কিশোরগঞ্জের দুই রাজাকারের ফাঁসির আদেশ
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি কিশোরগঞ্জের সৈয়দ মো. হুসাইন ও মোহাম্মদ মোসলেম প্রধানের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে আনা হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এই রায় ঘোষণা করা হয়। বুধবার বেলা ১২টার দিকে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। এর আগে বেলা ১১টায় রায় পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল মঙ্গলবার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। গত ৭ মার্চ এই দু’জনের বিরুদ্ধে শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়। আদালতে ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান। দুই আসামির মধ্যে মোসলেম প্রধানকে গ্রেফতার করা হলেও হুসাইন পলাতক। তিনি মালয়েশিয়ায় রয়েছেন বলে প্রসিকিউশন জানায়। গত বছরের ৯ মে এই দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর এই দু’জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই দু’জনের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬টি অভিযোগ আনা হয়। গত বছরের ৭ জুলাই এই দুই রাজাকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
সৈয়দ মো. হুসাইন ওরফে হোসেনের জন্ম ১৯৫১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের সময় নিকলী থানা এলাকায় ‘রাজাকার দারোগা’ হিসেবে পরিচিত হুসাইন কিশোরগঞ্জ মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় ব্যক্তিগত ও যৌথভাবে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেন বলে প্রসিকিউশনের অভিযোগ। সৈয়দ মো. হুসাইন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার রাজাকার কমান্ডার পলাতক সৈয়দ মো. হাসান আলীর ভাই। অন্যদিকে ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার কামারহাটি গ্রামে মোসলেম প্রধানের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি নিকলি ইউনিয়নের রাজাকার কমান্ডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং কিশোরগঞ্জ মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় ব্যক্তিগত ও যৌথভাবে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেন বলে প্রসিকিউশনের অভিযোগ। মোসলেম পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।
No comments