‘হেফাজতের সাথে আপস অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পথকেই কন্টকাকীর্ণ করবে’
সরকারের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো রাজনৈতিক ও শিক্ষাঙ্গনের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীর প্রতি ইঙ্গিত করে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, যেভাবে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে তোষামোদ করা হচ্ছে এবং তাদের কাছে নতি স্বীকার করে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তা দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকেই বাধাগ্রস্ত করবে। সংসদকে পাশ কাটিয়ে কওমী মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি এদেশের একমুখী বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার দাবীকেই নস্যাৎ করে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক করা হলো বলেও তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর থেকে আজ বুধবার এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়। এতে আরো বলা হয় হেফাজতের দাবি অনুসারে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন সাধনের পর কওমী মাদ্রাসার সনদের নিঃশর্ত স্বীকৃতি অসাম্প্রদায়িক শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক চরম কুঠারাঘাত। অন্যদিকে মতাদর্শ ক্ষেত্রে হেফাজতের সাথে আপস এদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথকেই আরও কন্টাকাকীর্ণ করে তুলবে। ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজত কর্তৃক শাপলা চত্বরের সমাবেশ থেকে সরকার পতনের ডাক, বায়তুল মোকাররম থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অঞ্চলে তা-ব, কোরান ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে অগ্নিসংযোগ, নারীনীতি ও নারী অধিকারের চরম বিরোধীতা রাজনৈতিক দলের অফিস আক্রমণের ঘটনাবলী স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হয় তারা তাদের এই কাজে বিএনপি-জামাতের সমর্থন পায় নাই কেবল, একে কাজে লাগিয়ে ঐ গোষ্ঠীর ক্ষমতা দখলের খেলায় সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল।
শাপলা চত্বরের ঘটনা সম্পর্কে চরম মিথ্যা প্রচার চালিয়েছিল। সেই হেফাজতের প্রতিটি দাবি মেনে নিয়ে আপোষ ঐ অপশক্তির মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতাবিরোধী স্পর্ধা আরো বাড়িয়ে দেওয়া হলো। ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে সুপ্রীম কোর্টের সামনে স্থাপিত ভাষ্কর্য্য অপসারণ সম্পর্কে বলা হয় এর পরিণাম ফল হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্র্যসহ মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যসমূহ অপসারণের দাবি উঠবে। ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয় গোঁজামিল দিয়ে কওমী হেফাজতী নেতাদের নিয়ে তথাকথিত কওমী শিক্ষা বোর্ড বানিয়ে সনদের স্বীকৃতির যে চেষ্টা করা হচ্ছে তাতে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন সংকট দেখা দেবে। ¯œাতক শিক্ষা অবশ্যই প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হতে হবে। কওমী মাদ্রাসার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র আইন বিবর্জিত কোন স্বাধীন নীতি সার্বিকভাবে জাতির জন্য ক্ষতি ডেকে আনবে। জাতীয় রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তি হারিয়ে যাওয়া ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা যতটুকু পুণরুদ্ধার করেছিল তা আবার মুখ থুবড়ে পড়বে। ভোটের রাজনীতির ক্ষেত্রেও এটা কার্যকরী শক্তি নয়। ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে এই তথাকথিত লোকরঞ্জনবাদী অপধারার বিরোধীতায় সকল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মী, সকল গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
No comments