ভারতে দুই কোটির বেশি ‘অবাঞ্ছিত কন্যা’ শিশুর জন্ম
পুত্র
শিশু লাভের আশায় সন্তান জন্মদান অব্যাহত রাখার কারণে ভারতে প্রায় দুই
কোটি ১০ লাখ ‘অবাঞ্ছিত কন্যা শিশুর’ জন্ম হয়েছে। ভারত সরকারের এক
প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দ্বারা পরিচালিত
বার্ষিক অর্থনৈতিক জরিপ বলছে, দেশটিতে অনেক দম্পতি আছে, যারা যতদিন পর্যন্ত
পুত্রসন্তান লাভ করেনি, ততদিন পর্যন্ত তারা সন্তান জন্ম দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের জন-শুমারিতে প্রায় ছয় কোটি ৩০ লাখ নারীর
কোনো অস্তিত্ব নেই। কারণ দম্পতিরা যখন দেখেছে যে, মায়ের গর্ভের সন্তান
পুত্র শিশু নয়, তখন গর্ভপাত করানো হয়েছে অথবা পরে পুত্র শিশুর প্রতি বেশি
নজর দেয়া হয়েছে। গর্ভের শিশুর পুত্র নাকি কন্যা- সেটি নির্ণয়ের জন্য
ডাক্তারি পরীক্ষা ভারতে আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ।
কিন্তু এর পরও এ ধরনের
পরীক্ষা চলে এবং গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় জানার পর কন্যা শিশুর ভ্রূণ
হত্যা করা হয়। ভারতে কন্যাশিশুর প্রতি অনাগ্রহের বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
প্রথমত সম্পত্তি হস্তান্তরের বিষয়। মেয়েরা উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির
মালিক হতে পারে না। দ্বিতীয়ত মেয়েদের বিয়ের সময় মোটা অংকের অর্থ যৌতুক
হিসেবে দিতে হয়। তৃতীয়ত বিয়ের পর মেয়েদের পৈতৃক বাড়ি ছেড়ে স্বামীর
বাড়িতে চলে যেতে হয়। এসব কারণে দেশটিতে অধিকাংশ পিতামাতা পুত্রসন্তান
লাভের জন্য ব্যাকুল থাকেন। পুত্রসন্তান লাভের জন্য ভারতের বিভিন্ন জায়গায়
কিছু বিশ্বাস চালু আছে। যেমন- ঘুমানোর সময় পশ্চিম দিকে মুখ ফিরে শোয়া
কিংবা সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে যৌন মিলন করা। পুত্রসন্তানকে সর্বাধিক
গুরুত্ব দেয়া হয় পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যে। এক্ষেত্রে তালিকায় সবচেয়ে
নিচের দিকে আছে মেঘালয়।
No comments