উখিয়ায় বন্ড গার্ল মিশেল ইয়ো
নিরুপায়
হয়ে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গার মাঝে আশার আলো
জ্বালাতে সব দেশের এখন একসঙ্গে কাজ করার সময় হয়েছে। জীবন বাঁচাতে মরিয়া
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু এই জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তাও জরুরি। গতকাল
শনিবার এক সংক্ষিপ্ত সফরে কক্সবাজারে এসে হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিশেল
ইয়ো রোহিঙ্গাদের সহায়তা করতে সব দেশের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।
মালয়েশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল রাজা মোহাম্মদ আফান্দি রাজা
মোহাম্মদ নূরের সঙ্গে এদিন কক্সবাজারের উখিয়ায় বালুখালী রোহিঙ্গা শিবির ও
মালয়েশিয়া পরিচালিত ফিল্ড হাসপাতাল ঘুরে দেখেন জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির
(ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত মিশেল ইয়ো। মালয়েশিয়ার নাগরিক মিশেল ইয়ো ১৯৯৭ সালে
জেমস বন্ড সিমেনা টুমরো নেভার ডাইজ-এ পিয়ার্স ব্রসনানের সঙ্গে জুটি বেঁধে
বিখ্যাত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে দ্য মামি এবং ২০১৬ সালে ক্রাউচিং টাইগার,
হিডেন ড্রাগন সিমেনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। এ ছাড়া ২০১১
সালে অং সান সু চির জীবনের ওপর নির্মিত দ্য লেডি ছবিতে তিনি সু চির ভূমিকায়
অভিনয় করেছেন। ১৯৯৭ সালে পিপল ম্যাগাজিনের নির্বাচিত বিশ্বের সুন্দর ৫০
মানুষের একজন হয়েছিলেন তিনি। মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদলটি দুপুরে কক্সবাজারে
পৌঁছে শুরুতে বালুখালীর শিবিরে যায়। এরপর তাঁরা আসেন ফিল্ড হাসপাতালে।
এখানে চিকিৎসাসুবিধা ঘুরে দেখার শুরুতে মালয়েশিয়ার চিকিৎসকসহ বিভিন্ন
স্তরের কর্মীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তাঁরা। কক্সবাজারে এসে কী
অনুভূতি হলো জানতে চাইলে মিশেল ইয়ো বলেন, রোহিঙ্গাদের সেবা দিতে চার মাস
আগে শুরু হওয়া এই হাসপাতালে তাঁর দেশের লোকজন অসাধারণ কাজ করছেন।
দেশে ফিরে
তিনি তাঁর দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এসব কাজের কথা জানাবেন। রোহিঙ্গাদের
পরিস্থিতি কেমন দেখলেন জানতে চাইলে সাবেক বন্ড গার্ল বলেন, এরা মরিয়া হয়ে
এখানে এসেছে। তাদের বাড়ি নেই, ফিরে গিয়ে থাকার কোনো জায়গা নেই। এমন
পরিস্থিতিতে কেউ কি থাকতে চায়? কখনো না। উপায়ান্তর না থাকায় তারা আদি ভিটে
ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। সাবেক বন্ড গার্ল জানান, উখিয়ায় মালয়েশিয়ার
ফিল্ড হাসপাতাল সফর এবং রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে অংশ নিতে তিনি
নিজেই আগ্রহ দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন আবদুল রাজাকের কাছে। মিশেল
ইয়ো বলেন, ‘এখন রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করার সময়। সব দেশের প্রতি আমার
আহ্বান, জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও বয়স্কদের মধ্যে আশা ছড়িয়ে
দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। বেঁচে থাকার জন্য তাদের সেটাই সবচেয়ে বেশি
প্রয়োজন।’ মালয়েশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল রাজা মোহাম্মদ
আফান্দি রাজা মোহাম্মদ নূর বলেন, হাসপাতালের মাধ্যমে তাঁরা মানবিক সহায়তা
দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সশস্ত্র বাহিনী তাদের দেশের চিকিৎসক ও
প্যারামেডিকসদের যে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, তাঁরা সেটা এখানে কাজে লাগাচ্ছেন।
প্রায় চার হাজার লোককে এ পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। সেবার পরিধি
বাড়ছে। তাঁদের সঙ্গে এখন সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও যুক্ত হয়েছে।
মালয়েশিয়ার ফিল্ড হাসপাতালের প্রধান ফাতাহুল লেহেম মোহাম্মদ জানান, ১২ জন
চিকিৎসকসহ সব মিলিয়ে মালয়েশিয়ার ৫০ জন নাগরিক হাসপাতালটিতে কাজ করছেন।
No comments