পাকিস্তান
ও ভারতে এখন যে ঘৃণানির্ভর রাজনীতি চলছে, এর অবসান চান দেশটির সাবেক
প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি। তিনি বলেছেন,
তাঁর দেশ পাকিস্তানে ঘৃণানির্ভর রাজনীতির বাইরে একটি প্রগতিশীল বিকল্প
রাজনীতি দরকার। কথাগুলো বিলওয়াল বলেছেন ভারতের ইংরেজি সাময়িকী ইন্ডিয়া
টুডেকে। ভারতের কোনো গণমাধ্যমের সঙ্গে এই প্রথম কথা বললেন বেনজির ও সাবেক
প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির ছেলে। ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে গেছেন
বিলওয়াল। সেখানেই এ সাক্ষাৎকার দেন। আলোচনার বড় অংশজুড়ে ছিল
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। এ ছাড়া পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, ভারতের
রাজনীতির অবস্থা, উপমহাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি, বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে
পাকিস্তানের অবস্থান—এসবই ছিল আলোচনায়। খুব স্বাভাবিকভাবে এসেছে কাশ্মীর
প্রসঙ্গ। উপমহাদেশের রাজনীতির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তরুণ রাজনীতিক
বিলওয়াল বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু রাজনীতিক বেশি মাত্রায় লোকরঞ্জনবাদ
পছন্দ করেন। তাঁরা ঘৃণানির্ভর রাজনীতি চান। জনগণের নেতিবাচক মনোভাবকে পুঁজি
করতে চান তাঁরা। বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীর ভেতরে বিভেদ তৈরি
তাঁদের পছন্দের। পাকিস্তানের রাজনীতি নিয়ে বিলওয়ালের মন্তব্য, পাকিস্তানে
এখন যে লোকরঞ্জনবাদ চলছে, এর একটি বিকল্প দরকার। সত্যিকার অর্থে এখানে
বিকল্প প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তি দরকার। ভারতের ডানপন্থী রাজনীতির উত্থানের
সমালোচনা করেন বিলওয়াল।
তাঁর কথা, এ ধারার রাজনীতি শুধু বিভেদ বয়ে আনে।
বিলওয়াল বলেন, এটা যেকোনো দেশের জন্য সত্য। এ রাজনীতি কোনো দেশের জন্য
মঙ্গলজনক না। নিজ দল পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে (পিপিপি) একটি প্রগতিশীল
রাজনৈতিক দল হিসেবে আখ্যায়িত করেন বেনজির-তনয়। আলোচনায় আসে ভারত ও
পাকিস্তান সম্পর্কের বিষয়টি। বিলওয়াল বলেন, দুই দেশের মধ্যে রেষারেষি আছে।
কিন্তু দুটি দেশের তরুণেরাই এটা নিশ্চিত বুঝেছে যে শান্তিই এসব রেষারেষি
সমাধানের একমাত্র উপায়। তবে তিনি বলেন, ভারত ও বিশ্বের অন্যের কোনো রাষ্ট্র
যদি পাকিস্তানকে কোনো কিছু করতে বাধ্য করার চেষ্টা করে, তবে এ শান্তি আসবে
না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রসঙ্গ আসে সাক্ষাৎকারে। মোদিকে
নিয়ে বিলওয়াল বলেন, গুজরাটে দাঙ্গার ঘটনার পর পাকিস্তানে তাঁর ভাবমূর্তি
ভালো না। ২০০২ সালে মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় ভয়াবহ
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। কাশ্মীর নিয়ে অকপটে পাকিস্তানের অবস্থানের কথা
বলেন বিলওয়াল। তাঁর কথা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এ যুগে কোনো কিছু লুকিয়ে
রাখা যায় না। কাশ্মীর বা বিশ্বের কোথায় কী হচ্ছে, সবই টের পাওয়া যায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা কাশ্মীরে (ভারত-নিয়ন্ত্রিত) বুলেটবিদ্ধ দেহের
ছবি পরিস্থিতিকে জটিলই করে তুলেছে।
No comments