রানির মৃত্যু হলে নেতৃত্ব দেবেন কে?
যুক্তরাজ্যের
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর কমনওয়েলথ জোটের নেতৃত্ব কে দেবেন—তা
নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এ নিয়ে জোটের সাত সদস্যবিশিষ্ট উচ্চপর্যায়ের
নীতিনির্ধারণী কমিটি আজ মঙ্গলবার লন্ডনে গোপন বৈঠকে বসেছে বলে খবর প্রকাশ
করেছে বিবিসি। গোপন ওই বৈঠকের আলোচ্যসূচি তাদের হাতে এসেছে দাবি করে
বিবিসির খবরে বলা হয়, সূচিতে ‘বৃহত্তর পরিচালনাগত বিবেচনা’ (ওয়াইডার
গভারনেন্স কনসিডারেশন) শীর্ষক একটি এজেন্ডা রাখা হয়েছে। ভেতরের লোকজন
বলছেন, এটি রানির উত্তরাধিকার নির্ধারণ বিষয়ে আলোচনার সাংকেতিক রূপ (কোড)।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯৫৩ সাল থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে কমনওয়েলথ জোটের
প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আসন্ন এপ্রিলে ৯২ ছুঁতে যাওয়া রানির
মৃত্যুর পর ছেলে প্রিন্স চার্লস (প্রিন্স অব ওয়েলস) সিংহাসনে আসীন হবেন।
উত্তরাধিকার সূত্রে প্রিন্স চার্লস কমনওয়েলথ জোটের প্রধান হবেন; নাকি
গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে কাউকে প্রধান নির্বাচিত করা
হবে—সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। কমনওয়েলথ জোটের প্রধান নির্বাচনে কোনো
সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই। ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রধানই এর নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
কিন্তু এ জোটের গণতান্ত্রিক অবয়ব মজবুত করার আলোচনা আছে বিভিন্ন তরফে। যে
কারণে রানিকে নেতৃত্বে রেখে ভোটের মাধ্যমে একজনকে আনুষ্ঠানিক প্রধান
(সিরিমোনিয়াল লিডার) হিসেবে নির্বাচিত করার প্রস্তাবও আসে। যুক্তরাজ্যের
উপনিবেশ ছিল এমন দেশগুলোকে নিয়ে ১৯৩১ সঙ্গে গঠিত হয় কমনওয়েলথ জোট।
বর্তমান
রানির বাবা ষষ্ঠ জর্জ এর নেতা ছিলেন। ১৯৫৩ সালে বাবার মৃত্যুর পর রানি
দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিংহাসনে আরোহণ করার সূত্রে কমনওয়েলথ জোটেরও প্রধান হন।
সে সময় জোটের সদস্যরাষ্ট্র ছিল মাত্র আটটি। এর মধ্যে সাতটি দেশের
রাষ্ট্রপ্রধান ছিল ব্রিটিশ রাজ। বর্তমানে কমনওয়েলথ জোটের সদস্যসংখ্যা ৫৩টি।
এর মধ্যে ১৫টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এখনো ব্রিটিশ রাজ। বাংলাদেশও এই জোটের
সদস্য। লন্ডনে অবস্থিত সদর দপ্তর থেকেই পরিচালিত হয় এর কার্যক্রম। ইউরোপীয়
ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বিচ্ছেদের পর কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক
বাণিজ্য ও রাজনৈতিক সম্পর্ক নিবিড় করার কথা ভাবছে যুক্তরাজ্য। বিবিসির
খবরে বলা হয়েছে, এপ্রিলে লন্ডনে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রনেতাদের
সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ শেষবারের মতো যোগ দেবেন।
এই সম্মেলনেই রাষ্ট্রপ্রধানদের একান্ত বৈঠকে রানির উত্তরাধিকার বিষয়ে
নিজেদের আলোচনার কথা তুলে ধরবে উচ্চপর্যায়ের কমিটি। বিবিসির প্রতিবেদনে আরও
বলা হয়, রানির মৃত্যুর পর প্রিন্স চার্লসকে প্রধান করার জন্য জোটে শক্ত
অবস্থান রয়েছে। রানি নিজেও প্রিন্স চার্লসকে কমনওয়েলথের প্রধান করার পক্ষে
এবং বিভিন্ন দেশে এ বিষয়ে লবি করেছেন। প্রিন্স চার্লস নিজের ওয়েবসাইটের বড়
একটি অংশজুড়ে কমনওয়েলথ নিয়ে নিজের নানা কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেছেন।
বলেছেন, ৫৩টি সদস্য দেশের মধ্যে তিনি ইতিমধ্যে ৪১টি দেশ সফর করেছেন।
No comments