মফস্বল শিল্পীদের সুদিন কি ফিরে আসছে?
হারিয়ে
যাচ্ছে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত অনেক কিছুই। অষ্টক, পালাগান,
জারী, সারি, কবিগান, ময়না নাচ, পু্ঁথি পাঠ, পট গান। একসময় এগুলোই ছিল
বাংলার মানুষের বিনোদনের মাধ্যম। কালের পরিবর্তনে আমাদের বিনোদনের মাধ্যম
পরিবর্তিত হয়েছে, ব্যস্ততা বেড়েছে, আমাদের সংস্কৃতিতেও এসেছে বিবর্তন।
বিবর্তন অনেক ক্ষেত্রেই ইতিবাচক। বিবর্তনের মাধ্যমেইতো সমাজ সংস্কৃতি
উন্নতির দিকে ধাবিত হয়। তবে শেকড়কে তার জায়গায় অপরিবর্তিত রেখে। শেকড়কে
ভুলে গিয়ে নয়। এসব ময়না গান, পট গান, পঁথি পাঠ, অষ্টক, জারি, সারি কবিগান
প্রতিটি মাধ্যমেরই সমাজে রয়েছে আলাদা আলাদা প্রয়োজনীয়তা, আলাদা আলাদা
সৌন্দর্য এবং মাধুর্য। রয়েছে কিছু ইতিহাস। শিল্পের এ প্রতিটি মাধ্যমই
স্বতন্ত্র। সংস্কৃতিতে অনেক নতুনই যুক্ত হতে পারে তবে স্থান দখল করতে পারে
না। আর সেটা হতে দেওয়া কৃতিত্বের নয়।
বরং প্রকারান্তরে নিজের অস্তিত্বকেই
অস্বীকারের সামিল। আর তাই এখনি যদি উদ্যোগ না নেয়া হয় তবে এসব আদি শিল্প
আমরা হারিয়ে ফেলব। যেসব শিল্পীরা এখনো বেঁচে আছেন তাদের পৃষ্ঠপোষকতা এবং
তাদের শিষ্যদের মাধ্যমে এ শিল্প টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে
বাংলাদেশের একটি মফস্বলের শিল্পসংগঠন। বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলা
শিল্পকলা একাডেমির সাথে সংশ্লিষ্ট শিল্পীবৃন্দ কাজ করে যাচ্ছেন এই
শিল্পীদের একত্রিত করতে। মঞ্চস্থ করার মাধ্যমে এসব শিল্পকে নতুন প্রজন্মের
কাছে তুলে ধরতে তথাপি দেশবাসীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে সচেষ্ট তারা। শিল্প
সংগঠন হিসেবে দেশের প্রতি এটা তাদের দায়িত্ব বলেই মনে করছেন তারা। এ
ব্যাপারে চিতলমারী শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.
আবু সাঈদ বলেন- আমি যে এলাকার দায়িত্বে আছি সেখানে লোক সংস্কৃতি চর্চার
জন্য আমার সর্বোচ্চ পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করবো এবং এ শিল্পকে দেশের সর্বত্র
পরিচিত করার চেষ্টা করবো। একাডেমির বর্তমান সহ-সভাপতি এবং সাংস্কৃতিক
প্রতিক্ষণের পরিচালক মো. মোহাসীন রেজা বলেন- এই শিল্পীদের খুঁজে বের করে
তাদের যথাযথ সম্মানের সাথে, শিল্পকলা একাডেমির পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের পরিবেশণ
মঞ্চস্হ করতে চাই। এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্হা করেছি আমরা।
আমরা চাই লোক এই শিল্পসমূহকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে। একাডেমির
সম্পাদক জনাব মো. মফিজুর রহমান বলেন- এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে আমার পক্ষ থেকে
সর্বোচ্চ আন্তরিকতার ত্রুটি নেই।
No comments