সবার জন্য উন্মুক্ত এক মসজিদ
বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর মসজিদগুলোর বেশির ভাগই দর্শনার্থীদের জন্য সময়
নির্দিষ্ট করা থাকে। আর অনেক অমুসলিম দর্শনার্থীই সেসব মসজিদ দেখতে গিয়ে
নানা অস্বস্তিতে পড়েন। কিন্তু আবুধাবির ‘শেখ জায়েদ মসজিদ’ সব মানুষের জন্য
উন্মুক্ত। ২০০৭ সালে দ্বার খোলা এই মসজিদে যেতে পারেন যেকোনো
ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের সব মানুষই। বিবিসি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এই মসজিদের
অনন্য স্থাপত্যশৈলী এবং সেখানে সব ধর্মের, সব মানুষের মিলনমেলার বিশিষ্ট
সংস্কৃতির কথা জানিয়েছে।
>>মসজিদ প্রাঙ্গণে শেখ জায়েদের সমাধিসৌধ, আবুধাবি। ছবি: বিবিসি
চকচকে শ্বেত-মর্মরে মোড়ানো রূপকথার মতো সুন্দর এই স্থাপত্যের স্থপতি এবং স্থাপত্য উপকরণের বৈচিত্র্যের মধ্যেও যেন এই মসজিদের সবাইকে ধারণ করার বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতের স্থপতিদের মিলিত প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়েছে এ মসজিদ। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে তুরস্কের টাইলস, নিউজিল্যান্ডের উল ও জার্মানির স্ফটিক।
শেখ জায়েদ মসজিদের সবার জন্য ‘দ্বার খোলা রাখার নীতি’ মনে করিয়ে দেয় ইসলামের স্বর্ণযুগের কথা, যখন মসজিদগুলোই ছিল মানুষের মিলনমেলার কেন্দ্র। প্রতিবছর ১০ লাখেরও বেশি দর্শনার্থী আসেন এই মসজিদ দেখতে। মসজিদের ট্যুর-গাইড লায়লা আহমেদ জানান, এখানে সবাইকে স্বাগত জানানো হয়, তিনি ইহুদি, খ্রিষ্টান বা যে কেউ হন না কেন। তিনি বলেন, এর এটাই বিশেষত্ব। শেখ জায়েদের ভাবনায় কেবল মুসলিমদের জন্য একটা মসজিদ ছিল না, বরং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটা পাটাতন গড়ে তোলার চিন্তা ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান রূপকার ও দীর্ঘ সময় ধরে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের নামেই মসজিদটির নাম রাখা হয়েছে শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মস্ক।
>>শেখ জায়েদ মসজিদের কেন্দ্রীয় চত্বর। ছবি: বিবিসি
শেখ জায়েদের সমাধিসৌধ
আরবের বেদুইন গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাফল্যের মধ্য দিয়ে চল্লিশের দশকে পাদপ্রদীপে আসেন শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান। ১৯৬৬ সালে আবুধাবির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হন তিনি। ১৯৭১ সালে তাঁর উদ্যোগে দুবাই আমিরাতের সঙ্গে আবুধাবির ফেডারেশন গঠনের মধ্য দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত গঠনের পথ সুগম হয়। প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনিই সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্ব দেন। আবুধাবির বিপুল তেলের রাজস্ব কাজে লাগিয়ে দেশটির আধুনিকায়ন এবং সেখানে বিশ্বমানের সব স্থাপত্য নির্মিত হয় তাঁর আমলেই। এই গ্র্যান্ড মস্ক বা বড় মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার তিন বছর আগে ২০০৪ সালে শেখ জায়েদ মারা যান। এই মসজিদ প্রাঙ্গণের উত্তর দিকে সমাধিসৌধ বানিয়ে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
মসজিদের কেন্দ্রীয় চত্বর
