নিশ্চয়ই বাংলার জনগণ নৌকায় ভোট দিবে -সংসদে সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন, উন্নয়নের ছোঁয়া বাংলাদেশের প্রত্যেক ঘরে ঘরে পৌছে
গেছে। দেশ ও জনগণের উন্নয়নে আমরা আরো কিছু মেগা প্রকল্প নিয়েছি। সেই
প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে আরো কিছু সময় প্রয়োজন। আর এই সময় দিতে পারে বাংলার
জনগণ। আগামী নির্বাচনে বাংলার জনগণ সেই সময় দিবে। নিশ্চয়ই বাংলার জনগণ
নৌকায় ভোট দিবে। জনগণের রায় নিয়ে আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় আসবে বলে তিনি
আশা প্রকাশ করেন।
গতকাল সোমবার রাতে সংসদ অধিবেশনে সমাপণী ভাষণে তিনি একথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেন, ’আপনারা আরেকটিবার নৌকায় ভোট দিন, আরেকটি দেশ সেবার সুযোগ দিন- এই বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য গতিতে, এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের মানুষকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। দেশের জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে, আমরা তাদের মর্যাদা রক্ষা করেছি। দেশের জনগণ আমাদের আবারও দেশ সেবার সুযোগ দিলে অবশ্যই দেশকে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলবো। যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে, ততক্ষণ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাব।
সমাপনি অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। সমাপনি অধিবেশনে বিরোধী দলের নেতাও সমাপনি বক্তব্যে রাখেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কাজ আমরা হাতে নিয়েছি, ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত করা। সেই কাজ আমরা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। এই উন্নয়ন-অগ্রগতি ও বিশ্ব স্বীকৃতি ধরে রাখতে দরকার সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার জীবনে কোন চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার বেঁচে থাকাটাই একটা দূর্ঘটনা। আমার ওপর বার বার আঘাত এসেছে। গুলি, বোমা, গ্রেনেড হামলা হয়েছি। আমি জানি যে কোন সময় আমি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারি। এটা জেনেই আমি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ও কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। যতক্ষণ দেশে প্রাণ আছে, ততক্ষণ দেশের জন্য, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করে যাব। মানুষকে সুন্দর জীবন দেব, সেজন্য দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি কার স্বার্থে? কার জন্য? আমার নিজের কোন স্বার্থ নেই, জনগণের স্বার্থে-কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। তাই দেশবাসীর প্রতি আমার আবেদন, আবার নৌকায় ভোট দিয়ে দেশ সেবা করার সুযোগ দিন, বাংলাদেশ অদ্যম গতিতে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। বঙ্গবন্ধুর উদ্বৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা পাওয়া যেমন কষ্টকর, তা রক্ষা করা আরও কষ্টকর। পাওয়া যত কষ্টকর, তা ধরে রাখা আরও কষ্টকর। দেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে আনতে সক্ষম হয়েছি। স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে, কঠোর পরিশ্রম ও সৎ পথে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। সেই পরিশ্রমের ফসল দেশের জনগণ এখন ভোগ করছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করাই আমরা একমাত্র কর্তব্য।
বিরোধী দলের দাবীর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে প্রাণচাঞ্চল্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় সেজন্য ব্যাংক, বীমা, বেসরকারি টেলিভিশনসহ সবকিছু বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আমাদের তরুণ প্রজন্ম তাদের ভবিষ্যত কী হবে, জীবনমান কেমন হবে? কেমন বাংলাদেশ রেখে যেতে চাই, সেটাই একমাত্র চিন্তা। টানা ১০ বছরে আমাদের শাসনমালে তরুণ প্রজন্মের সুন্দর জীবন দিতে প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়েছি। আজকে আমরা নিজস্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১৫ কোটি সিম ব্যবহার হচ্ছে। এতো সিম ব্যবহার পৃথিবীর কোন দেশে নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে, আমরা তাদের মর্যাদা রক্ষা করেছি। ২০২১ সালের মধ্যে সুনির্দিষ্ট টার্গেট করেছি শুধুমাত্র আইসিটি খাত থেকেই ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবো। ইন্টারনেট ব্যবহারে বিশ্বব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশ হচ্ছে এখন দ্বিতীয়। ৬ লাখেরও বেশি দেশের তরুণ-তরুণী দেশে ঘরে বসেই আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে বিদেশ থেকে অর্থ উপার্জন করছে। মোবাইল ব্যাংকিংও যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মোবাইল ব্যাংকে প্রতিদিন এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে, এটাই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কোরবানীর গরুও এখন অনলাইনে বিক্রি হয়। সাড়ে সাত হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব গড়ে তুলেছি। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আইটি খাতে বিরাজ সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য। ২০২১ সাল নাগাদ ১ হাজার ১৮৭টি ই-সেবা চালু করা হবে। সাইবার ঝুঁকি থেকে দেশকে রক্ষায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করেছি। যারা শুধু ক্রাইম করবে তাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হবে, অন্যদের চিন্তা করার কোন কারণ নেই।
