উপমহাদেশের প্রথম হাদিস শিক্ষা কেন্দ্র সোনারগাঁয়ে by ইকবাল মজুমদার তৌহিদ
উপমহাদেশের
প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ শেখ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা (রহঃ) ছিলেন
ইয়েমেনের অধিবাসী। ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানরা তার সান্নিধ্য পেয়ে ধন্য
হয়। ত্রয়োদশ শতাব্দীর পর থেকে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে যে সকল
অলি-আউলিয়া, পীর-দরবেশ, সুফি-সাধক, ধর্ম-প্রচারক ও আধ্যাত্মিক সাধক এসেছেন
তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
গিয়াসউদ্দিন বলবনের আমলে শেখ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আনুমানিক ১২৭৭ সালে দিল্লিতে আগমন করেন। তার মতো আল্লাহর ওলির আগমনে সকলে তার দরবারে ভিড় জমাতে থাকলে শায়খের জনপ্রিয়তা এক সময় বাদশার প্রসিদ্ধি ও প্রভাবকেও অতিক্রম করে।
তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে গিয়াসউদ্দিন বলবন আবু তাওয়ামাকে অনুরোধ করে বাংলায় পাঠিয়ে দেন। আবু তাওয়ামা তদানীন্তন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁয়ে এসে ধর্মপ্রচার শুরু করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় এসে বর্তমান মোগরাপাড়া দরগাবাড়ী প্রাঙ্গণে একটি বৃহৎ মাদ্রাসা ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরী গড়ে তোলেন। বর্তমানে মাদ্রাসাটির কর্যক্রম নেই এবং এর অবকাঠামোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
হাদিস ও ইসলামী আইনশাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি ভেষজশাস্ত্র, গণিত, ভূগোল এবং রসায়নশাস্ত্রের একজন পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। ফলে তার প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরীটি ছিল বেশ আধুনিক ও সমৃদ্ধশালী। গবেষকদের মতে তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাই ছিলো উপমহাদেশের ইলমে হাদিসের সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ। ধারণা করা হয়, তৎকালীন সময়ে দূর-দূরান্ত থেকে জ্ঞান অর্জন করতে আসা এ মাদরাসার ছাত্রসংখ্যা ছিলো ১০ হাজার।
তিনি এখানে দীর্ঘ ২৩ বছর হাদিসের পাঠ দিয়েছিলেন। এখানে একটি খানকাও প্রতিষ্ঠা করেন। ‘মানজিলে মাকামাত’ নামে তাসাউফ সর্ম্পকে তার একটি লিখিত বই আছে।
এছাড়াও সোনারগাঁয়ের এ বিদ্যাপীঠে অবস্থানকালে শায়খ ছাত্রদের উদ্দেশ্যে ফিকাহ্ বিষয়ক যেসব বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সেগুলোর সংকলনে ফার্সি ভাষায় রচিত ‘নামায়ে হক’ একটি কাব্যগ্রন্থের অস্থিত্ব পাওয়া যায়। এ গ্রন্থে ১৮০টি কবিতা আছে। কেউ কেউ তা ‘মসনবী বনামে হক’ নামে অভিহিত করেছেন। গ্রন্থটি ১৮৮৫ সালে বোম্বাই থেকে এবং ১৯১৩ সালে কানপুর থেকে প্রকাশিত হয়।
জানা যায়, ব্রিটিশ জাদুঘরের আর্কাইভ ভবনে শায়খ শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামার লিখিত পান্ডুলিপির অস্তিত্ব রক্ষিত আছে।
তার প্রতিষ্ঠিত এ মাদ্রাসাই উপমহাদেশের ইতিহাসে হাদিসের আনুষ্ঠানিক পাঠদান শুরু করেছে।
বিশ্ববিখ্যাত মুসলিম পর্যটক ইবনে বতুতা তার লেখা, ‘রেহালায়ে এবনে বতুতায়’ এই ঐতিহাসিক মাদ্রাসার কথা উল্লেখ করেন।
সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তিনি উপমহাদেশের ধর্মীয় ইতিহাসে কালজয়ী হয়ে থাকবেন। শায়খ আবু তাওয়ামা হিজরী ৭০০ মোতাবেক ১৩০০ খ্রীস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
বর্তমানে মহান এ ধর্ম প্রচারকের মাজারটি সোনারগাঁয়ের দরগাবাড়ী গেলে দেখা যায়। পাশাপাশি ছয়টি মাজারের মধ্যে সবুজ রং করা মাজারটি শায়খের।
প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মাজার দেখতে আসেন শিক্ষানুরাগী ও শায়খের ভক্তবৃন্দ। ধারণা করা হয় তার পাশের পাঁচটি মাজার তার শিষ্য কিংবা মাদ্রাসা শিক্ষকদের। ১৯৮৪ সালে ইসলামী দার্শনিক ও চিন্তাবিদ সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী (রহঃ) হিন্দুস্তান থেকে সোনারগাঁয়ে এসে শায়খের কবর জিয়ারত ও মুনাজাত করেন। এবং মাজার থেকে অল্পদূরে ভাগলপুর এলাকায় শায়খ শরফুদ্দিনের স্মৃতি রক্ষার্থে ‘মাদ্রাসাতুশ শরফ আল ইসলামিয়া’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন, যা বর্তমানে সোনারগাঁয়ে ইসলামী শিক্ষার জ্যোতি ছড়াচ্ছে।
