ইতিহাসের সাক্ষী: ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর আসল কারণ কী ছিল?
ইয়াসির আরাফাত |
২০০৪ সালে এক
আকস্মিক অসুস্থতার পর প্যারিসের একটি হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন ফিলিস্তিনি
নেতা ইয়াসির আরাফাত। তার বয়েস হয়েছিল ৭৫।
এর আগে তিনি অবরুদ্ধ
ছিলেন ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের শহর রামাল্লায় - তার প্রধান
কার্যালয়ে। ২৫ অক্টোবর মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ার
ক'দিন পর তাকে বিমানে করে প্যারিসের কাছে একটি সামরিক হাসপাতালে নিয়ে
যাওয়া হয় ।
সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১১ নভেম্বর ভোরবেলা মারা যান ইয়াসির আরাফাত। মৃত্যুর আগে ৮ দিন সংজ্ঞাহীন ছিলেন তিনি।
ইয়াসির আরাফাত ১৯৭৪ সালে |
"তার
দেহে এমন কোন পরীক্ষা বাকি ছিল না যা ফরাসী ডাক্তাররা করান নি। কিন্তু কোন
সংক্রমণের চিহ্ন পাওয়া যায় নি। ডাক্তাররা বলছিলেন, মনে হচ্ছে যেন তার
দেহে বাইরে থেকে কিছু একটা 'অনুপ্রবেশ' করেছে কিন্তু তা যে কি এবং কোথায়
তা ডাক্তাররা বের করতে পারেন নি" - এ কথা বলেছেন আরাফাতের শেষ দিনগুলোর
সাক্ষী লায়লা শাহিদ ।
সংশয় কাটাতে ৯ বছর পর তার দেহাবশেষ কবর থেকে
তুলে সুইৎজারল্যান্ডে পরীক্ষা করানো হয়। তখন তাতে তেজষ্ক্রিয়
পোলোনিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, কিন্তু বিজ্ঞানীরা পুরোপুরি নিশ্চিত
হতে পারেন নি।
তাহলে কেন এবং কিভাবে মৃত্যু হয়েছিল ইয়াসির আরাফাতের?
আরাফাতের
জীবনের শেষ দিনগুলোয় যে অল্প কয়েকজন ফিলিস্তিনি তার পাশে ছিলেন - তাদের
একজন হলেন লায়লা শাহিদ। ১৯৬০-এর দশক থেকেই ইয়াসির আরাফাতকে চিনতেন
তিনি। লায়লা শাহিদের সাথে কথা বলেছেন বিবিসির লুইস হিদালগো।
রামাল্লায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দফতরে নিজের অফিস কক্ষে ইয়াসির আরাফাত |
"আমি তখন ছিলাম ফ্রান্সে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত। তাকে প্যারিসে নিয়ে
আসার সপ্তাহখানেক আগে আমি একটা ফোন পেলাম। ফোনটা করেছিলেন ফিলিস্তিনি
প্রধানমন্ত্রী। তিনি বললেন, যে ডাক্তাররা ইয়াসির আরাফাতকে দেখছেন, তাদের
সবা্রই মত হলো যে এটা কোন সাধারণ অন্ত্রের সংক্রমণ নয় এবং তার অবস্থা খুবই
সংকটজনক। তাকে এখন হাসপাতালে পাঠানো খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে" -
বলছিলেন লায়লা শাহিদ।
কিন্তু আরাফাত হাসপাতালে যেতে চাইছিলেন না।
"তিনি
চিন্তিত ছিলেন যে ইসরায়েলের সাথে ফিলিস্তিনিদের সম্পর্ক এত খারাপ হয়ে
পড়েছে যে তিনি যদি একবার পশ্চিম তীর ছেড়ে যান তাহলে তাকে আর ফিরতে দেয়া
হবে না। ফ্রান্স কি এক্ষেত্রে কোনভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারবে?"