সংসদ নেতা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। এই অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে। ২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে পারি, তবে বিশ্ব স্বীকৃতি পাবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় সরকারের ধারাবাহিকতা একান্তভাবে প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, কওমী মাদ্রাসার কোন স্বীকৃতি ছিল না। আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। ১৪-১৫ লাখ শিক্ষার্থীর উজ্¦ল ভবিষ্যত হবে, চাকুরি পাবে দেশে-বিদেশে। সেই সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। প্রতিটি উপজেলায় সরকারি স্কুল করে দিচ্ছি। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করেছি। মাদ্রকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতি বিরুদ্ধেও অভিযান চালাচ্ছে। আগামীতে ক্ষমতায় আসতে পারলে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো। উন্নয়নের ছোঁয়া বাংলাদেশের মানুষের মনে লেগেছে, নিশ্চয় তারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্ল-ইকোনমি ঘোষণা করেছি। আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে পারলে ব্ল-ইকোনমি বাস্তবায়ন করবো। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়নের সুফল দেশের সকল মানুষ ভোগ করছে। সকলের সহযোগিতায় আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি। বিরোধী দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আগে সংসদের যে পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে, কত নোংরা কথা শুনতে হয়েছে। টিভি ক্যামেরা, ফাইল, চেয়ার, ফোল্ডার কোনকিছুই রেহাই পায়নি। দশম জাতীয় সংসদে বর্বরতা, অসভ্যতা কাউকে শুনতে হয়নি। সংসদ যে জাতি, দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে, দশম জাতীয় সংসদ তা প্রমাণ করেছে। গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের আস্থা-বিশ্বাস বেড়েছে। গণতন্ত্র থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, তাও প্রমাণিত হয়েছে।
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী কবি সুকান্তের কবিতাটি উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, সুকান্তের ভাষায় বলবো- ’চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাবো জঞ্জাল, এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি- নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’ তাই আবার দেশ সেবার সুযোগ পেলে অবশ্যই দেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তুলবো। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ২০৪১ সালে হয়তো বেঁচে থাকব না। কিন্তু যে কাজ আমরা শুরু করেছি, যারাই ক্ষমতায় আসবে, তারা ওই সময়ের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবে। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষও উন্নত সমৃদ্ধ জীবন পাবে।
বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতাসহ জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি বলেন, সরকারের মেয়াদ শেষের দিকে চলে এসেছে। এটাই হতে যাচ্ছে চলতি সংসদের শেষ অধিবেশন। কোনো ধরনের দুর্ঘটনা-দুর্যোগ না হলে এটিই হবে চলতি সংসদে শেষ অধিবেশন। তবে নির্বাচিত হয়ে আবারো নতুন সংসদের অধিবেশনে ফিরে আসবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গতকাল সোমবার রাতে সংসদ অধিবেশনে সমাপণী ভাষণে তিনি একথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেন, ’আপনারা আরেকটিবার নৌকায় ভোট দিন, আরেকটি দেশ সেবার সুযোগ দিন- এই বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য গতিতে, এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের মানুষকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। দেশের জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে, আমরা তাদের মর্যাদা রক্ষা করেছি। দেশের জনগণ আমাদের আবারও দেশ সেবার সুযোগ দিলে অবশ্যই দেশকে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলবো। যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে, ততক্ষণ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাব।
সমাপনি অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। সমাপনি অধিবেশনে বিরোধী দলের নেতাও সমাপনি বক্তব্যে রাখেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কাজ আমরা হাতে নিয়েছি, ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত করা। সেই কাজ আমরা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। এই উন্নয়ন-অগ্রগতি ও বিশ্ব স্বীকৃতি ধরে রাখতে দরকার সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার জীবনে কোন চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার বেঁচে থাকাটাই একটা দূর্ঘটনা। আমার ওপর বার বার আঘাত এসেছে। গুলি, বোমা, গ্রেনেড হামলা হয়েছি। আমি জানি যে কোন সময় আমি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারি। এটা জেনেই আমি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ও কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। যতক্ষণ দেশে প্রাণ আছে, ততক্ষণ দেশের জন্য, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করে যাব। মানুষকে সুন্দর জীবন দেব, সেজন্য দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি কার স্বার্থে? কার জন্য? আমার নিজের কোন স্বার্থ নেই, জনগণের স্বার্থে-কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। তাই দেশবাসীর প্রতি আমার আবেদন, আবার নৌকায় ভোট দিয়ে দেশ সেবা করার সুযোগ দিন, বাংলাদেশ অদ্যম গতিতে এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। বঙ্গবন্ধুর উদ্বৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা পাওয়া যেমন কষ্টকর, তা রক্ষা করা আরও কষ্টকর। পাওয়া যত কষ্টকর, তা ধরে রাখা আরও কষ্টকর। দেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে আনতে সক্ষম হয়েছি। স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে, কঠোর পরিশ্রম ও সৎ পথে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। সেই পরিশ্রমের ফসল দেশের জনগণ এখন ভোগ করছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করাই আমরা একমাত্র কর্তব্য।