গিয়াসউদ্দিন বলবনের আমলে শেখ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আনুমানিক ১২৭৭ সালে দিল্লিতে আগমন করেন। তার মতো আল্লাহর ওলির আগমনে সকলে তার দরবারে ভিড় জমাতে থাকলে শায়খের জনপ্রিয়তা এক সময় বাদশার প্রসিদ্ধি ও প্রভাবকেও অতিক্রম করে।
তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে গিয়াসউদ্দিন বলবন আবু তাওয়ামাকে অনুরোধ করে বাংলায় পাঠিয়ে দেন। আবু তাওয়ামা তদানীন্তন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁয়ে এসে ধর্মপ্রচার শুরু করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় এসে বর্তমান মোগরাপাড়া দরগাবাড়ী প্রাঙ্গণে একটি বৃহৎ মাদ্রাসা ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরী গড়ে তোলেন। বর্তমানে মাদ্রাসাটির কর্যক্রম নেই এবং এর অবকাঠামোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
হাদিস ও ইসলামী আইনশাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি ভেষজশাস্ত্র, গণিত, ভূগোল এবং রসায়নশাস্ত্রের একজন পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। ফলে তার প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরীটি ছিল বেশ আধুনিক ও সমৃদ্ধশালী। গবেষকদের মতে তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাই ছিলো উপমহাদেশের ইলমে হাদিসের সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ। ধারণা করা হয়, তৎকালীন সময়ে দূর-দূরান্ত থেকে জ্ঞান অর্জন করতে আসা এ মাদরাসার ছাত্রসংখ্যা ছিলো ১০ হাজার।
তিনি এখানে দীর্ঘ ২৩ বছর হাদিসের পাঠ দিয়েছিলেন। এখানে একটি খানকাও প্রতিষ্ঠা করেন। ‘মানজিলে মাকামাত’ নামে তাসাউফ সর্ম্পকে তার একটি লিখিত বই আছে।
এছাড়াও সোনারগাঁয়ের এ বিদ্যাপীঠে অবস্থানকালে শায়খ ছাত্রদের উদ্দেশ্যে ফিকাহ্ বিষয়ক যেসব বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সেগুলোর সংকলনে ফার্সি ভাষায় রচিত ‘নামায়ে হক’ একটি কাব্যগ্রন্থের অস্থিত্ব পাওয়া যায়। এ গ্রন্থে ১৮০টি কবিতা আছে। কেউ কেউ তা ‘মসনবী বনামে হক’ নামে অভিহিত করেছেন। গ্রন্থটি ১৮৮৫ সালে বোম্বাই থেকে এবং ১৯১৩ সালে কানপুর থেকে প্রকাশিত হয়।
জানা যায়, ব্রিটিশ জাদুঘরের আর্কাইভ ভবনে শায়খ শরফুদ্দীন আবু তাওয়ামার লিখিত পান্ডুলিপির অস্তিত্ব রক্ষিত আছে।
তার প্রতিষ্ঠিত এ মাদ্রাসাই উপমহাদেশের ইতিহাসে হাদিসের আনুষ্ঠানিক পাঠদান শুরু করেছে।
বিশ্ববিখ্যাত মুসলিম পর্যটক ইবনে বতুতা তার লেখা, ‘রেহালায়ে এবনে বতুতায়’ এই ঐতিহাসিক মাদ্রাসার কথা উল্লেখ করেন।
সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তিনি উপমহাদেশের ধর্মীয় ইতিহাসে কালজয়ী হয়ে থাকবেন। শায়খ আবু তাওয়ামা হিজরী ৭০০ মোতাবেক ১৩০০ খ্রীস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
বর্তমানে মহান এ ধর্ম প্রচারকের মাজারটি সোনারগাঁয়ের দরগাবাড়ী গেলে দেখা যায়। পাশাপাশি ছয়টি মাজারের মধ্যে সবুজ রং করা মাজারটি শায়খের।
প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মাজার দেখতে আসেন শিক্ষানুরাগী ও শায়খের ভক্তবৃন্দ। ধারণা করা হয় তার পাশের পাঁচটি মাজার তার শিষ্য কিংবা মাদ্রাসা শিক্ষকদের। ১৯৮৪ সালে ইসলামী দার্শনিক ও চিন্তাবিদ সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী (রহঃ) হিন্দুস্তান থেকে সোনারগাঁয়ে এসে শায়খের কবর জিয়ারত ও মুনাজাত করেন। এবং মাজার থেকে অল্পদূরে ভাগলপুর এলাকায় শায়খ শরফুদ্দিনের স্মৃতি রক্ষার্থে ‘মাদ্রাসাতুশ শরফ আল ইসলামিয়া’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন, যা বর্তমানে সোনারগাঁয়ে ইসলামী শিক্ষার জ্যোতি ছড়াচ্ছে।
No comments