বর্ধমান বিস্ফোরণের হোতা সাজিদ গ্রেফতার
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বিস্ফোরণকাণ্ডের হোতা জেএমবির নেতা সাজিদকে শনিবার বিকালে কলকাতায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দমদম বিমানবন্দরের লাগোয়া যশোর রোড থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিকালেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএর হাতে তুলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এর আগে শুক্রবার রাতে আসামের গৌহাটি বাসস্ট্যান্ড থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে সুজেনা বেগম (২৮) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। সুজেনা বলেছেন, রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের মতো নারী ‘মানববোমা’ ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এজন্য ভারতে দুটি মাদ্রাসায় নারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।সাজিদকে ধরিয়ে দিলে দশ লাখ রুপি দেয়ার কথা পাঁচ দিন আগেই ঘোষণা করেছিল এনআইএ। সল্টলেক পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমার জানান, সাজিদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। বোরহান সেখ ও সুরাত আলি নামে পশ্চিমবঙ্গে ড্রাইভিং লাইসেন্সও তৈরি করেছিলেন তিনি। বর্ধমানে জঙ্গি ডেরা তৈরি থেকে শুরু করে গোটা ষড়যন্ত্রের তিনিই হোতো।বর্ধমানের এই ডেরাতে বসেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়াকে হত্যার ছক করেছিল জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। শেখ হাসিনাকে হত্যার ছকের তথ্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র দফতর।আসাম পুলিশের উপ-প্রধান পল্লব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সুজেনা জেরায় স্বীকার করেছেন, জেএমবি নেতা সাজিদদের কাছে জেহাদি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। ঢাকা থেকে জেএমবির পাঠানো কোটি কোটি টাকা হুন্ডি মারফত সুজেনার কাছে আসত। আর সেই টাকা তিনি বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ ও মালদহে লুকিয়ে থাকা জেএমবি জঙ্গিদের কাছে পৌঁছে দিতেন। বিস্ফোরণের পর সুজেনাকে ধরে দিলে পাঁচ লাখ রুপি দেয়া হবে বলেও ঘোষণা করেছিল এনআইএ।গৌহাটি আদালতের নির্দেশে নিজেদের হেফাজতে নেয়ার পর দফায় দফায় সুজেনাকে জেরা করে এনআইএ। জেরায় সুজেনা স্বীকার করেন, রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডের মতো নারী ‘মানববোমা’ ব্যবহার করে কিভাবে হাসিনাকে হত্যা করা হবে তা নিয়ে দুই মাদ্রাসায় নারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। মাদ্রাসা দুটি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান ও আসামের বরপেটা জেলায়। সুজেনা নিজে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন বর্ধমানের শিমুলিয়া মাদ্রাসায়। শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য যে ‘মিশন’ পাঠানো হতো তাতে সুজেনার থাকার কথা ছিল। এনআইএ সূত্র জানায়, জেএমবির জঙ্গি সাজিদ ও ইউসুফের সঙ্গে সুজেনার একাধিকবার বৈঠক হয়েছে গৌহাটিতে। এনআইএ জানিয়েছে, ২ অক্টোবর বিস্ফোরণের পরদিনই ধরা পড়া রাজিয়া বিবি ও আমিনা বিবিকে জেরা করে জানা গিয়েছিল, গুজরাট ও আসামের দাঙ্গা এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গা খুনের ভিডিও ক্লিপিং দেখিয়ে শিমুলিয়া ও মোকিমনগরে জেএমবির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে জেহাদি প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। আসামে ধরা পড়া সুজেনা বেগম যে সেই প্রশিক্ষণ দিতেন তা এদিন স্বীকার করেছেন।
No comments