মালদ্বীপে ভারত হস্তক্ষেপ করলে বসে থাকবে না চীন
মালদ্বীপ
সঙ্কটে সামরিক হস্তক্ষেপে দিকে অগ্রসর হলে ভারতকে থামানোর জন্য যথাযথ
ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। গতকাল মঙ্গলবার চীনের মতাসীন
কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস বলেছে, মালদ্বীপ পরিস্থিতিতে
কিছু ভারতীয় নাগরিক সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের কথা চিন্তা করছে। গ্লোবাল
টাইমস বলছে, এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিয়মনীতির মৌলিক বিষয়গুলোর সাথে
সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; যা স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের
সার্বভৌমত্বসহ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তপে না করার নীতির প্রতিও শ্রদ্ধাশীল
নয়। ‘মালদ্বীপ পরিস্থিতির অবনতি হলে তার সমাধান আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়ায় করা
উচিত। একতরফা সামরিক হস্তক্ষেপ ইতোমধ্যে বিদ্যমান বৈশ্বিক ব্যবস্থাকে
বিপন্ন করে তুলেছে।’ চীনের রাষ্ট্রীয় এ দৈনিক বলেছে, ‘১৯৮৮ সালে শ্রীলঙ্কার
সশস্ত্র বাহিনী মালদ্বীপের সরকারবিরোধী একটি গোষ্ঠীকে সহায়তা করেছিল। ওই
সময় সামরিক দাঙ্গায় হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যর্থ হয়
ভারত। তখন থেকেই মালদ্বীপে প্রভাব বিস্তার করছে নয়াদিল্লি।’ ‘কিন্তু ২০১৩
সালে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন দায়িত্ব নেয়ার পর দেশটি মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, সৌদি আরব ও পাকিস্তানের সাথে ইতিবাচকভাবে সম্পর্ক এগিয়ে
নিয়েছে; ধীরে ধীরে আরো স্বাধীন ও সুষম কূটনীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশটি। এ
বিষয়টি নিয়ে ভারত খুশি নয়।’ ‘জাতিসঙ্ঘের অনুমতি ছাড়া মালদ্বীপে কোনো দেশের
সামরিক বাহিনীর হস্তেেপর উপযুক্ত কারণ নেই। মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ
ব্যাপারে চীন হস্তপে করবে না। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, নয়াদিল্লি
নীতি-নৈতিকতার লঙ্ঘন করলে বেইজিং অলসভাবে বসে থাকবে।’ গ্লোবাল টাইমস বলেছে,
‘যদি ভারত একতরফাভাবে মালদ্বীপে সেনা পাঠায়, তাহলে নয়াদিল্লিকে থামানোর
জন্য ব্যবস্থা নেবে চীন।
একপাকি সেনা হস্তেেপ চীন যে বিরোধিতা করে তা উপো
করা ঠিক হবে না ভারতের।’ ভারত মহাসাগরে অবস্থিত নৈসর্গিক দ্বীপরাষ্ট্র
মালদ্বীপে সঙ্কটের শুরু হয় জানুয়ারির শেষের দিকে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট
মোহাম্মদ নাশিদসহ ৯ রাজবন্দীকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেয়
মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট। একই সাথে ইয়ামিনের দলত্যাগী ১২ এমপিকে স্বপদে
পুনর্বহালের নির্দেশ দেয় শীর্ষ এ আদালত। আদালতের ওই রায়ের ফলে, ৮৫
আসনবিশিষ্ট মালদ্বীপের পার্লামেন্টে বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায়
ইমপিচমেন্টের আশঙ্কায় পড়েন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। সুপ্রিম কোর্টের
নির্দেশ মানা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট-প্রেসিডেন্টের
মুখোমুখি অবস্থানের কারণে ব্যাপক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সুপ্রিম
কোর্টের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট
এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ করছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা
জারি করেন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। একই সাথে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান
বিচারপতি আবদুল্লাহ সাইদ, সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গাইয়ুম ও অন্য এক
বিচারককে গ্রেফতার করা হয়। পরে চাপের মুখে আগের নির্দেশ প্রত্যাহার করে
নেন সুপ্রিম কোর্টের বাকি তিন বিচারক।
No comments