জঙ্গি হলেও গুলি করার অধিকার পুলিশের নেই: মানবাধিকার কমিশন
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বলেছে, কেউ নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাকে গুলি করার কোনো অধিকার পুলিশের নেই। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের বক্তব্যের জবাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দেয়া প্রতিক্রিয়ার জবাবে শনিবার এক বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেছে কমিশন। বিবৃতিতে কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য জঙ্গিবাদকে উসকে দেবে বলে ডিএমপি যে বক্তব্য দিয়েছে তাকে অমূলক বলে মন্তব্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি মানবাধিকার রক্ষার ওপরও গুরুত্ব দিতে বলেছেন। কমিশন মানবাধিকারের মূল্যবোধকে সমুন্বত রাখতে বদ্ধ পরিকর। ১৭ অক্টোবর ঢাকার মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত এক যুবককে দেখতে ৬ নভেম্বর জাতীয় মানবধিকার কমিশনের চেয়ারম্যঅন মিজানুর রহমান ঢাকা মেডিকেল কলে হাসপাতালে যান। পরিদর্শন শেষে চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কাছে তার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলেন, আহত যুবককে পুলিশ অস্ত্র ঠেকিয়ে পায়ে এবং কোমরে গুলি করেছে। দেশে কোনো আইন কোনো কর্তৃপক্ষ কাউকে এভাবে গুলি করার অধিকার দেয়নি। এটি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মানবাধিকারের মানদণ্ডে এটি গ্রহণযোগ্য নয়। বিনাবিচারে কাউকে শাস্তি দেয়া যায় না। বিবৃতিতে বলা হয়, “কমিশনের চেয়ারম্যানের এ বক্তব্য ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তার এই বক্তব্য জঙ্গিবাদকে উসকে দেবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতে, আহত ব্যক্তি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সদস্য। “এ বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য হলো, কেউ নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাকে গুলি করার কোনো অধিকার পুলিশের নেই। প্রধানমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি মানবাধিকার রক্ষার ওপরও গুরুত্ব দিতে বলেছেন। তিনি মানবাধিকারের মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন। কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য জঙ্গিবাদ উসকে দেবে ডিএমপির এ বক্তব্য অমূলক। তার বক্তব্যের ভিন্ন অর্থ করার চেষ্টা হয়েছে যা অনভিপ্রেত। কোনো বক্তব্যের মূল বিষয়বস্তু উপেক্ষা করে তা ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা অনৈতিক ও অন্যায্য। কমিশন মানবাধিকারের মূল্যবোধকে সমুন্বত রাখতে বদ্ধ পরিকর।” কমিশনের চেয়ারম্যান আদালতের অনুমতি ছাড়া হাসপাতালে একজন আসামি দেখতে গেছেন্- ডিএমপির এই বক্তব্য খণ্ডন করে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ এর ১২(১)(গ) বলে হাসপাতাল, কারাগার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিশুসদন পরিদর্শনের জন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন হয় না। কমিশন মূলত একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, যা স্বতন্ত্র আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত।”
No comments