"প্রধানমন্ত্রী
আমাকে বললেন যে ফরাসী প্রেসিডেন্ট শিরাককে আরাফাত খুবই পছন্দ করেন। তাই
তাকে আপনি একবার জিজ্ঞেস করে দেখুন যে ফ্রান্সে আরাফাতের চিকিৎসার ব্যবস্থা
করা যায় কিনা। আমি বললাম, আমি চেষ্টা করবো। প্রেসিডেন্ট শিরাককে বলতেই
তিনি বললেন, অবশ্যই আমরা এটা করবো।"
"আরাফাতও তখন নিশ্চিন্ত হলেন যে
প্রেসিডেন্ট শিরাকের মধ্যস্থতায় তার চিকিৎসাও হবে এবং তিনি ফিলিস্তিনে
ফিরে আসতে পারবেন এ গ্যারান্টিও মিলবে। আরাফাত কখনো ভাবেন নি যে তিনি মারা
যাবেন।"
লায়লা শাহিদ যখন লেবাননে ছাত্রী তখন তার সাথে পরিচয় হয়েছিল ইয়াসির
আরাফাতের। তখন ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগ্রামের একজন নেতা হিসেবে আরাফাত
সবে মাত্র পরিচিত হয়ে উঠছেন। তখন তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বেশ কিছু
আক্রমণ সংগঠিত করেছেন।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের প্রথম মন্ত্রিসভা |
"সে সময় পিএলও ছিল একটা ছোট সংগঠন। তাই
আমাদের সবার সাথেই এর নেতাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তা ছাড়া আমাকে বলতেই
হবে যে আরাফাত সবসময়ই উৎসাহ দিতেন যেন ফিলিস্তিনি মেয়েরা আরো বেশি করে
আন্দোলনে জড়িত হয়। আমি যে এই আন্দোলনের সাথে লেগে ছিলাম এবং পরে প্রথম
মহিলা রাষ্ট্রদূত হয়েছিলাম - তার এক বড় কারণ ছিল এটাই। তা ছাড়াও আমরা
ছিলাম পরস্পরের খুবই ভালো বন্ধু।"
ইয়াসির আরাফাত যখন মারা যান তখন তিনি পরিণত হয়েছেন এক আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বে। তার ভক্ত এবং নিন্দুকেরও কোন অভাব ছিল না।
তার
সমর্থকদের চোখে আরাফাত ছিলেন ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদের পিতা। অন্যদিকে বহু
ইসরায়েলির চোখে তিনি ছিলেন একজন সন্ত্রাসবাদী যিনি আসলে কখনো বদলান নি।
তাদের চোখে তিনি ছিলেন কয়েক দশক ধরে চালানো বহু আক্রমণের জন্য দায়ী -
বিশেষ করে আত্মঘাতী আক্রমণের জন্য যাতে শত শত ইসরায়েলির মৃত্যু হয়েছিল।
অসলো শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য যে আশাবাদ
তৈরি হয়েছিল - তা উবে গিয়ে নব্বইয়ের দশকের শেষ বছরগুলোয় আরো সহিংসতা
এবং বৈরিতার সৃষ্টি হয়েছিল।
জীবনের শেষ দুটি বছর ইয়াসির আরাফাতকে
রামাল্লায় তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে ইসরায়েল। এটি পরিণত হয়েছিল
কার্যত এক কারাগারে - যার সাথে বাইরের দুনিয়ার সংযোগ ছিল বিচ্ছিন্ন।
শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী র্যাবিনের সাথে আরাফাত |
ওই অবস্থাতেও সত্তরোর্ধ বয়েসের আরাফাত তার স্বাস্থ্য ঠিক রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন, বলছিলেন লায়লা শহিদ।
"তিনি
বেঁচে থাকতে চেয়েছিলেন। তিনি কখনো কফি খেতেন না, এ্যালকোহল তো নয়ই।
সন্ধ্যেবেলা বেশি খাওয়া দাওয়া করতেন না। শুধু চা খেতেন মধু দিয়ে, আর
একটুখানি পনির। স্বাস্থ্যের ব্যাপারে তিনি ছিলেন খুবই যত্নশীল।"
"তিনি এতটাই স্বাস্থ্য সচেতন ছিলেন যে তার দফতরে বন্দী অবস্থায় আমি যখন
প্রায়ই তার কাছ থেকে নির্দেশনা নিতে যেতাম - তখন তিনি বলতেন, 'লায়লা
কিছু মনে করো না, আমরা কি বসে বসে এই মিটিং করার পরিবর্তে এই টেবিলটার
চারদিকে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলতে পারি? দেখছো তো যে আমি এই অফিস থেকে বেরোতে
পারি না, কিন্তু আমার যে বয়স তাতে হাঁটাচলা করা খুবই প্রয়োজন।' ফলে আমরা
৪৫ মিনিট ধরে ওই ঘরটার মধ্যেই হাঁটতাম। টেবিলটার চারদিকে হাঁটতে হাঁটতেই
আমরা কথা বলতাম, আমাদের যে আলোচনা তা সেরে নিতাম।"
