‘রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বলছে, রামদা-তলোয়ার হাতে টহল দিচ্ছে বৌদ্ধ তরুণরা’
রাখাইন
পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমারের নেত্রী নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু
চি যা-ই বলুন, বাস্তব অবস্থা কিন্তু ভিন্ন। কোনো বিদ্রোহী কিংবা সন্ত্রাসী
গোষ্ঠী নয়, স্থানীয় বৌদ্ধ তরুণরাই সেখানকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর
অত্যাচার ও নির্যাতন চালাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে
দিচ্ছে। তলোয়ার আর রামদা হাতে টহল দিচ্ছে সারাক্ষণ। তাদের সামনে পড়ার ভয়ে
রোহিঙ্গারা নিজেদের ভিটেবাড়ি ফেলে পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের এ অসহায় অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংবাদদাতা জোনাথন হেড।
বৃহস্পতিবার রাখাইন রাজ্য ঘুরে এসে বিবিসির এক প্রতিবেদনে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের গাড়ি তখন মংডু জেলার গাউদু যারা গ্রামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সাধারণত গ্রামের চিহ্ন হিসেবে ধানক্ষেত থাকে। আমাদের পেছনে ধানক্ষেতগুলোর মধ্যে সারিবদ্ধ গাছের ভেতর থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পেলাম। আমরা গাড়ি থেকে বের হলাম এবং ধানক্ষেত পেরিয়ে সেখানে যাওয়ার জন্য দৌড় দিলাম। প্রথমেই দেখতে পেলাম গ্রামের ভবনগুলো কেবল জ্বলছে।
গাওদু যারা গ্রামের বাড়িগুলো ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে ছাইয়ে পরিণত হয়ে গেল। মাত্র কিছুক্ষণ আগেই এখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একটু হেঁটে যাওয়ার পর একদল তরুণকে রামদা, তলোয়ার ও গুলতি হাতে চলে যেতে দেখলেন সাংবাদিকরা। তারা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা ছিল সবাই রাখাইন বৌদ্ধ। তাদের মধ্যে একজন স্বীকার করল, সে গ্রামে অগ্নিসংযোগ করেছে এবং পুলিশ তাকে সহযোগিতা করেছে।'
মংড়ুর পরিস্থিতি দেখতে মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ২৪ জন সাংবাদিকের একটি দলের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। জোনাথন হেড ছিলেন সেই গ্রুপেরই সদস্য। এ সফরে যোগ দেওয়ার পূর্বশর্ত ছিল সাংবাদিকরা দলবদ্ধ থাকবেন এবং স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারবেন না। নিরাপত্তা বাহিনীর পাহারায় সরকারের বাছাই করা স্থানে যেতে হবে তাদের। সবসময় অন্যান্য এলাকায়, এমনকি কাছের কোনো স্থানেও তাদের যাওয়ার প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছিল নিরাপত্তার অজুহাতে।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে অন্য আরও কয়েকটি গ্রামের রোহিঙ্গা চিত্র তুলে ধরে তিনি লিখেছেনথ ‘আমরা আর একটি গ্রামে গেলাম। সুনসান নীরবতা, কোনো মানুষই নেই। রাস্তার ওপর গৃহস্থালি সামগ্রী, শিশুদের খেলনা, নারীদের কাপড়চোপড় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল। রাস্তার মাঝে একটি খালি জগ দেখতে পেলাম যেটার ভেতর থেকে তখনও পেট্রোলের ঝাঁজ বের হচ্ছিল, আরেকটি পড়ে থাকা জগে কিছুটা পেট্রোল অবশিষ্ট ছিল। যখন আমরা বের হয়ে আসছিলাম, তখন পোড়া বাড়িগুলোতে আগুন ধিকিধিকি করে জ্বলছিল, কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যাচ্ছিল চারপাশ। চলতি পথে মাঝে মাঝে যাদের দেখেছিলাম, তারা ছিল হামলাকারী।'
আরেকটু সামনে এগোনোর পর একটি মাদ্রাসা দেখতে পেলাম যেটির ছাদ তখনও জ্বলছে। আগুন আরেকটি বাড়ির পাশে ছড়িয়ে পড়ায় তিন মিনিটের মাথায় সেটি রীতিমতো নরকে পরিণত হলো।