বিরোধী দলের দাবীর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে প্রাণচাঞ্চল্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় সেজন্য ব্যাংক, বীমা, বেসরকারি টেলিভিশনসহ সবকিছু বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আমাদের তরুণ প্রজন্ম তাদের ভবিষ্যত কী হবে, জীবনমান কেমন হবে? কেমন বাংলাদেশ রেখে যেতে চাই, সেটাই একমাত্র চিন্তা। টানা ১০ বছরে আমাদের শাসনমালে তরুণ প্রজন্মের সুন্দর জীবন দিতে প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়েছি। আজকে আমরা নিজস্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১৫ কোটি সিম ব্যবহার হচ্ছে। এতো সিম ব্যবহার পৃথিবীর কোন দেশে নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে, আমরা তাদের মর্যাদা রক্ষা করেছি। ২০২১ সালের মধ্যে সুনির্দিষ্ট টার্গেট করেছি শুধুমাত্র আইসিটি খাত থেকেই ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবো। ইন্টারনেট ব্যবহারে বিশ্বব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশ হচ্ছে এখন দ্বিতীয়। ৬ লাখেরও বেশি দেশের তরুণ-তরুণী দেশে ঘরে বসেই আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে বিদেশ থেকে অর্থ উপার্জন করছে। মোবাইল ব্যাংকিংও যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মোবাইল ব্যাংকে প্রতিদিন এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে, এটাই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কোরবানীর গরুও এখন অনলাইনে বিক্রি হয়। সাড়ে সাত হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব গড়ে তুলেছি। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আইটি খাতে বিরাজ সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য। ২০২১ সাল নাগাদ ১ হাজার ১৮৭টি ই-সেবা চালু করা হবে। সাইবার ঝুঁকি থেকে দেশকে রক্ষায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করেছি। যারা শুধু ক্রাইম করবে তাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হবে, অন্যদের চিন্তা করার কোন কারণ নেই।
সংসদ নেতা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। এই অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে। ২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে পারি, তবে বিশ্ব স্বীকৃতি পাবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় সরকারের ধারাবাহিকতা একান্তভাবে প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, কওমী মাদ্রাসার কোন স্বীকৃতি ছিল না। আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। ১৪-১৫ লাখ শিক্ষার্থীর উজ্¦ল ভবিষ্যত হবে, চাকুরি পাবে দেশে-বিদেশে। সেই সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। প্রতিটি উপজেলায় সরকারি স্কুল করে দিচ্ছি। সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করেছি। মাদ্রকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতি বিরুদ্ধেও অভিযান চালাচ্ছে। আগামীতে ক্ষমতায় আসতে পারলে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো। উন্নয়নের ছোঁয়া বাংলাদেশের মানুষের মনে লেগেছে, নিশ্চয় তারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্ল-ইকোনমি ঘোষণা করেছি। আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে পারলে ব্ল-ইকোনমি বাস্তবায়ন করবো। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়নের সুফল দেশের সকল মানুষ ভোগ করছে। সকলের সহযোগিতায় আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি। বিরোধী দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আগে সংসদের যে পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে, কত নোংরা কথা শুনতে হয়েছে। টিভি ক্যামেরা, ফাইল, চেয়ার, ফোল্ডার কোনকিছুই রেহাই পায়নি। দশম জাতীয় সংসদে বর্বরতা, অসভ্যতা কাউকে শুনতে হয়নি। সংসদ যে জাতি, দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে, দশম জাতীয় সংসদ তা প্রমাণ করেছে। গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের আস্থা-বিশ্বাস বেড়েছে। গণতন্ত্র থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, তাও প্রমাণিত হয়েছে।
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী কবি সুকান্তের কবিতাটি উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, সুকান্তের ভাষায় বলবো- ’চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাবো জঞ্জাল, এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি- নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’ তাই আবার দেশ সেবার সুযোগ পেলে অবশ্যই দেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তুলবো। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ২০৪১ সালে হয়তো বেঁচে থাকব না। কিন্তু যে কাজ আমরা শুরু করেছি, যারাই ক্ষমতায় আসবে, তারা ওই সময়ের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবে। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষও উন্নত সমৃদ্ধ জীবন পাবে।
বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতাসহ জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি বলেন, সরকারের মেয়াদ শেষের দিকে চলে এসেছে। এটাই হতে যাচ্ছে চলতি সংসদের শেষ অধিবেশন। কোনো ধরনের দুর্ঘটনা-দুর্যোগ না হলে এটিই হবে চলতি সংসদে শেষ অধিবেশন। তবে নির্বাচিত হয়ে আবারো নতুন সংসদের অধিবেশনে ফিরে আসবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
No comments