বিশ্বকাপে জয়ের ফরমুলা আইপিএলে!
আরো আগ থেকে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) টুয়েন্টি টুয়েন্টি ক্রিকেট থাকলে ২০০৩ বিশ্বকাপ ভারতই জিততো বলে মনে করেন দেশটির সাবেক মাস্টার ব্লাস্টার ব্যাটসম্যান শচিন টেন্ডুলকার। নিজের বায়োপিক ‘সচিন, আ বিলিয়ন ড্রিমস’-এর প্রচার অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন টেন্ডুলকার। তিনি বলেন, ‘আইপিএল টি-২০ ক্রিকেটের এমন রমরমা অবস্থা আগে থাকলে ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ৩৫৯ রানের বিশাল টার্গেট পেরিয়ে যেতে পারতো ভারত। ফলে আরও আগেই বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেতো টিম ইন্ডিয়া।’ ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয় আইপিএলের টি-২০ দামামা। এরপর থেকে আগ্রাসী মানসিকতা ধারণ করেন ব্যাটসম্যানরা। সেই প্রভাব গিয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। তাই এখন হরহামেশাই ওয়ানডেতে ৩৫০’র বেশি রান করছে দলগুলো এবং পরে তা সহজে পেরিয়েও যাচ্ছে প্রতিপক্ষ।
ওয়ানডের মত টি-২০ এবং টেস্টেও প্রভাব পড়েছে আইপিএলের মানসিকতা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাটসম্যানদের এমন আগ্রাসী মনোভাবে ১৪-১৫ বছর আগে থাকলে ভারত আরও আগে বিশ্বকাপ জিততে পারতো বলে মনে করেন টেন্ডুলকার। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ছুঁড়ে দেয়া ৩৫৯ রানের টার্গেট সহজেই স্পর্শ করে ফেলতো ভারত বলে জানান তিনি, ‘এখনকার মতো আইপিএল ও টি টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে আমাদের ব্যাটসম্যানরা যদি তখনও এত আক্রমণাত্মক ও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত হতে পারতো, তাহলে হয়তো সে দিন ৩৫৯ রানের টার্গেটটা আমরা অতিক্রম করতে পারতাম। এখন আবার যদি সেই ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতাম আমরা, তা হলে ব্যাটিংয়ের ধরনটাই অন্য রকমের হতো। পিটিয়ে হয়তো বড় টার্গেটা স্পর্শ করে ফেলতাম। এখনকার ব্যাটসম্যানরা যেমন বলে বলে রান তোলে এবং বড় টার্গেট কিভাবে স্পর্শ করতে সেই ফর্মুলাও তারা জানে।’ এখনকার ক্রিকেটে ওয়ানডেতে সাড়ে তিনশো রান খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক টেন্ডুলকার। তিনি বলেন, ‘অনেকবারই তো ৩২৫-৩৪০ রানের বেশি করেছি আমরা। বিশ্বের অন্যান্য দলগুলোও তা করছে সহজে।
কারণ, আইপিএল ও টি-২০ ক্রিকেটের কারনে ফরম্যাট-নিয়ম সব এখন বদলে গেছে। খেলোয়াড়দের মানসিকতাও এখন অনেক বদলে গিয়েছে, যা আমরা ২০০৩ সালে পাইনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এসে যাওয়ায় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আগ্রাসী মনোভাব চলে এসেছে।’ নিজের বায়োপিক ‘সচিন, আ বিলিয়ন ড্রিমস’-এর বিশেষ বিশেষ অংশ পুত্র অর্জুন ও কন্যা সারাকে দেখান টেন্ডুলকার। অর্জুন-সারার এই বায়োপিক বেশ পছন্দ হয়েছে বলে জানালেন টেন্ডুলকার, ‘পুরো বিশ্বের কাছে আমি ক্রিকেটার হলেও ওদের কাছে আমি ওদের বাবা। তাই ওরা এই ছবি দেখে কী বলে, তা জানা প্রয়োজন ছিলো। যখন জানলাম অর্জুন-সারার ছবিটা ভালো লেগেছে, তখন বুঝলাম জেমস (আর্সকিন) খুব ভালো কাজ করেছে।’ পুত্র ও কন্যাকে দেখানোর পর এ বার এই ছবি তার ক্রিকেট-গুরু রমাকান্ত আচরেকরও দেখাবেন টেন্ডুলকার, ‘আজই ছবিটা দেখবেন স্যার। তাকে বাদ দিয়ে তো আমার জীবনে কোনো কিছুই সম্ভব নয়।’ সূত্র : বাসস
No comments