বেনাপোলে ৫ম দিনের মতো আমদানি-রফতানি বন্ধ
ভারতীয়
কাস্টমসের কারপাস সংক্রান্ত জটিলতায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৫ম দিনের মতো দুই
দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ডাকা এই
অনির্দিস্টকালের ধর্মঘটে বেনাপোল বন্দর থেকে ৪৮ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে
বঞ্চিত হয়েছে সরকার। ধর্মঘটে বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল
বন্দরে ১০ হাজার পণ্যবোঝাই আটকা পড়ে আছে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায়।
তবে বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাস, মালামাল ওঠা নামাসহ সব ধরনের কাজকর্ম
রয়েছে স্বাভাবিক। ২৫ জানুয়ারি সকাল থেকে অনির্দিস্টকালের এই ধর্মঘটের ডাক
দেয় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার
এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, বাংলাদেশে দ্রুত
পণ্য রফতানির স্বার্থে আগে তাদের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কর্মচারীরা কাস্টমস
কর্মকর্তাদের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতায় মেনিফেস্ট তৈরি করার পর (কারপাস)
বাংলাদেশে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করাতো। তিনি জানান, হঠাৎ করে কাস্টমস
কর্তৃপক্ষ এক নির্দেশনা জারিতে বলেন, তারা নিজেরাই কারপাস ইস্যু করে রফতানি
পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন। হঠাৎ করে এ ধরনের নির্দেশনায় ধীরগতিতে পণ্য
রফতানিতে ব্যাপক জটিলতা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে সে দেশের কাস্টমসের সঙ্গে
বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন দফায় দফায় বৈঠক করে কোনো সমাধান না হওয়ায়
বৃহস্পতিবার থেকে আমদানি রফতানি বানিজ্য বন্ধ করে দেয় সিএন্ডএফ কর্মীরা।
এখনো কোনো সমাধান না হওয়ায় তারা কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন।
এক্ষেত্রে
ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও ভবিষ্যৎ সুবিধার কথা বিবেচনা করেন তারা এ
সিদ্ধান্ত অটুট রয়েছে বলেও জানান কার্তিক চক্রবর্তী। বেনাপোল চেকপোস্ট
কাস্টমস কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, ভারতে কারপাস
জটিলতার কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে পাঁচ দিন ধরে।
ফলে দুই দেশের মধ্যে কোনো পণ্য আমদানি-রফতানি হচ্ছে না। বেনাপোল বন্দরের
ডাইরেক্টর আমিনুল ইসলাম জানান, ভারতের সঙ্গে পাঁচ দিন আমদানি রফতানি বন্ধ
থাকলে ও বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাশ অব্যাহত আছে। এটা ভারতের কাস্টমস ও
বন্দর ব্যবহারকারীদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হলেও তারা দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা
করে বাণিজ্য সচলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনির্দিস্টকালের ধর্মঘটে দুই
পাশে প্রায় ১০ হাজার পন্য বোঝাই ট্রাক আটকা পড়েছে। যার অধিকাংশই বাংলাদেশের
বিভিন্ন শিল্প কলকারখানাসহ শতভাগ রফতানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল।
ভারতের ব্যবসায়ী নেতা প্রদীপ কুমার জানান, ভারতের বন্দর এলাকায় আটকাপড়া
পচনশীল পণ্যবোঝাই শতশত ট্রাক নিয়ে বিপাকে পড়েছে রফাতানিকারকরা। ইতিমধ্যে
অধিকাংশ পচনশীল ট্রাকের মালামাল নস্ট হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ভারতে
রফতানির অপেক্ষায় অপেক্ষায় বেনাপোল বন্দরে কয়েকশ রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক
দাঁড়িয়ে রয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউজের ডেপুটি কমিশনার রুবেল আহম্মেদ
জানান, ভারতে অনির্দিকালের ধর্মঘটে দুই দেশের আমদানি রফতানি বানিজ্য স্থবির
হয়ে পড়েছে। তবে ওপারে কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে
বিষয়টি নিস্পত্তি করার জন্য।
No comments