মুক্তি পাচ্ছেন সজল ওসিকে শোকজ
রাজশাহীতে
‘বড় ভাইয়ের বদলে’ গ্রেপ্তার হওয়া ডাব বিক্রেতা সজল মিয়া (৩৪)কে দায় থেকে
অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামি না হয়েও কেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাওয়া আসামি হিসেবে সজলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তার জবাব দিতে রাজশাহী
মহানগর পুলিশের শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ
পারভেজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয়া হয়েছে। গতকাল বিকাল ৩টায়
রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনসুর আলম এ
আদেশ দেন। আদেশ অনুযায়ী, ওসি মাসুদ পারভেজকে ৭ দিনের মধ্যে আদালতে স্বশরীরে
হাজির হয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ৩০শে এপ্রিল সজলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সজলের বাড়ি নগরীর ছোটবনগ্রাম পশ্চিমপাড়া মহল্লায়। তিনি তোফাজ উদ্দিনের ছেলে। সজলের বড় ভাইয়ের নাম সেলিম ওরফে ফজল। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় ২০০৯ সালে ফজলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
রায় ঘোষণার আগে থেকেই তিনি পলাতক। গত ৩০শে এপ্রিল শাহমখদুম থানা পুলিশ সজলকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ফজল হিসেবে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সজলকে যখন আদালতে উপস্থাপন করা হয় তখন তার নাম ফজল বলেই পুলিশের গ্রেপ্তারি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। দুইজন সাক্ষী এ ব্যাপারে এফিডেফিট করে দেয়ায় তাকে সেদিন কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু গত ২৬শে মে সজল আসামি নন দাবি করে আইনজীবীর মাধ্যমে নিজের মুক্তির জন্য আবেদন করেন। এরপর মঙ্গলবার শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। এ দিন আদালত না বসায় গতকাল আবারও শুনানি হয়। প্রায় দেড় মাস কারাভোগের পর গতকাল তিনি অব্যাহতি পেলেন। আদালতের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০১ সালে আসামি ফজলের বয়স ছিল ২৭ বছর। বর্তমানে তার বয়স হবে ৪৫ বছর। কিন্তু সজলের জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স ৩৫ বছর।
এছাড়া আসামি ফজল মামলার রায়ের আগে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তখন তার শারিরীক গঠন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে সংরক্ষণ করা হয়। এখন আবার পর্যাবেক্ষণ করে দেখা যায়, গ্রেপ্তার সজলের সঙ্গে সে বর্ণনার উল্লেখযোগ্য তারতম্য রয়েছে। পুলিশ ভুল করে তাকে ফজল ভেবে গ্রেপ্তার করেছে। এদিন সজলের ছয় ভাই-বোন আদালতে এফিডেফিট করে জানান যে, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফজল দীর্ঘ দিন ধরেই নিখোঁজ রয়েছেন। তারা ফজলের কোনো খোঁজ জানেন না। তিনি বেঁচে আছেন কি না তারা সেটিও জানেন না। আর ফজল হিসেবে যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনি আসলে সবার ছোট ভাই সজল। এসব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই সজলকে দায় হতে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। তবে আদালতের আদেশের পর তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আদালত থেকে আদেশের অনুলিপি সেখানে পাঠানো হবে। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ যাচাই করে দেখবে তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কি না। তা না থাকলে সজলকে মুক্তি দেয়া হবে।
গতকাল আদালত থেকে সজল হাসিমুখেই কারাগারে গেছেন। তবে পুলিশ তার সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের কথা বলতে দেয় নি। অবশ্য আগের দিন শুনানির জন্য আদালতে আনা হলে হাজতে ঢোকানোর সময় সজল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ওই দিন তিনি বলেন, ‘কোনো দোষ করিনি। আমি আসামি না। তারপরেও আমি কয়েদি!’ সজল বলেন, ‘পুলিশ আমাকে বিনাদোষে জেলে পাঠিয়েছে। জেলে কয়েদি হিসেবে কাঠমিস্ত্রিও কাজ করতে হয়। বিনাদোষে এসব সহ্য করতে হচ্ছে।’
সজলের আইনজীবী মোহন কুমার সাহা বলেন, অপরাধী না হয়েও সজল কয়েদি হিসেবে সাজা ভোগ করেছেন। তার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। ওসির শোকজের জবাব পাওয়ার পর আদালত এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত দেবেন সেটির জন্য আমরা অপেক্ষা করব। তারপর প্রয়োজনে মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা ভুক্তভোগী সজলের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি করে আদালতে আবেদন করব।
বিনাদোষে গ্রেপ্তার করায় শাহমখদুম থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজের শাস্তি দাবি করেছেন সজলের ভাই মো. বাবু। তিনি বলেন. সজলকে গ্রেপ্তারের পর আমরা অনেক বুঝিয়েছি। ওসি কোনো কথা শোনেননি। ছেড়ে দেয়ার আশ্বাসে সন্ধ্যা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছিলেন থানায়। তারপর সকালে আসতে বলেন। আমরা আবার ভোর ৬টায় থানায় যাই। দুপুর পর্যন্ত বসিয়ে রেখে সজলকে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। দেড় মাস ধরে আমরা হয়রানি হলাম। তাই ওসির শাস্তি চাই।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোজাফফর হোসেন বলেন, নির্দোষ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর জন্য ওসির শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু এখানে দুজন সাক্ষী ওসিকে এফিডেফিট করে দিয়ে বলেছিলেন, এটাই আসামি। তাই ওসির জবাবের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তারপর আদালতই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।
