টিকফা প্রসঙ্গে কিছু কথা by তারেক শামসুর রেহমান
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস
মজিনা বলেছেন, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে টিকফা স্বাক্ষরিত হবে। টিকফা বা
Trade and Investment Co-operation Frame work Agreement (TICFA) নিয়ে
বাংলাদেশে নানা মত আছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পক্ষে যেমনি একটি মত আছে, ঠিক
তেমনি একটি বিপক্ষ মতও আছে। বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা এরই মধ্যে চুক্তিটি
অনুমোদন করেছে। তবে মজার কথা, টিকফার বিষয়বস্তু এখন অব্দি উপস্থাপন করা
হয়নি, এমনকি সংসদেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা
হয়েছে, এ চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়বে।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়বে। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদেরও টিকফার ব্যাপারে আশাবাদী। সরকারের পক্ষ থেকে
এমন আশাও ব্যক্ত করা হয়েছে, টিকফা স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা
পাবে। বলা ভালো যুক্তরাষ্ট্র অতিসম্প্রতি কিছু পণ্যের যে শুল্কমুক্ত সুবিধা
(জিএসপি) বাংলাদেশকে দিত, তা স্থগিত করেছে। স্থগিত হওয়ার পেছনে মূল কারণটি
ছিল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমমান নিশ্চিত করার ব্যর্থতা।
এমনকি আশুলিয়ায় শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে না
পারা, তৈরি পোশাক শিল্পে ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা না করার ব্যাপারে
যুক্তরাষ্ট্র অসন্তুষ্ট ছিল। ফলে একপর্যায়ে কংগ্রেস সদস্যদের চাপের মুখে
জিএসপি সুবিধা স্থগিত হয়ে যায়। এখন বাংলাদেশ সরকারের একটা উদ্দেশ্য হতে
পারে, টিকফা স্বাক্ষর করলে হয়তো বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা ফিরে পাবে।
প্রকৃতপক্ষে এর সঙ্গে টিকফার কোনো যোগসূত্র নেই।
দ্বিতীয় আরেকটি যে বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেলেও তাতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি বাড়বে না। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে তৈরি পোশাকে জিএসপি সুবিধা চেয়ে আসছিল। কিন্তু তৈরি পোশাকে আমাদের কোনো জিএসপি সুবিধা ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী পণ্যের বাজার হচ্ছে ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের। এর মাঝে মাত্র ০.৫ ভাগ পণ্য এ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেত। এর পরিমাণ মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ডলার কর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এখনও তার পণ্য নিয়ে টিকে আছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় যেসব বাংলাদেশী পণ্যে, তার মাঝে রয়েছে- তামাক, সিরামিক, ফার্নিচার, প্লাস্টিক, খেলনা ইত্যাদি। এর খুব কম পণ্যই বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করে। গার্মেন্ট বা তৈরি পোশাকে বাংলাদেশী রফতানিকারকরা শতকরা ১৫ ভাগ হারে শুল্ক পরিশোধ করে বাজার ধরে রেখেছে। অথচ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দোহা চুক্তি অনুযায়ী একটি স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে তার পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তা দিচ্ছে না। এ সুবিধা উন্নত রাষ্ট্রগুলো পায়। তৈরি পোশাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দোহা চুক্তি লংঘন করেছে। সুতরাং তৈরি পোশাকে আমরা যদি শুল্কমুক্ত সুবিধা না পাই, তাহলে এ জিএসপি সুবিধা রফতানির ক্ষেত্রে কোনো বড় অবদান রাখতে পারবে না। আজ যদি জিএসপি সুবিধার আশ্বাসে আমরা টিকফা স্বাক্ষর করি, তাতে আমাদের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। টিকফার সঙ্গে তাই জিএসপি সুবিধাকে মেলানো যাবে না। জিএসপি সুবিধা একটি ভিন্ন বিষয়।
