়তো উত্তর কোরিয়ায় বন্দী আমেরিকানদের মুক্তি, দুই পক্ষের
মধ্যে একটা শান্তি চুক্তি এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমেরিকান সৈন্য
প্রত্যাহারের মতো বিষয়গুলো উঠতে পারে। উত্তর কোরিয়া নিশ্চয়ই চাইবে যে
তাদের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হোক। তবে কি পরিমাণ নিষেধাজ্ঞা
উঠে যাবে তা আগে থেকে বলা কঠিন। বিশ্লেষক ব্রুস বেনেট বলছেন উত্তর কোরিয়ার
ওপর এখন এত কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে যে তার ফলেই তারা আলোচনার
টেবিলে আসতে বাধ্য হয়েছে। "এমন খবর বেরিয়েছে যে উত্তর কোরিয়ার হাতে
অক্টোবর মাস নাগাদ আর হয়তো কোনো নগদ অর্থ থাকবে না । তাই আমার মনে হয়
উত্তর কোরিয়া সত্যি সমস্যায় পড়েছে" - বলেন বেনেট।
কিম-ট্রাম্প বৈঠকের ফল কি হবে?
বেনেট বলেন, "সম্ভবত দুই পক্ষই কিছু ছাড় দিয়ে কিছু পাওয়ার মতো একটা আপোষ রফায় পৌঁছাতে পারবে, এমন সম্ভাবনা আছে। সবচেয়ে খারাপ যা হতে পারে তা হলো বৈঠক হলেও কোনো অগ্রগতি না হওয়া।"
কিম-ট্রাম্প বৈঠকের ফল কি হবে?
বেনেট বলেন, "সম্ভবত দুই পক্ষই কিছু ছাড় দিয়ে কিছু পাওয়ার মতো একটা আপোষ রফায় পৌঁছাতে পারবে, এমন সম্ভাবনা আছে। সবচেয়ে খারাপ যা হতে পারে তা হলো বৈঠক হলেও কোনো অগ্রগতি না হওয়া।"
No comments