চার দিনে আস্ত নদী গায়েব
কানাডায় স্লিমস নামের একটি বড় নদী মাত্র চার দিনেই হারিয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হিমশৈল সরে যাওয়ায় পানিপ্রবাহ ভিন্ন ধারায় ঘুরে গিয়ে এমনটি হয়েছে। একে পরিবেশবাদীরা বলছেন নদীদস্যুতা। খবর দ্য গার্ডিয়ানের ঘটনাটি ঘটেছে গত বছরের বসন্তে, মে মাসের ২৬ থেকে ২৯ মে সময়কালে। ওই সময়ে হিমবাহের বরফ গলার তীব্রতা বাড়ে। এতে স্লিমসের পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে আরেকটি নদীর অনুকূলে চলে গেছে। গবেষকরা বলছেন, স্লিমসের পানি আলাস্কা উপসাগরের দিকে গেছে, যা এর মূল গন্তব্য নয়। মূল গন্তব্য ছিল এর থেকে হাজারও কিলোমিটার দূরে। শত শত বছর ধরে কানাডার ওয়োকন এলাকার কাসকাওয়ালস হিমবাহ থেকে স্লিমস নদী হিমবাহের বরফ গলা পানি উত্তর দিকের ক্লুয়েন নদীতে ফেলছে। পরে তা ইয়ুকন নদী হয়ে বেরিং সাগরে গিয়ে পড়ছে। কিন্তু ২০১৬ সালের বসন্তে মাত্র চার দিনের মধ্যেই পুরো চিত্র বদলে যায়। গবেষক দলের একজন ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক জেমস বেস্ট বলেন, আমরা যথারীতি স্লিমস নদী পরিমাপের জন্য ওই অঞ্চলে গিয়েছিলাম।
কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি, নদীগর্ভ এলাকা কমবেশি শুকিয়ে গেছে। আগে যে বদ্বীপে আমাদের নৌকা করে যেতে হয়েছিল, সেখানে তখন ধূলিঝড় বইছিল। ভূদৃশ্য পরিবর্তনে এটি অবিশ্বাস্য নাটকীয় পরিবর্তন। ওয়াশিংটন টাকোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানী ড্যান শুগার বলেন, এখানকার পানিতে চলা ছিল বিপজ্জনক। পুরনো নদীগর্ভে হাঁটার সময় যেকোনো সময় আটকে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু দিনের পর দিন আমরা পানির স্তর কমে যাওয়া দেখলাম। গবেষক বেস্ট বলেন, ‘আমরা দেখলাম হিমবাহের সামনের দিক থেকে যত পানি আসত, তা দুটি ভাগে বিভক্ত হওয়ার বদলে একটিতে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।’ গত বছরে স্লিমস ও আলাস্কার আকার তুলনামূলকভাবে প্রায় সমান থাকলেও এখন আলাস্কা ৬০ থেকে ৭০ গুণ বড় হয়ে গেছে। এ পরিবর্তন ঘটেছে হঠাৎ করেই। ওয়াইও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লনি থম্পসন বলেন, পর্যবেক্ষণটির মাধ্যমে ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে আকস্মিক ও প্রচণ্ড পরিবেশগত প্রভাবের বিষয় ওঠে এসেছে। কিছু প্রান্তিক মানের বিষয় আছে, যা প্রকৃতিতে চলে গেলে সবকিছু হঠাৎ পরিবর্তন হতে শুরু করে।
No comments