সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়ান : সু চিকে রিচার্ডসন
মিয়ানমার
পরিস্থিতিতে সে দেশের সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছেন রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে
গঠিত পরামর্শক কমিটি থেকে সদ্য পদত্যাগ করা মার্কিন কূটনীতিক বিল
রিচার্ডসন। সু চিকে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে।
পাশাপাশি মিয়ানমারে এখনই পশ্চিমা অবরোধ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন এবং
অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে সু চিকে বের করে আনতে তাকে আরেকটিবার সুযোগ দেয়ার
আহ্বান জানিয়েছেন এই পশ্চিমা কূটনীতিক। ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা
চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে
বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ছয় লাখেরও বেশি মানুষ।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের
আলামত। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের
‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। রাখাইনের সহিংসতাকে জাতিগত নিধন
আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে
আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী ও
রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিও রোহিঙ্গাদের পক্ষে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা
নিতে সক্ষম হননি। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত হয়েছেন তিনি। হারিয়েছেন বহু
সম্মাননা। তবু সেই সু চিকেই ভরসা করতে চান রিচার্ডসন। বলেন, ‘আমি মনে করি,
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত খুবই জরুরি এবং সু চিই একমাত্র ব্যক্তি
যিনি সফলভাবে কাজটি করতে সক্ষম। আমি মনে করি, সু চির এই কাজ শুরু করা
উচিত।’ আশয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি তাদের ফিরিয়ে
নেয়ার জন্যও মিয়ানমারকে চাপ দিচ্ছিল বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক বিশ্ব। গত ২৩
নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা
প্রত্যাবাসনের জন্য একটি অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তিতে সই করেন। এরপর ১৯
ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয় এবং ১৬ জানুয়ারি ফিজিক্যাল
অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তি সই হয়। সর্বশেষ অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুযায়ী দুই দেশের
সীমান্তে অস্থায়ী ক্যাম্পে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২৩ জানুয়ারি
প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে এখনো অনেক কাজ বাকি বলে
সেটিও পিছিয়ে যায়। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে শুরু হতে যাওয়া সেই
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়েও কথা বলেন রিচার্ডসন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে তড়িঘড়ি করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
No comments