এখন যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে টিকফা করে আমরা কতটুকু উপকৃত হব। টিকফা স্বাক্ষরিত হলে দেশে মার্কিনি বিনিয়োগ বাড়বে, এটা সত্য কথা। এতে করে আমাদের বাজার, সেবা খাত উন্মুক্ত হয়ে যাবে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য। ব্যাপক প্রাইভেটাইজেশন ঘটবে, তাতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্যক্তিগত খাত। টিকফার (প্রস্তাবিত) ৫ ও ১৯ ধারা মতে উভয় দেশ (বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র) বাণিজ্যে বেশ নমনীয় নীতি গ্রহণ বাড়াবে এবং ব্যাপক বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করবে। ৮নং ধারায় ব্যাপক ব্যক্তিগত খাত প্রসারের কথা বলা হয়েছে। এ ধারায় একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগে কমিশন গঠন করার কথাও আছে। এদের কাজ হবে ব্যক্তিগত খাত কীভাবে আরও বিকশিত করা যায়, সে ব্যাপারে উভয় সরকারকে উপদেশ দেয়া। ৯নং ধারায় বলা আছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। কিন্তু উৎপাদন খাতে জড়াবে না। অর্থাৎ কোনো পণ্য উৎপাদন করবে না। এখানে সমস্যা হবে অনেক। এক. যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করবে (বিশেষ করে সেবা খাতে) এবং এসব কোম্পানিকে ট্যাক্স সুবিধা দিতে হবে। আইনে যদি কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, তাহলে বাংলাদেশকে সেই আইন সংশোধন করতে হবে। ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা মার খাবে। তারা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। দুই. চুক্তির ফলে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে নিরাপত্তা দিতে বাধ্য থাকবে। জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর ব্যবহার, টেলিকমিউনিকেশন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় এসব খাতে সরকারি বিনিয়োগ কমে যাবে। ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিল্প খাতে সরকারি বিনিয়োগ কমে গেলে, শিক্ষা খাত পণ্যে পরিণত হবে। বিনামূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। উচ্চশিক্ষা ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। এতে করে শিক্ষা ক্ষেত্রে এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হওয়ার আশংকা রয়েছে। যারা ধনী, তারা শিক্ষা গ্রহণ করবে, আর যারা গরিব তারা শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।
একই কথা প্রযোজ্য স্বাস্থ্য খাতের ক্ষেত্রেও। স্বাস্থ্য খাতে খরচ বেড়ে যাবে। এসব সেবামূলক খাত থেকে সাধারণ মানুষ যে ‘সেবা’ পেত, তা ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসবে। সেবার জন্য সাধারণ মানুষকে তখন বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানির দাম বেড়ে যাবে। সাধারণ গ্রাহককে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাস কিনতে হবে। সরকারি ভর্তুকির কোনো সুযোগ থাকবে না। তিন. সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকবে কৃষি ও আইটি সেক্টর। কৃষিতে যে সরকার ভর্তুকি দেয়, তা আর দিতে পারবে না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দোহা চুক্তিতে বলা হয়েছিল স্বল্পোন্নত দেশগুলো কৃষিতে ৫ ভাগের বেশি ভর্তুকি দিতে পারবে না। টিকফার ১৮নং ধারায় বলা হয়েছে, কৃষিতে ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে হবে। মজার ব্যাপার যুক্তরাষ্ট্র নিজে কৃষিতে ভর্তুকি দেয় ৯ ভাগ। এখন বাংলাদেশে কৃষি সেক্টরে ভর্তুকি কমানো হলে কৃষিতে মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। কৃষক উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। ফলে কৃষি উৎপাদন, বিশেষ করে চাল উৎপাদন হ্রাস পাবে। বাংলাদেশকে এসব চাল আমদানি করতে হয় না। কিন্তু উৎপাদন হ্রাস পেলে মার্কিন কৃষি পণ্যের এক বিশাল বাজার তৈরি হবে বাংলাদেশে। মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো, যারা গম ও চাল উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত, তাদের এক বিশাল বাজার তৈরি হবে বাংলাদেশে। চার. বলা হচ্ছে টিকফা হলে বাংলাদেশের রফতানি বাড়বে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে রফতানি বৃদ্ধি পাওয়ার আদৌ কোনো সম্ভাবনা নেই। কেননা অত্যন্ত উচ্চ কর দিয়ে (১৫ দশমিক ৩ ভাগ) বাংলাদেশ তার রফতানি বাজার সম্প্রসারিত করেছে। অথচ চীনের মতো বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের চেয়ে কম কর দেয়, মাত্র শতকরা ৩ ভাগ। অথচ চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো টিকফা নেই। পাঁচ. বাংলাদেশ বড় সমস্যায় পড়বে মেধাস্বত্ব আইন নিয়ে। টিকফা চুক্তি কার্যকর হলে এ মেধাস্বত্ব আইনের শক্ত প্রয়োগে হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের কৃষি সেক্টর, ওষুধ শিল্প ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা। কৃষক আর বীজ সংরক্ষণ করে রাখতে পারবে না। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বীজ কিনতে বাধ্য করা হবে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এক সময় জিম্মি করে ফেলবে আমাদের কৃষি সেক্টরকে। বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প উন্নয়নশীল দেশে নাম করলেও টিকফার পর এ শিল্প এক ধরনের ঝুঁকির মুখে থাকবে। কেননা ওষুধ কোম্পানিগুলো প্যাটোট কিনে কাঁচামাল আমদানি করে সস্তায় ওষুধ তৈরি করে। বিশ্বের ৬০টি দেশে এ ওষুধ রফতানি হয়। এখন এ টিকফার ফলে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর প্যাটোট ক্রয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যদিও ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য এ সুযোগটি রয়েছে। বাংলাদেশে ভবিষ্যতে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে মার্কিন কোম্পানির লাইসেন্স কিনতে হবে। এ লাইসেন্স দিয়ে ওষুধ তৈরি করতে হবে। ফলে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম বেড়ে যাবে। সাধারণ মানুষের পক্ষে এ ওষুধ ক্রয় করা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশের কম্পিউটার সফটওয়্যার শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। কেননা এখন স্বল্পমূল্যে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করে কম্পিউটার এ দেশেই সংযোজিত হয়। ফলে কম্পিউটারের দাম একটা ক্রয় সীমার মধ্যে আছে। কিন্তু টিকফার বাধ্যবাধকতার কারণে এ ‘ক্লোন কম্পিউটার’ আমদানি বা সংযোজন বন্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশকে তখন ব্র্যান্ড কম্পিউটার আমদানি করতে হবে, যার মূল্য গিয়ে দাঁড়াবে অনেক। সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে তা চলে যাবে। বাংলাদেশ যে ‘ডিজিটাল যুগের’ কথা বলছে, তা বাধাগ্রস্ত হতে পারে তখন।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে টিকফা করে বাংলাদেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি। বাংলাদেশে মার্কিন কোম্পানিগুলো এলে তাতে বাংলাদেশে ‘সেবার’ মান বাড়বে। সেবা সেক্টরে নিয়ম শৃংখলা প্রতিষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য খাতে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় তাতে সেবার মান বাড়বে, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু এ ‘সেবার’ জন্য অনেক অর্থ ব্যয় হবে। শিক্ষা খাতে মার্কিনি পুঁজি বিনিয়োগ হলে শিক্ষার মান উন্নত হবে। যারা সার্টিফিকেট বিক্রি করে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারব। ক্ষতি হবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এখানে সরকারের বিনিয়োগ কমবে। এ ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়িয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়ানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা সহজলভ্য হয়তো হবে না। কিন্তু মেধাবী ছাত্রদের জন্য তা সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে। তাদের বৃত্তির সংখ্যা বাড়বে। মেধার মূল্য হবে। এখন যেভাবে দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ হয়, তখন তা আর থাকবে না।
টিকফা স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র গত এক যুগ আগেই বাংলাদেশকে এ চুক্তি করার প্রস্তাব দিয়েছিল। এটা সত্য যে বাংলাদেশের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্র টিকফা করছে না, পৃথিবীর অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টিকফা রয়েছে। ভারত, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার মতো উঠতি অর্থনৈতিক শক্তির দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের চুক্তি রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষরের আগে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বাংলাদেশের অবস্থানকে কতটুকু শক্তিশালী করতে পেরেছে আমরা তা জানি না। তবে প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাংলাদেশ ‘নেগোসিয়েশনস’-এ কখনও সাফল্য দেখাতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে টিকফা নিয়ে আলোচনায় বিভিন্ন প্রশ্নে বাংলাদেশ তার স্বার্থ কতটুকু নিশ্চিত করতে পেরেছে, আমরা তা জানি না। আগামী দিনগুলোই এর প্রমাণ করবে। তবে একটা জিনিস নিশ্চিত করেই বলা যায় আর তা হচ্ছে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশ যদি এ চুক্তি স্বাক্ষর করে, তাতে করে সম্পর্ক বৃদ্ধির সম্ভাবনা ক্ষীণ। যুক্তরাষ্ট্র প্রতিটি ইস্যু আলাদাভাবে দেখে। এজন্য জিএসপি সুবিধা প্রাপ্তি কিংবা গার্মেন্ট শিল্পের পরিস্থিতির সঙ্গে টিকফাকে মেলানো যাবে না। এটা একটি ভিন্ন ইস্যু।
