বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পালাতে সাহায্য করেন খালেদ মোশাররফ: ইনু
জেনারেল খালেদ মোশাররফকে ‘জঘন্য আঁতাতকারী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেছেন, “খালেদ মোশাররফই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন।” তাই যারা খালেদা মোশাররফকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করছেন, তাদের সতর্ক হতে পরামর্শ দেন মন্ত্রী। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সড়কদ্বীপে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তথ্যমন্ত্রী এই মন্তব্য ও পরামর্শ দেন। ৩৯তম সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে কর্নেল তাহের সংসদ এ আলোচনার আয়োজন করে। তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে জাসদের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান আওয়ামী লীগের সরকারের তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা আন্দোলন করেছি বলেই কি বঙ্গবন্ধু মারা গেছেন? বামপন্থীরা, সিপিবি কি আন্দোলন করেনি? নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করা কি পাপ?” ওই সময় জাসদের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্নজনের সমালোচনার প্রতি ইঙ্গিত করে হাসানুল হক ইনু বলেন, “যাঁরা শেখ হাসিনা-খালেদাকে এবং জাসদ-খালেদাকে এক পাল্লায় মাপছেন, তারা কোনোদিন বুঝতে পারবেন না, ১৫ আগস্টের পর মাথা নিচু করে নির্যাতন সহ্য করার দল জাসদ না। আমাদের মাথা উঁচু করে প্রথম শক্ত প্রতিবাদের প্রচেষ্টা ছিল সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান।” জাসদের সভাপতি বলেন, “হ্যাঁ, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। কিছুক্ষণ ক্ষমতায় ছিলাম। এর মানে এই নয় যে দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিলাম।” জিয়াউর রহমানকে একজন মীরজাফর আখ্যা দিয়ে ইনু বলেন, “বঙ্গবন্ধু এই মীরজাফরকে চিনতে পারেননি। আমরাও চিনতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু প্রাণ দিয়ে কাফফারা দিয়েছেন। আমরা জিয়ার সঙ্গে কোনো আঁতাত করিনি। কিন্তু জিয়া কেন ক্ষমতায় গেল তার জন্য আমাদের দোষারোপ করা হচ্ছে।” সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম এম আকাশ তৎকালীন জাসদ আর বর্তমান জাসদের কিছু পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আজকের জাসদ আর তখনকার জাসদ এক নয়। তখন আওয়ামী লীগ ছিল জাসদের শত্রু, এখন মিত্র। তাতে একটা প্রশ্ন জাগে, কর্নেল তাহেরের আদর্শ অনুসরণ করব, না জাসদ করব। দুটো একসঙ্গে চলতে পারে কি না। আওয়ামী লীগ জাসদকে ব্যবহার করছে, না জাসদ আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করছে, এটি এখন মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। কর্নেল তাহেরের ভাই ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, “জাসদের পরিবর্তনগুলো স্থান-কাল-পাত্রের দৃষ্টিতে দেখতে হবে। এখন জাসদ মহাজোট সরকারে যোগ দিয়ে মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হচ্ছে কি না, তা দেখতে হবে।” হায়দার আকবর খান রনোর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন তাহের সংসদের সহসভাপতি মোশতাক হোসেন প্রমুখ।
No comments