ক্যামেরা ফেলে শিশুকে বাঁচাতে ফটোগ্রাফারের মরিয়া চেষ্টা
যে কোনো ঘটনার জীবন্ত চিত্র তুলে ধরেন ফটোসাংবাদিকরা। ২০১৫ সালে তুরস্কের সমুদ্রসৈকতে পড়ে থাকা আয়লানের নিথর দেহের ছবি কাঁদিয়েছিল বিশ্বকে। পরিবারের সঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল ছেড়ে যাচ্ছিল সে। পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় তার। ২০১৬ সালে সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে বোমার আঘাতে রক্তাক্ত শিশু ওমরান দাকনিশের ছবিও সারা বিশ্বে ঝড় তুলেছিল। আহত অবস্থায় একটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে বসে থাকা অবস্থায় তার ছবি তোলেন একজন ফটোসাংবাদিক। ওই ছবি তুলে ধরেছিল মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের নিষ্ঠুরতা। খবর সিএনএনের। কিন্তু এবার নিষ্ঠুর ভয়াবহতা থেকে একজন শিশুকে বাঁচাতে পেশাদারিত্বের ক্যামেরা ফেলে দৌড়ে গেলেন একজন ফটোসাংবাদিক। তিনি আবদ আল কাদের হাবাক। চলতি সপ্তাহে সিরিয়ার একটি বাসবহরে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলায় নিহত হন ১২৬ জন। নিহতদের মধ্যে ৬৮ জনই ছিল শিশু।
ঘটনাস্থলের কাছেই কাজ করছিলেন হাবাক। বোমা বিস্ফোরণে কিছুক্ষণের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। চেতনা ফিরলেই ছুটে যান ঘটনাস্থলে। নেমে পড়েন উদ্ধারকাজে। হাবাক বলেন, ‘ওই দৃশ্য ভয়ঙ্কর ছিল। বিশেষ করে শিশুদের আর্তনাদ। তারা সবার সামনেই মারা যাচ্ছিল। তাই আমরা সহকর্মীদের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আমরা ক্যামেরা রেখে আহতদের উদ্ধার শুরু করব।’ তিনি জানান, প্রথম যে শিশুটির কাছে তিনি গিয়েছিলেন, সে ততক্ষণে মারা গেছে। এরপর গেলেন আরেক শিশুর দিকে। সে তখনও একটু একটু শ্বাস নিচ্ছে। হাবাক শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে নিরাপদ স্থানের দিকে দৌড়াতে শুরু করলেন। সে সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে হাবাক বলেন, ‘শিশুটি আমার হাত ধরে ছিল ও আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।’ মুহাম্মদ আলরাগেব নামের আরেক ফটোসাংবাদিক সে সময় হাবাকের ছবি তুলেছিলেন। সেখানে দেখা যায়, হাবাক কোলে শিশু ও কাঁধে ক্যামেরাটি নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সের দিকে ছুটে যাচ্ছেন।
No comments