লায়লা শাহিদ খুব কাছে দেখেছেন - কি ভাবে ওই সংকীর্ণ দফতরের মধ্যে অবরুদ্ধ অবস্থায় ইয়াসির আরাফাত দীর্ঘ দিন কাটিয়েছেন।
তিনি
বলছিলেন, যখন তিনি জানতে পারলেন যে আরাফাতকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে
হবে, তখন তিনি অবাক হননি। বরং তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন অন্য একটি বিষয়ে।
"আমি
যখন তাদের কাছে জানতে চাইলাম যে প্যারিস থেকে যে বিমান তাকে আনতে যাবে
তাতে কি ধরণের চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকতে হবে - তখন আমাকে বলা হলো - রক্তের
সমস্যার জন্য দরকার হয় এমন সব চিকিৎসা সামগ্রী লাগবে। আমরা জানলাম যে তার
দেহে রক্তের কোন একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে।"
কয়েকদিন পর যখন প্যারিসের কাছে সামরিক বিমানবন্দরে ইয়াসির আরাফাতের
সাথে লায়লা শাহিদের দেখা হলো - তখন আরো একটা ব্যাপার তাকে বিস্মিত করলো।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবার সময় ইয়াসির আরাফাত |
"আমি
যা দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম - তা হলো, তার গায়ের চামড়ায় ফোস্কা পড়েছে
- যেমনটা রোদে পুড়ে গেলে হয়। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, 'আবু আম্মার, আপনি
খালি গায়ে রোদে বসে ছিলেন কেন?' তিনি বললেন, 'কি বলছো লায়লা! আমি দু বছর
ধরে আমার অফিসে বন্দী, রোদ কোথায় পাবো?' তখন আমি একটু অপ্রস্তুত হলাম।
ভাবলাম হয়তো তিনিই তার চামড়ার সমস্যাটা ঠিক বুঝতে পারেন নি। হাসপাতালে
যাবার পর আমি ডাক্তারকে বললাম, তার এই যে ত্বকের সমস্যাটা দেখছি এটা তো তিন
মাস আগে ছিল না।"
রামাল্লায় সেটাই ছিল তাদের শেষ সাক্ষাৎ। কিন্তু প্যারিসের হাসপাতালে আরাফাত বেশ উৎফুল্লই ছিলেন।
লায়লা
শাহিদ বলছিলেন, "তিনি হাসিখুশি ছিলেন সবার সাথে ঠাট্টা-তামাশা করছিলেন।
তাকে নিয়ে যেসব খবর বেরিয়েছিল তার বেশিরভাগই ভুল। তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার
ইউনিটে নেয়া হয় নি, ডাক্তাররা তাকে রেখেছিলেন সাধারণ ইউনিটে, কারণ তার
সেরকম কিছুর দরকারই ছিল না। তার যে রক্তের সমস্যা ছিল - তা নিয়ে ডাক্তাররা
ভেবেছিলেন যে তাকে ডায়ালাইসিস করাতে হবে।"
কিন্তু আরাফাতের তো পেটের সমস্যাও ছিল। সেটার ব্যাপারে দিনি নিজে কি বলছিলেন?
"তিনি বলছিলেন, যে তিনি পেটে কিছু রাখতে পারছেন না। ভীষণ ডায়রিয়া, দেহে পানিশূন্যতা, কিছু খেতে পারছেন না।"
বাঁ থেকে লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি, পিএলও নেতা ইয়াসির আরাফাত, মিশরের প্রেসিডেন্ট নাসের ও জর্ডনের বাদশাহ হোসেন, ১৯৭০ |
"ডাক্তার
বলছিলেন এক্সরেতে দেখা গেছে যে ইয়াসির আরাফাতের গলা থেকে অন্ত্র পর্যন্ত
ভেতরটা মনে হচ্ছে যেন পুড়ে গেছে। মনে হচ্ছিল যেন তিনি এমন কিছু খেয়েছেন
যাতে তার পরিপাকতন্ত্রটার ভেতর দিকটা পুড়ে গেছে।"
তার পরেও লায়লা
বলছিলেন, হাসপাতালে তার প্রথম পাঁচ দিন পর্যন্ত আরাফাত বেশ ভালোই ছিলেন।
তিনি বিছানার ওপর উঠে বসেছিলেন, তিউনিসিয়ায় থাকা তার মেয়ের সাথে কথা
বলেছিলেন। বিদেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ফোন ধরছিলেন। এমনকি রামাল্লায়
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের বেতন দেবার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী সালাম
ফায়াদকে নির্দেশনাও দিয়েছিলেন।
"সালাম ফায়াদ আমাকে বলেছিলেন, লায়লা, আমার সাথে কথা বলার সময় আবু
আম্মার একাউন্টের যে হিসেব দিচ্ছিলেন তা ছিল একেবারে নির্ভুল। তার মানে
