সিলেটে ডাক্তারের অবহেলায় দুই প্রসূতির মৃত্যু, উত্তেজনা
পরিবারের
মুখ আলো করে নতুন সন্তান জন্ম নেবে। এ কারণেই পরিবারের সবার ছিল সতর্কতা।
ডাক্তারের পরামর্শে হাসপাতালে না গিয়ে ক্লিনিকেই ভর্তি করালেন প্রসূতি
মায়েদের। কিন্তু সন্তান জন্ম দিলেন ঠিকই, ডাক্তারদের গাফিলতির কারণে চিরতরে
পরপাড়ে চলে গেলেন মা। সিলেটের মীর্জা জাঙ্গালের সেইফওয়ে হাসপাতালে এমন
ঘটনায় ক্ষুব্ধ রোগীর স্বজনরা। মৃত্যুবরণকারী প্রসূতি মায়েরা হচ্ছেন-
সিলেটের শাহপরাণ থানাধীন কল্লোগ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী আসমা বেগম
(২৩) ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের চোলাহাটি গ্রামের ব্যবসায়ী রুবেল
হোসেনের স্ত্রী ফয়জুন নাহার চৈতি (২১)। আসমা বেগম শুক্রবার ভোরে ও ফয়জুন
নাহার চৈতি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। ডিএমটি হাসপাতাল
কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সকাল ৯টার দিকে ফয়জুন নাহার চৈতিকে রাগীব-রাবেয়া
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত
ঘোষণা করেন। আসমা বেগম ও ফয়জুন নাহার চৈতি দু’জনেই বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে
৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে সুস্থ অবস্থায় দুটি সন্তানের জন্ম দেন। পার্কভিউ
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ডাক্তার মিনতি সিনহা তাদের সিজার
করেন। জন্ম নেয়া বাচ্চা দুটি সুস্থ আছে বলে জানা গেছে। শুক্রবার ভোরে
প্রায় একই সময়ে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অবস্থা খারাপ দেখে
রোগীদের স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার ডাক্তারের জন্য ধর্ণা
দিলেও সেখানে কোনো ডাক্তার ছিলেন না। হাসপাতালের দায়িত্বরত যারা ছিলেন তারা
‘ডাক্তার আসছেন, আসবেন’ বললেও কোনো ডাক্তার আসেনি। আসমার পরিবারের দাবি-
ভোরেই আসমার মৃত্যু হয়। এদিকে, এই মৃত্যুর সংবাদে ভীত হয়ে পড়েন চৈতির
পরিবারের লোকজন। তার অবস্থাও ধীরে ধীরে অবনতি হওয়ায় ডিএমটি হাসপাতাল
কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তারা তাকে নিয়ে যান রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে। সকাল ১০টার দিকে এই হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার চৈতিকে মৃত
ঘোষণা করেন। রাগীব রাবেয়া হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেন- মৃত অবস্থায়ই চৈতিকে
তাদের হাসপাতালে আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে ডাক্তার মিনতি সিনহা সাংবাদিকদের
জানিয়েছেন- আমি রাতে সিজারের পর দু’জনকেই সুস্থ অবস্থায় রেখে এসেছি। সকালে
হঠাৎ করে কি হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছি না। এদিকে ঘটনার পর পরই হাসপাতাল থেকে
সটকে পরেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এমনকি সেসময়ে কর্তব্যরত কোনো ডাক্তারেরও
বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
No comments