মংড়ুর এক শহরের বর্ণনায় হেড লিখেছেন, ‘দক্ষিণের শহর আই লি থান কিয়াঅ পরিদর্শন শেষে আমরা ফিরছিলাম। শহরটি তখনও জ্বলছিল, যা দেখে বোঝা যায় বেশ কিছু সময় আগে এতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পুলিশ আমাদের জানাল, মুসলমান বাসিন্দারাই তাদের নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। আমরা উত্তর দিকে বেশ কিছুটা দূরে কমপক্ষে ধোঁয়ার তিনটি কুণ্ডলী দেখতে পাচ্ছিলাম। এ সময় থেমে থেমে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল।’
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের এ অসহায় অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংবাদদাতা জোনাথন হেড।
বৃহস্পতিবার রাখাইন রাজ্য ঘুরে এসে বিবিসির এক প্রতিবেদনে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের গাড়ি তখন মংডু জেলার গাউদু যারা গ্রামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সাধারণত গ্রামের চিহ্ন হিসেবে ধানক্ষেত থাকে। আমাদের পেছনে ধানক্ষেতগুলোর মধ্যে সারিবদ্ধ গাছের ভেতর থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পেলাম। আমরা গাড়ি থেকে বের হলাম এবং ধানক্ষেত পেরিয়ে সেখানে যাওয়ার জন্য দৌড় দিলাম। প্রথমেই দেখতে পেলাম গ্রামের ভবনগুলো কেবল জ্বলছে।
গাওদু যারা গ্রামের বাড়িগুলো ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে ছাইয়ে পরিণত হয়ে গেল। মাত্র কিছুক্ষণ আগেই এখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একটু হেঁটে যাওয়ার পর একদল তরুণকে রামদা, তলোয়ার ও গুলতি হাতে চলে যেতে দেখলেন সাংবাদিকরা। তারা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা ছিল সবাই রাখাইন বৌদ্ধ। তাদের মধ্যে একজন স্বীকার করল, সে গ্রামে অগ্নিসংযোগ করেছে এবং পুলিশ তাকে সহযোগিতা করেছে।'
মংড়ুর পরিস্থিতি দেখতে মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ২৪ জন সাংবাদিকের একটি দলের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। জোনাথন হেড ছিলেন সেই গ্রুপেরই সদস্য। এ সফরে যোগ দেওয়ার পূর্বশর্ত ছিল সাংবাদিকরা দলবদ্ধ থাকবেন এবং স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারবেন না। নিরাপত্তা বাহিনীর পাহারায় সরকারের বাছাই করা স্থানে যেতে হবে তাদের। সবসময় অন্যান্য এলাকায়, এমনকি কাছের কোনো স্থানেও তাদের যাওয়ার প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছিল নিরাপত্তার অজুহাতে।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে অন্য আরও কয়েকটি গ্রামের রোহিঙ্গা চিত্র তুলে ধরে তিনি লিখেছেনথ ‘আমরা আর একটি গ্রামে গেলাম। সুনসান নীরবতা, কোনো মানুষই নেই। রাস্তার ওপর গৃহস্থালি সামগ্রী, শিশুদের খেলনা, নারীদের কাপড়চোপড় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল। রাস্তার মাঝে একটি খালি জগ দেখতে পেলাম যেটার ভেতর থেকে তখনও পেট্রোলের ঝাঁজ বের হচ্ছিল, আরেকটি পড়ে থাকা জগে কিছুটা পেট্রোল অবশিষ্ট ছিল। যখন আমরা বের হয়ে আসছিলাম, তখন পোড়া বাড়িগুলোতে আগুন ধিকিধিকি করে জ্বলছিল, কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যাচ্ছিল চারপাশ। চলতি পথে মাঝে মাঝে যাদের দেখেছিলাম, তারা ছিল হামলাকারী।'
আরেকটু সামনে এগোনোর পর একটি মাদ্রাসা দেখতে পেলাম যেটির ছাদ তখনও জ্বলছে। আগুন আরেকটি বাড়ির পাশে ছড়িয়ে পড়ায় তিন মিনিটের মাথায় সেটি রীতিমতো নরকে পরিণত হলো।
মংড়ুর এক শহরের বর্ণনায় হেড লিখেছেন, ‘দক্ষিণের শহর আই লি থান কিয়াঅ পরিদর্শন শেষে আমরা ফিরছিলাম। শহরটি তখনও জ্বলছিল, যা দেখে বোঝা যায় বেশ কিছু সময় আগে এতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পুলিশ আমাদের জানাল, মুসলমান বাসিন্দারাই তাদের নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। আমরা উত্তর দিকে বেশ কিছুটা দূরে কমপক্ষে ধোঁয়ার তিনটি কুণ্ডলী দেখতে পাচ্ছিলাম। এ সময় থেমে থেমে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল।’
No comments