তিনি তো মানসিকভাবে পুরোপুরি সচেতন আছেন"।
"আমি বললাম, হ্যাঁ, তার
দেহে তো কোন নল লাগানো হয়নি, আশপাশে কোনো অক্সিজেনের যন্ত্রপাতিও নেই। আমি
আশা করছি তিনি শিগগীরই সেরে উঠবেন। তিনি নিজে এবং ডাক্তাররাও তাই মনে
করেছিলেন।"
কিন্তু তা হয় নি। নভেম্বরের ৩ তারিখ ইয়াসির আরাফাত
সংজ্ঞা হারিয়ে ফেললেন। পুরোপুরি 'কোমা'য় চলে গেলেন, যেখান থেকে তিনি আর
ফিরে আসতে পারেন নি।
স্ত্রী সুহা এবং কন্যা জাইওয়ার সাথে আরাফাত |
"সেদিন ভোর তিনটের সময় হাসপাতালের লোকেরা
আমাকে ঘুম থেকে জাগালো। বললো, দয়া করে হাসপাতালে আসুন, কারণ তার অবস্থা
ভালো নয়। তখন তিনি অর্ধ-অচেতন অবস্থায়, তার শরীরটায় কাঁপুনি হচ্ছে।
স্টাফরা বললেন, তার একটা স্ক্যান করাতে হবে, এসময় আমরা তার কাছের কেউ
একজনকে পাশে রাখতে চাই। বলা হলো পরদিন সকাল ছ'টার সময় ডাক্তাররা এসে
স্ক্যানের রিপোর্ট দেখবেন।"
"আমরা অধীরভাবে অপেক্ষা করছিলাম সকালের জন্য। ডাক্তাররা যখন এলেন, তারা
রিপোর্ট দেখে বললেন, তারা রিপোর্টে এমন কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না যাকে রোগীর এ
অবস্থার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। কোন সংক্রমণ বা ব্যাকটেরিয়া নেই,
লিউকেমিয়া, বা এইচআইভি - কিছুই নেই। তারা এর কারণ কি, তার শারীরিক অবস্থার
এত অবনতি কেন হলো তা বের করার জন্য তাকে আরো গভীর কোমায় রেখে দিলেন।"
তার মানে, এমন কোন পরীক্ষা বাকি ছিল না যা ফরাসী ডাক্তাররা করান নি।
ইয়াসির আরাফাতের কবরে পুষ্পস্তবক দিচ্ছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস |
"কিছুই
বাকি ছিল না। এমনকি কোন বিষক্রিয়া ঘটেছে কিনা তার পরীক্ষা করার জন্য
হাসপাতালের বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞও আনা হয়েছিল। একমাত্র সমস্যা দেখা
গিয়েছিল তার রক্তের প্লেট কমে গিয়েছিল, কিন্তু তার জন্য তার দু বার
ডায়ালিসিস করা হয়েছিল, প্লেট দেয়া হয়েছিল। কিন্তু দু'দিন পর নতুন
রক্তেরও একই অবস্থা হলো।"
"ডাক্তাররা বলছিলেন মনে হচ্ছে যেন তার
দেহে বাইরে থেকে কিছু একটা অনুপ্রবেশ করেছে কিন্তু তা যে কি এবং কোথায় -
আমরা চিহ্নিত করতে পারছি না।"
ইয়াসির আরাফাত ২০০৪ সালের নভেম্বরের ১১ তারিখে ভোরবেলা মারা গেলেন।
"তার দেহের প্রতিটি প্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে যাচ্ছিল - একটার পর একটা। এর
কারণ হিসেবে আরাফাতের ডেথ সার্টিফিকেটে যেটা লেখা হয়েছিল তা হলো - নির্ণয়
করা যায় নি এমন এক কারণে তার মৃত্যু ঘটেছে।"
"আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে এই অনির্ণীত কারণের অর্থ কি?"
ইয়াসির আরাফাত তার জীবদ্দশাতেই পরিণত হয়েছিলেন ফিলিস্তিনি আন্দোলনের প্রতীকে |
"ডাক্তাররা
বললেন, আমরা তার কোন নির্দিষ্ট রোগ চিহ্নিত করতে করতে পারি নি। এবং এ
কারণেই ডাক্তারদের মনে হয়েছিল যে আরাফাতের দেহে 'বাইরে থেকে আসা' কোন
কিছুর 'অনুপ্রবেশ' ঘটেছে।"
"বলা যায় নি এটা কি বাইরে থেকে আসা কোন বিষ, বা কোন সংক্রমণ ছিল কিনা।"
ইয়াসির
আরাফাতের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কায়রোতে - সেখানে এক রাষ্ট্রীয়
শেষকৃত্যানুষ্ঠান হয়, তার পর রামাল্লায় তা সমাহিত করা হয়।
এর নয়
বছর পর, ২০১৩ সালে - কবর থেকে তার দেহাবশেষ তোলা হয়, এবং সুইস
বিজ্ঞানীদের পরীক্ষায় সেই দেহাবশেষে উচ্চমাত্রার তেজষ্ক্রিয় পদার্থ
পোলোনিয়াম পাওয়া যায়।
তবে বিজ্ঞানীরা এটাও বলেছিলেন যে তাদের পরীক্ষার এই ফল পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
তরুণ বয়সে ইয়াসির আরাফাত |
No comments