সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা
সাবেক
অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছরেও
তাঁর হত্যা মামলার বিচারের গতি দুর্ভাগ্যজনকভাবে মন্থর। এই মামলার
অভিযোগপত্র তিনবার সংশোধন করার ক্ষেত্রে প্রশাসন এবং হবিগঞ্জের স্থানীয়
আওয়ামী লীগের কোনো কোনো মহলের মধ্যে যত বেশি আগ্রহ লক্ষ করা গেছে, সেই
তাদেরকেই আমরা মামলাটির বিচার শেষ না হওয়ার কারণে কোনোভাবে বিচলিত হতে দেখি
না। প্রয়াত এই নেতা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছেন
এবং কূটনীতিক হিসেবে অর্জন করেছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি। কিন্তু তাঁর খুনের
দায়ে অভিযুক্তরা যেখানে সবাই বিএনপির বড় বড় নেতা, সেখানে তাঁর মৃত্যুদিবস
পালন করতে জেলা আওয়ামী লীগের ঘোরতর অনীহা এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন
তৈরি করেছে। শনিবার হবিগঞ্জ শহরে দায়সারাভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণের কর্মসূচি
পালিত হয়েছে।
অথচ কে বা কারা সিলেট শহরে রাতের অন্ধকারে পোস্টার সেঁটে
দিয়েছে, যাতে লুৎফুজ্জামান বাবর, হারিস চৌধুরীসহ হবিগঞ্জ ও সিলেটের বর্তমান
দুই মেয়রের ছবি ছাপিয়ে অজ্ঞাতনামা ‘সিলেটের জনগণের পক্ষে’ তাঁদের ফাঁসি
দাবি করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার বিলম্বিত হলেও এ
নিয়ে ‘রাজনীতি’ যথেষ্টই সক্রিয় আছে। এলাকাবাসীর অনেকেরই বিশ্বাস, কিবরিয়া
পরিবার একবুক অভিমান নিয়ে এই ‘রাজনীতি’ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে।
এমনকি এলাকায় না গিয়ে তারা নীরব থাকাটাকেই শ্রেয় মনে করছে। ২০০৫ সালের
অভিযোগপত্রে শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের সভাপতিসহ ১০ জনকে আসামি করলে বাদী
নারাজি দিয়েছিলেন। এরপর ২০১১ ও ২০১৪ সালে দুই দফায় উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গসহ
আসামির সংখ্যা ৩৫–এ উন্নীত হলেও ‘সাক্ষী’র অভাবে বিচারপ্রক্রিয়া কার্যত
স্তিমিত এবং এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল মহলের কোনো মাথাব্যথা লক্ষণীয় নয়।
কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া আওয়ামী লীগের একাদিক্রমে চলা দুটি
শাসনেও যদি কোনো কূল না পায়, তাহলে তা অত্যন্ত পরিহাসমূলক হিসেবে বিবেচিত
হতে বাধ্য।
No comments