মিষ্টি কুমড়া চাষ করবেন যেভাবে
মিষ্টি
কুমড়ার বীজ এক প্রকার আরোহী লতা জাতীয় গাছ। এর পাতাগুলো বড় এবং পাতা ও
কাণ্ডে সাদা কোমল লোমাবৃত। ফল বড় গোলাকার এবং সাধারণত কমলা রঙের হয়ে থাকে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটা সবজি হিসেবে চাষ করা হয়। আমাদের দেশে চাষযোগ্য
জমিতে ও বাড়ির আঙিনায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়। শুধু সবজি হিসেবে নয় মিষ্টি
কুমড়া ও বীজে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি ও ওষুধি গুণ। সামান্য ভাজা অবস্থায়
মিষ্টি কুমড়ার বীজ বাদামের মতো সামান্য মিষ্টি স্বাদযুক্ত নমনীয় ও
চর্বনযোগ্য খাদ্য।
মিষ্টি কুমড়ার কাণ্ড: মিষ্টি কুমড়া এক ধরনের কোমল কাণ্ডবিশিষ্ট বর্ষজীবী লতানো উদ্ভিদ। কাণ্ড দৃঢ়, হালকা সবুজ, অগভীর খাদবিশিষ্ট এবং তীক্ষ্ম কোমল লোমে আবৃত। গাছের গোড়ার দিকে আইক থেকে কয়েকটি প্রধান শাখা বের হয়। এগুলো ক্রমশ প্রশাখায় বিভক্ত হয়। আমাদের দেশে কচি শাখা-প্রশাখাগুলো পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি হিসেবে খেয়ে থাকে। এখানে উল্লেখ্য যে, শাখা কেটে দিলে কাটাস্থলের কাছ থেকে আবার প্রশাখা বের হয়।
মিষ্টি কুমড়ার কাণ্ড: মিষ্টি কুমড়া এক ধরনের কোমল কাণ্ডবিশিষ্ট বর্ষজীবী লতানো উদ্ভিদ। কাণ্ড দৃঢ়, হালকা সবুজ, অগভীর খাদবিশিষ্ট এবং তীক্ষ্ম কোমল লোমে আবৃত। গাছের গোড়ার দিকে আইক থেকে কয়েকটি প্রধান শাখা বের হয়। এগুলো ক্রমশ প্রশাখায় বিভক্ত হয়। আমাদের দেশে কচি শাখা-প্রশাখাগুলো পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি হিসেবে খেয়ে থাকে। এখানে উল্লেখ্য যে, শাখা কেটে দিলে কাটাস্থলের কাছ থেকে আবার প্রশাখা বের হয়।
মিষ্টি কুমড়ার ফুল: মিষ্টি কুমড়া এক ধরনের একবাসী জাত। অর্থাৎ একই গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আলাদাভাবে উৎপন্ন হয়। উভয় ধরনের ফুল সবসময় একাকী এবং ভিন্ন পত্রকক্ষে উৎপন্ন হয়। ফুল ভোরবেলা প্রস্ফুটিত হয়। স্ত্রী ফুলের তুলনায় পুরুষ ফুল বেশি হয়। কুমড়ার জাত ও পরিবেশ ভেদে কম-বেশি হয়ে থাকে। কুমড়ার ফুল হলুদ রঙের, আকারে বৃহৎ। ফুলে ৫টি করে বৃত্তাংশ ও পাঁপড়ি থাকে। পুরুষ ফুলে তিনটি পুংকেশর থাকে। স্ত্রী ফুল থেকেই ফলের উৎপত্তি। পুরুষ ফুল সবজি হিসেবে এবং ভাজি হিসেবে খাওয়া যায়।
জলবায়ু ও মাটি: কুমড়ার জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু প্রয়োজন। তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে চলে গেলে গাছের দৈহিক বৃদ্ধির হার কমে যায়।
জমি তৈরি ও বীজ বপন: পারিবারিক বাগানে কুমড়ার চাষ করতে হলে সুবিধাজনক স্থানে দু’একটি মাদায় বীজ বুনে গাছ মাচা, ঘরের চাল কিংবা কোন গাছের উপর তুলে দেয়া যেতে পারে। বাণ্যিজিক চাষের ক্ষেত্রে প্রথম ভালোভাবে জমি ৫-১০ সেমি করে কয়েকবার ক্রস চাষ দিয়ে মই দ্বারা সমান করতে হবে। তারপর ১৫-২০ সেমি উঁচু এবং ২.৫ মি বাই ৮মি প্লট তৈরি করে নিতে হবে। প্রতিটি প্লটে ২ মিটার পর পর ৪৫ বাই ৪৫ বাই ৪০ সেমি আকারের পিট তাতে বীজ বপন করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, প্রতিটি প্লটের মাঝে পানি নিষ্কাশনের জন্য সরু নালী এবং জমির চারপাশে অপেক্ষাকৃত মোটা নালী তৈরি করে রাখতে হবে। যাতে প্রয়োজনে পানি নিষ্কাশন করা যায়।
সার ব্যবহার: ভালো ফলন পেতে মাটির উর্বরতার উপর ভিত্তি করে জমিতে বিভিন্ন সার ব্যবহার করা দরকার। এক্ষেত্রে মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। আমাদের দেশের পেক্ষাপটে প্রতিটি পিটে সার ব্যবহার করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বীজ বপনের প্রায় ১০-১৫ দিন আগে প্রতিটি প্লটে ১০-১৫ কেজি গোবর সার এবং প্রতিটি পিটে ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৪০ গ্রাম এমপি, ৪০ গ্রাম জিপসাম মাটির সাথে ভালোভাবে মিশ্রিত করে পিট তৈরি করলে ভালো হয়। বীজ অঙ্কুরিত হলে ১৫-২০ দিন পর প্রতিটি পিটে ২০ গ্রাম ইউরিয়া সার মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
সেচ প্রদান: কুমড়া গাছের বৃদ্ধি, ফুল ও ফল ধারনের জন্য মাটিতে রস থাকার প্রয়োজন। শুষ্ক আবহাওয়া থাকলে ৫-৬ দিন পর পর হালকা সেচ দিতে হবে। তবে ফল তোলার তিন সপ্তাহ আগেই সেচ দেওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। অপরদিকে বর্ষা বা বৃষ্টির পানি যাতে বেশি দিন গাছের গোড়ায় জমে না থাকে।
ফসল সংগ্রহ: বীজ বপণের দু’মাসের মধ্যে কুমড়ার গাছ ফল ধরতে শুরু করে এবং রোগাক্রান্ত না হলে আড়াই মাস ব্যাপি ফল দিয়ে থাকে। পরাগায়নের ১০-১৫ দিনের মধ্যে ফল সবজি হিসেবে খাওয়ার উপযোগী হয়। কুমড়ার ফল সংগ্রহের সুনির্দিষ্ট কোন পর্যায় নেই। ব্যবহারের উদ্দেশ্য অনুযায়ী অপক্ক ও পরিপক্ক ফল পাড়া হয়। ফল যত বেশি পাড়া হয় ফলন তত বেশি হয়। সবজি হিসেবে ব্যবহার করতে হলে ওজন আধা কেজি হলেও ফল পাড়া যায়। ফল পরিপক্ক হলে হালকা হলুদ রং ধারণ করে। ফল পাকাতে চাইলে শেষের দিকে গাছে দিতে হবে। ফল পাকালে হেক্টর প্রতি ফলন কমে যায়। তবে সবজি হিসেবে ফল সংগ্রহ করলে হেক্টর প্রতি ২০ টন ফলন পাওয়া যায়।
No comments