এ ব্যাপারে শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘স্যারের কক্ষে আছেন, পরে কথা বলা হবে’ বলে কেটে দেন।
এর আগে গত ৩০শে এপ্রিল সজলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সজলের বাড়ি নগরীর ছোটবনগ্রাম পশ্চিমপাড়া মহল্লায়। তিনি তোফাজ উদ্দিনের ছেলে। সজলের বড় ভাইয়ের নাম সেলিম ওরফে ফজল। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় ২০০৯ সালে ফজলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
রায় ঘোষণার আগে থেকেই তিনি পলাতক। গত ৩০শে এপ্রিল শাহমখদুম থানা পুলিশ সজলকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ফজল হিসেবে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সজলকে যখন আদালতে উপস্থাপন করা হয় তখন তার নাম ফজল বলেই পুলিশের গ্রেপ্তারি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। দুইজন সাক্ষী এ ব্যাপারে এফিডেফিট করে দেয়ায় তাকে সেদিন কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু গত ২৬শে মে সজল আসামি নন দাবি করে আইনজীবীর মাধ্যমে নিজের মুক্তির জন্য আবেদন করেন। এরপর মঙ্গলবার শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। এ দিন আদালত না বসায় গতকাল আবারও শুনানি হয়। প্রায় দেড় মাস কারাভোগের পর গতকাল তিনি অব্যাহতি পেলেন। আদালতের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০১ সালে আসামি ফজলের বয়স ছিল ২৭ বছর। বর্তমানে তার বয়স হবে ৪৫ বছর। কিন্তু সজলের জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স ৩৫ বছর।
এছাড়া আসামি ফজল মামলার রায়ের আগে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তখন তার শারিরীক গঠন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে সংরক্ষণ করা হয়। এখন আবার পর্যাবেক্ষণ করে দেখা যায়, গ্রেপ্তার সজলের সঙ্গে সে বর্ণনার উল্লেখযোগ্য তারতম্য রয়েছে। পুলিশ ভুল করে তাকে ফজল ভেবে গ্রেপ্তার করেছে। এদিন সজলের ছয় ভাই-বোন আদালতে এফিডেফিট করে জানান যে, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফজল দীর্ঘ দিন ধরেই নিখোঁজ রয়েছেন। তারা ফজলের কোনো খোঁজ জানেন না। তিনি বেঁচে আছেন কি না তারা সেটিও জানেন না। আর ফজল হিসেবে যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনি আসলে সবার ছোট ভাই সজল। এসব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই সজলকে দায় হতে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। তবে আদালতের আদেশের পর তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আদালত থেকে আদেশের অনুলিপি সেখানে পাঠানো হবে। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ যাচাই করে দেখবে তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কি না। তা না থাকলে সজলকে মুক্তি দেয়া হবে।
গতকাল আদালত থেকে সজল হাসিমুখেই কারাগারে গেছেন। তবে পুলিশ তার সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের কথা বলতে দেয় নি। অবশ্য আগের দিন শুনানির জন্য আদালতে আনা হলে হাজতে ঢোকানোর সময় সজল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ওই দিন তিনি বলেন, ‘কোনো দোষ করিনি। আমি আসামি না। তারপরেও আমি কয়েদি!’ সজল বলেন, ‘পুলিশ আমাকে বিনাদোষে জেলে পাঠিয়েছে। জেলে কয়েদি হিসেবে কাঠমিস্ত্রিও কাজ করতে হয়। বিনাদোষে এসব সহ্য করতে হচ্ছে।’
সজলের আইনজীবী মোহন কুমার সাহা বলেন, অপরাধী না হয়েও সজল কয়েদি হিসেবে সাজা ভোগ করেছেন। তার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। ওসির শোকজের জবাব পাওয়ার পর আদালত এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত দেবেন সেটির জন্য আমরা অপেক্ষা করব। তারপর প্রয়োজনে মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা ভুক্তভোগী সজলের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি করে আদালতে আবেদন করব।
বিনাদোষে গ্রেপ্তার করায় শাহমখদুম থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজের শাস্তি দাবি করেছেন সজলের ভাই মো. বাবু। তিনি বলেন. সজলকে গ্রেপ্তারের পর আমরা অনেক বুঝিয়েছি। ওসি কোনো কথা শোনেননি। ছেড়ে দেয়ার আশ্বাসে সন্ধ্যা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছিলেন থানায়। তারপর সকালে আসতে বলেন। আমরা আবার ভোর ৬টায় থানায় যাই। দুপুর পর্যন্ত বসিয়ে রেখে সজলকে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। দেড় মাস ধরে আমরা হয়রানি হলাম। তাই ওসির শাস্তি চাই।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোজাফফর হোসেন বলেন, নির্দোষ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর জন্য ওসির শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু এখানে দুজন সাক্ষী ওসিকে এফিডেফিট করে দিয়ে বলেছিলেন, এটাই আসামি। তাই ওসির জবাবের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তারপর আদালতই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।
এ ব্যাপারে শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘স্যারের কক্ষে আছেন, পরে কথা বলা হবে’ বলে কেটে দেন।
No comments