টিকফার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নিরাপত্তা, বিনিয়োগের গ্যারান্টি ও নিরাপত্তা, মেধাস্বত্ব আইনের প্রয়োগ, শ্রমমান বাড়ানোর প্রশ্ন। এ চুক্তিতে জিএসপি সুবিধার প্রশ্নটি কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্লাটা এতে ভারি। বাংলাদেশের প্রাপ্তি এতে কম। তবে বাস্তবতা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় প্রতিটি দেশের সঙ্গেই এ ধরনের চুক্তি করেছে। এখন বাংলাদেশের সঙ্গেও করল।
নিউইয়র্ক, ২৪ জুলাই, ২০১৩
ড. তারেক শামসুর রেহমান : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
দ্বিতীয় আরেকটি যে বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেলেও তাতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি বাড়বে না। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে তৈরি পোশাকে জিএসপি সুবিধা চেয়ে আসছিল। কিন্তু তৈরি পোশাকে আমাদের কোনো জিএসপি সুবিধা ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী পণ্যের বাজার হচ্ছে ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের। এর মাঝে মাত্র ০.৫ ভাগ পণ্য এ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেত। এর পরিমাণ মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ডলার কর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এখনও তার পণ্য নিয়ে টিকে আছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় যেসব বাংলাদেশী পণ্যে, তার মাঝে রয়েছে- তামাক, সিরামিক, ফার্নিচার, প্লাস্টিক, খেলনা ইত্যাদি। এর খুব কম পণ্যই বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করে। গার্মেন্ট বা তৈরি পোশাকে বাংলাদেশী রফতানিকারকরা শতকরা ১৫ ভাগ হারে শুল্ক পরিশোধ করে বাজার ধরে রেখেছে। অথচ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দোহা চুক্তি অনুযায়ী একটি স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে তার পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তা দিচ্ছে না। এ সুবিধা উন্নত রাষ্ট্রগুলো পায়। তৈরি পোশাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দোহা চুক্তি লংঘন করেছে। সুতরাং তৈরি পোশাকে আমরা যদি শুল্কমুক্ত সুবিধা না পাই, তাহলে এ জিএসপি সুবিধা রফতানির ক্ষেত্রে কোনো বড় অবদান রাখতে পারবে না। আজ যদি জিএসপি সুবিধার আশ্বাসে আমরা টিকফা স্বাক্ষর করি, তাতে আমাদের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। টিকফার সঙ্গে তাই জিএসপি সুবিধাকে মেলানো যাবে না। জিএসপি সুবিধা একটি ভিন্ন বিষয়।
এখন যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে টিকফা করে আমরা কতটুকু উপকৃত হব। টিকফা স্বাক্ষরিত হলে দেশে মার্কিনি বিনিয়োগ বাড়বে, এটা সত্য কথা। এতে করে আমাদের বাজার, সেবা খাত উন্মুক্ত হয়ে যাবে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য। ব্যাপক প্রাইভেটাইজেশন ঘটবে, তাতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্যক্তিগত খাত। টিকফার (প্রস্তাবিত) ৫ ও ১৯ ধারা মতে উভয় দেশ (বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র) বাণিজ্যে বেশ নমনীয় নীতি গ্রহণ বাড়াবে এবং ব্যাপক বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করবে। ৮নং ধারায় ব্যাপক ব্যক্তিগত খাত প্রসারের কথা বলা হয়েছে। এ ধারায় একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগে কমিশন গঠন করার কথাও আছে। এদের কাজ হবে ব্যক্তিগত খাত কীভাবে আরও বিকশিত করা যায়, সে ব্যাপারে উভয় সরকারকে উপদেশ দেয়া। ৯নং ধারায় বলা আছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। কিন্তু উৎপাদন খাতে জড়াবে না। অর্থাৎ কোনো পণ্য উৎপাদন করবে না। এখানে সমস্যা হবে অনেক। এক. যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করবে (বিশেষ করে সেবা খাতে) এবং এসব কোম্পানিকে ট্যাক্স সুবিধা দিতে হবে। আইনে যদি কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, তাহলে বাংলাদেশকে সেই আইন সংশোধন করতে হবে। ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা মার খাবে। তারা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। দুই. চুক্তির ফলে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে নিরাপত্তা দিতে বাধ্য থাকবে। জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দর ব্যবহার, টেলিকমিউনিকেশন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় এসব খাতে সরকারি বিনিয়োগ কমে যাবে। ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিল্প খাতে সরকারি বিনিয়োগ কমে গেলে, শিক্ষা খাত পণ্যে পরিণত হবে। বিনামূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। উচ্চশিক্ষা ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। এতে করে শিক্ষা ক্ষেত্রে এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হওয়ার আশংকা রয়েছে। যারা ধনী, তারা শিক্ষা গ্রহণ করবে, আর যারা গরিব তারা শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।
একই কথা প্রযোজ্য স্বাস্থ্য খাতের ক্ষেত্রেও। স্বাস্থ্য খাতে খরচ বেড়ে যাবে। এসব সেবামূলক খাত থেকে সাধারণ মানুষ যে ‘সেবা’ পেত, তা ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসবে। সেবার জন্য সাধারণ মানুষকে তখন বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানির দাম বেড়ে যাবে। সাধারণ গ্রাহককে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাস কিনতে হবে। সরকারি ভর্তুকির কোনো সুযোগ থাকবে না। তিন. সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকবে কৃষি ও আইটি সেক্টর। কৃষিতে যে সরকার ভর্তুকি দেয়, তা আর দিতে পারবে না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দোহা চুক্তিতে বলা হয়েছিল স্বল্পোন্নত দেশগুলো কৃষিতে ৫ ভাগের বেশি ভর্তুকি দিতে পারবে না। টিকফার ১৮নং ধারায় বলা হয়েছে, কৃষিতে ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে হবে। মজার ব্যাপার যুক্তরাষ্ট্র নিজে কৃষিতে ভর্তুকি দেয় ৯ ভাগ। এখন বাংলাদেশে কৃষি সেক্টরে ভর্তুকি কমানো হলে কৃষিতে মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। কৃষক উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। ফলে কৃষি উৎপাদন, বিশেষ করে চাল উৎপাদন হ্রাস পাবে। বাংলাদেশকে এসব চাল আমদানি করতে হয় না। কিন্তু উৎপাদন হ্রাস পেলে মার্কিন কৃষি পণ্যের এক বিশাল বাজার তৈরি হবে বাংলাদেশে। মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো, যারা গম ও চাল উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত, তাদের এক বিশাল বাজার তৈরি হবে বাংলাদেশে। চার. বলা হচ্ছে টিকফা হলে বাংলাদেশের রফতানি বাড়বে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে রফতানি বৃদ্ধি পাওয়ার আদৌ কোনো সম্ভাবনা নেই। কেননা অত্যন্ত উচ্চ কর দিয়ে (১৫ দশমিক ৩ ভাগ) বাংলাদেশ তার রফতানি বাজার সম্প্রসারিত করেছে। অথচ চীনের মতো বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের চেয়ে কম কর দেয়, মাত্র শতকরা ৩ ভাগ। অথচ চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো টিকফা নেই। পাঁচ. বাংলাদেশ বড় সমস্যায় পড়বে মেধাস্বত্ব আইন নিয়ে। টিকফা চুক্তি কার্যকর হলে এ মেধাস্বত্ব আইনের শক্ত প্রয়োগে হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের কৃষি সেক্টর, ওষুধ শিল্প ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা। কৃষক আর বীজ সংরক্ষণ করে রাখতে পারবে না। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বীজ কিনতে বাধ্য করা হবে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এক সময় জিম্মি করে ফেলবে আমাদের কৃষি সেক্টরকে। বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প উন্নয়নশীল দেশে নাম করলেও টিকফার পর এ শিল্প এক ধরনের ঝুঁকির মুখে থাকবে। কেননা ওষুধ কোম্পানিগুলো প্যাটোট কিনে কাঁচামাল আমদানি করে সস্তায় ওষুধ তৈরি করে। বিশ্বের ৬০টি দেশে এ ওষুধ রফতানি হয়। এখন এ টিকফার ফলে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর প্যাটোট ক্রয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যদিও ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য এ সুযোগটি রয়েছে। বাংলাদেশে ভবিষ্যতে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে মার্কিন কোম্পানির লাইসেন্স কিনতে হবে। এ লাইসেন্স দিয়ে ওষুধ তৈরি করতে