হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নেয়া হল পার্ককে
দুর্নীতির অভিযোগে দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাইয়ের বিচার শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার হাতকড়া পরিয়ে একটি প্রিজন ভ্যানে করে তাকে রাজধানী সিউলের সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট আদালতে হাজির করা হয়। মার্চ মাসে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে এই প্রথম প্রকাশ্যে এলেন তিনি। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার তার বিরুদ্ধে ঘুষগ্রহণ, সরকারি গোপন বিষয় ফাঁস এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মোট ১৮টি অভিযোগ আনা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। পার্ক জিউন হাইয়ের আইনজীবী ইয়ো ইয়েং-হা আদালতের শুনানিতে বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার বড় বড় কোম্পানিগুলোকে চাঁদা দিতে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কেন না, তিনি এ অর্থ নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারতেন না। এ সময় বিচারক পার্ক জিউন হাইকে তার অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, ‘আমার আইনজীবী যা বলেছেন,
আমার অবস্থান সেটাই।’ পার্ক জিউন হাইয়ের বিরুদ্ধে বান্ধবী চই সুন সিলের সঙ্গে যোগসাজশের ভিত্তিতে ঘুষগ্রহণ ও চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। কৌঁসুলিরা বলছেন, চই সুন সিলের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য পার্ক জিউন হাই দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায় করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে চইয়ের কাছে সরকারি গোপনীয় তথ্য ফাঁসেরও অভিযোগ রয়েছে। অর্থ আত্মসাৎ ও বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় লোটে গ্রুপের চেয়ারম্যান শিন দং বিনের বিচার চলছে। সরকারি কৌঁসুলিরা তার বিরুদ্ধে পার্কের প্রশাসনকে ঘুষ দেয়ার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছেন। একই অভিযোগে এরই মধ্যে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম কোম্পানি স্যামসাং গ্রুপের ভবিষ্যৎ কর্ণধার লি জায়ে ইয়ং। তার বিরুদ্ধে পার্ক জিউন হাই ও তার বান্ধবী চই সুন সিলকে ঘুষের প্রস্তাব অথবা প্রতিশ্রুতি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, চই সুন সিল তার নিয়ন্ত্রণাধীন মির ও কে-স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের জন্য স্যামসাং গ্রুপ, লোটে গ্রুপসহ দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন কোম্পানি থেকে প্রায় ৭ কোটি ডলার (৭ হাজার ৭৪০ কোটি ওন) চাঁদা আদায় করেছেন। অভিশংসনের পর গত মার্চে গ্রেফতার হন তিনি। তবে কোরীয় প্রেসিডেন্টদের মধ্যে তিনিই প্রথম হাতকড়া পরেননি। তার পূর্বসূরি রোহ তায়ে উ ও চুন দু হুয়ানকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল।
No comments