গরমের শুরুতেই সবজির মূল্যবৃদ্ধি
গত
কয়েক দিনে রাজধানী ঢাকায় গরমের তীব্রতা বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে
ঘরে ঘরে বেড়েছে রোগ-শোকের প্রাদুর্ভাব। স্বাভাবিক কারণেই দাম বেড়েছে ওষুধি
শাক-সবজির। বিশেষ করে করল্লা, লাউ, পেপে, কাঁচকলা, লেবু প্রভৃতির দাম
অস্বাভাবিক বেড়েছে। অব্যাহত রয়েছে চালের মূল্যবৃদ্ধিও। চলতি সপ্তাহে বেড়েছে
কেজিতে দুই টাকা। এছাড়া মাছ, মুরগি, ডিম, তেল, চিনি, গরুর গোশত এবং
অন্যান্য সবজির দাম অফরিবর্তিত আছে বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা। শুক্রবার
রাজধানী ঢাকার কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, ওষুধি সবজি
হিসেবে পরিচিত করল্লা, লাউ, পেপে, কাঁচকলা, লেবু প্রভৃতির দাম অস্বাভাবিক
বেড়েছে। ৫০ টাকা থেকে বেড়ে প্রতি কেজি করল্লা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০
টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা। গত সপ্তাহে যে টক টমেটো
২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছিল, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার একই মানের
টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করতে দেখা যায়। পেপের কেজি ৫ টাকা
বেড়ে হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। লেবুর হালি ৫০ টাকা ছূয়েছে। একেকটি লাউ বিক্রি
হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কাঁচকলার হালি ৫ টাকা বাড়িয়ে ৩০ টাকায় বিক্রি করতে
দেখা যায়। তবে অন্যান্য সবজির দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে। খুচরা বাজারে
শুক্রবার প্রতিটি ফুলকপি ও পাতাকপি আকারভেদে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, শসা
প্রতিকেজি ৪০ টাকা, সিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা
৫০ থেকে ৬০ টাকা, ডায়মন্ড আলু ১৫ থেকে ১৬ টাকা, গ্রানুলা ১২ থেকে ১৪ টাকায়
এবং মটরশুটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। লাল শাক, পালং শাক, লাউ
শাকসহ অন্যান্য সবজিও গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কম দামে বিক্রি করতে দেখা
যায়। গত এক সপ্তাহে বাজারে সবধরণের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা।
খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হয় ৬২ থেকে ৬৬ টাকা। মাঝারি
মানের চাল বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫১ থেকে ৫৩ টাকা। অন্যান্য চালের মধ্যে
মাঝারি মানের নাজিরশাইল ৬৪ থেকে ৬৮ টাকা। ভালো মানের নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭২
টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মোটা চাল স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকায়।
বিক্রেতারা জানান, আমন মওসুম শেষ হওয়ার পর এখন ধাপে ধাপে চালের দাম বাড়ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে
সবধরণের মাছ। বাজারে গতকাল প্রতি কেজি রুই মাছ ২৩ থেকে ২৮০, কাতল ২২০ থেকে
২৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৫০, সিলভারকার্প ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া
১৬০ থেকে ১৮০, শিং ও মাগুর মাছ বিক্রি হয় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। তবে দেশি
মাছের দাম অনেক বেশি। প্রতি কেজি টেংরা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা।
শোল মাছের কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাটা মাছ কেজিপ্রতি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায়
বিক্রি করতে দেখা যায়। এছাড়া সাগরের মাছের মধ্যে ৭০০ থেকে ৮০০ প্রাম সাইজের
প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০ টাকা, কোরাল প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০, রূপচান্দা
আকারভেদে ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। বিক্রেতারা জানান, বাজারে
দেশি মাছের চাহিদা বেশি, তাই এর দামও বেশি। বাজারে শুক্রবার পেঁয়াজের দর
কিছুটা কমেছে। দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৮ থেকে ৪২
টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও গত বছরে এই সময়ে ছিল দেশি পেঁয়াজ ২২ থেকে ২৮ ও
আমদানি করা পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৪ টাকা। দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে রসুন ও আদার দাম।
এখন প্রতি কেজি দেশি রসুন ৫০ থেকে ৮০ এবং আমদানি করা রসুন ৯০ থেকে ১২০
টাকা হয়েছে। আর আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। এখন লবণের মৌসুম
থাকলেও দাম কমছে না। সুপার লবণ ৩৮ থেকে ৪০ ও সাধারণ লবণ ২৫ থেকে ৩০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে।
No comments