হবে। ফলে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম বেড়ে যাবে। সাধারণ মানুষের পক্ষে এ ওষুধ ক্রয় করা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশের কম্পিউটার সফটওয়্যার শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। কেননা এখন স্বল্পমূল্যে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করে কম্পিউটার এ দেশেই সংযোজিত হয়। ফলে কম্পিউটারের দাম একটা ক্রয় সীমার মধ্যে আছে। কিন্তু টিকফার বাধ্যবাধকতার কারণে এ ‘ক্লোন কম্পিউটার’ আমদানি বা সংযোজন বন্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশকে তখন ব্র্যান্ড কম্পিউটার আমদানি করতে হবে, যার মূল্য গিয়ে দাঁড়াবে অনেক। সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে তা চলে যাবে। বাংলাদেশ যে ‘ডিজিটাল যুগের’ কথা বলছে, তা বাধাগ্রস্ত হতে পারে তখন।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে টিকফা করে বাংলাদেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাভের সম্ভাবনা অনেক বেশি। বাংলাদেশে মার্কিন কোম্পানিগুলো এলে তাতে বাংলাদেশে ‘সেবার’ মান বাড়বে। সেবা সেক্টরে নিয়ম শৃংখলা প্রতিষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য খাতে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় তাতে সেবার মান বাড়বে, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু এ ‘সেবার’ জন্য অনেক অর্থ ব্যয় হবে। শিক্ষা খাতে মার্কিনি পুঁজি বিনিয়োগ হলে শিক্ষার মান উন্নত হবে। যারা সার্টিফিকেট বিক্রি করে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারব। ক্ষতি হবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এখানে সরকারের বিনিয়োগ কমবে। এ ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়িয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়ানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা সহজলভ্য হয়তো হবে না। কিন্তু মেধাবী ছাত্রদের জন্য তা সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে। তাদের বৃত্তির সংখ্যা বাড়বে। মেধার মূল্য হবে। এখন যেভাবে দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ হয়, তখন তা আর থাকবে না।
টিকফা স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র গত এক যুগ আগেই বাংলাদেশকে এ চুক্তি করার প্রস্তাব দিয়েছিল। এটা সত্য যে বাংলাদেশের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্র টিকফা করছে না, পৃথিবীর অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টিকফা রয়েছে। ভারত, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার মতো উঠতি অর্থনৈতিক শক্তির দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের চুক্তি রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষরের আগে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বাংলাদেশের অবস্থানকে কতটুকু শক্তিশালী করতে পেরেছে আমরা তা জানি না। তবে প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাংলাদেশ ‘নেগোসিয়েশনস’-এ কখনও সাফল্য দেখাতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে টিকফা নিয়ে আলোচনায় বিভিন্ন প্রশ্নে বাংলাদেশ তার স্বার্থ কতটুকু নিশ্চিত করতে পেরেছে, আমরা তা জানি না। আগামী দিনগুলোই এর প্রমাণ করবে। তবে একটা জিনিস নিশ্চিত করেই বলা যায় আর তা হচ্ছে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশ যদি এ চুক্তি স্বাক্ষর করে, তাতে করে সম্পর্ক বৃদ্ধির সম্ভাবনা ক্ষীণ। যুক্তরাষ্ট্র প্রতিটি ইস্যু আলাদাভাবে দেখে। এজন্য জিএসপি সুবিধা প্রাপ্তি কিংবা গার্মেন্ট শিল্পের পরিস্থিতির সঙ্গে টিকফাকে মেলানো যাবে না। এটা একটি ভিন্ন ইস্যু।
টিকফার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নিরাপত্তা, বিনিয়োগের গ্যারান্টি ও নিরাপত্তা, মেধাস্বত্ব আইনের প্রয়োগ, শ্রমমান বাড়ানোর প্রশ্ন। এ চুক্তিতে জিএসপি সুবিধার প্রশ্নটি কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্লাটা এতে ভারি। বাংলাদেশের প্রাপ্তি এতে কম। তবে বাস্তবতা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় প্রতিটি দেশের সঙ্গেই এ ধরনের চুক্তি করেছে। এখন বাংলাদেশের সঙ্গেও করল।
নিউইয়র্ক, ২৪ জুলাই, ২০১৩
ড. তারেক শামসুর রেহমান : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
No comments