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরতে মুসলিম সভ্যতা বিকাশের বিভিন্ন পর্বে বিভিন্ন দেশে বিকশিত স্থাপত্যশৈলীর সমাহারে এই মসজিদের নকশা করা হয়েছে। বিশাল এই উঠোন এবং জলাধারকে ঘিরে রেখেছে মনোহর সব থাম আর খিলান। এই চত্বর এতই বড় যে এখানে একত্রে ৩০ হাজার মানুষ সমবেত হতে পারবেন। পাকিস্তানের বাদশাহি মসজিদ এবং মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসান মসজিদের শৈলী দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে এই কেন্দ্রীয় চত্বরের নকশা। চত্বরের চার কোনায় রয়েছে ১০৭ মিটার উচ্চতার চারটি মিনার। মিনারগুলোর নিচের ভাগ মিসরীয় মামলুক ধারার চৌকো আকৃতির, মধ্যভাগ উত্তর আফ্রিকার ফাতিমি আমলের ষড়ভুজ আকৃতির এবং ওপরের ভাগ তুরস্কের উসমানীয় আমলের গোলাকৃতির।
>>শেখ জায়েদ মসজিদের প্রধান হলঘরের ঝাড়বাতি। ছবি: বিবিসি
নান্দনিক খিলানের পথ
ইসলামের মোগল যুগের সৌন্দর্যবোধ, আবেগ এবং সৌকর্যকে অনুসরণ করে লাহোরের বাদশাহি মসজিদের অনুকরণে নকশা করা হয়েছে এখানকার মনোহর গম্বুজগুলোর। শেখ জায়েদ মসজিদে সাতটি ভিন্ন ভিন্ন আকারের মোট ৮২টি গম্বুজ আছে আর খোদাই করা কারুকার্যে খচিত খিলান দেওয়া পথগুলোয় চোখে পড়বে উত্তর আফ্রিকার মুসলিম বা মুরিশ স্থাপত্যশৈলীর স্পষ্ট প্রভাব। প্রতিদিন অন্তত চারবার শেখ জায়েদ মসজিদের ট্যুর গাইডরা এই অনন্য স্থাপত্যের নানা বৈশিষ্ট্য বুঝিয়ে দেন এবং ঘুরে ঘুরে দেখান দর্শনার্থীদের।
প্রধান হলঘর ও ঝাড়বাতি
মসজিদের প্রধান হলঘরে প্রবেশের আগেই দর্শনার্থীদের জুতা খুলে নিতে হবে। পুরুষদের প্যান্ট বা পাজামা গোড়ালির ওপরে গুটিয়ে নিতে হবে। নারীদের মাথা এবং হাত-পা আবৃত করে নিতে হবে, আর এ জন্য মসজিদ দেখতে আসা নারীদের ওড়না ধার দেওয়া হয় মসজিদের ফটকের কাছে গাড়ি রাখার স্থান থেকেই। প্রধান হলঘরের ওপরের গম্বুজটি ভেতর থেকে নানান কারুকার্যে খচিত। আর চারদিক ঘিরে আছে ক্যালিগ্রাফি, সোনার হরফে লেখা কোরআনের বাণী। সাতটি বিশাল আকারের ঝাড়বাতি আছে শেখ জায়েদ মসজিদে। জার্মানির বিখ্যাত স্ফটিক নির্মাতা ‘ফাউস্টিশ’ এই অনিন্দ্যসুন্দর ঝাড়বাতিগুলো বানিয়েছে। একেকটা ঝাড়বাতির ওজন প্রায় আট থেকে ১২ মেট্রিক টন।
>>শেখ জায়েদ মসজিদের প্রধান নামাজঘর। ছবি: বিবিসি
প্রধান নামাজঘর
মসজিদের হলঘর পেরোলেই আপনি এসে হাজির হবেন প্রধান নামাজঘরে। এর দুই পাশে আছে একটু ছোট আরও দুটি নামাজঘর। একটি শুধু নারীদের জন্য। এই নামাজঘরগুলোতে একত্রে ১০ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারবেন। অসাধারণ কারুকার্যখচিত সব থাম আর ছাদ পর্যন্ত অনেকটা উঁচুতে খিলান-গম্বুজে সাজানো বিশালাকার এই নামাজঘরে প্রবেশ করলে যে কেউ বিস্মিত হয়ে যাবেন এর অনন্য সৌন্দর্যে। মোট ৯৬টি থাম আছে এই নামাজঘরে। মেসিডোনিয়ার মর্মর পাথরে মোড়ানো থামগুলো নানা মণি-মুক্তো দিয়ে অলংকৃত।
সব গালিচার গালিচা
বিখ্যাত ইরানি গালিচা নকশাকারদের বানানো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হাতে-বোনা গালিচাটি আছে এই শেখ জায়েদ মসজিদের প্রধান নামাজঘরে। তিন পুরুষ ধরে গালিচার নকশাকার হিসেবে কাজ করছেন আলি খালিকির পরিবার। আর তাঁর নেতৃত্বে এক হাজার ২০০ বুননশিল্পী ১৬ মাস ধরে এই গালিচা বুনেছেন। পাঁচ হাজার ৭০০ বর্গমিটার আয়তনের এই গালিচা বুনতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রধানত নিউজিল্যান্ডের বিখ্যাত উল।
>>শেখ জায়েদ মসজিদের জলছবির চৌবাচ্চা। ছবি: বিবিসি
জলছবির চৌবাচ্চা
শেখ জায়েদ মসজিদের প্রায় চারদিক ঘিরে রেখেছে স্বচ্ছ টলটলে জলের চৌবাচ্চা। রাতের বেলায় বিশেষভাবে আলোকিত এই মসজিদ চত্বরে চলে আলোর খেলা। দিন আর রাতে জলের চৌবাচ্চায় ভবনের প্রতিবিম্ব প্রতিফলিত হয়ে তৈরি করে দারুণ এক জলছবির খেলা। বিষয়টা এমনই যে, বছরজুড়ে মসজিদ দেখতে আসা দর্শনার্থীদের তোলা এসব চৌবাচ্চা আর মসজিদ চত্বরের ছবি নিয়ে আয়োজন করা হয় আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার। সেরা ছবিগুলো প্রদর্শিত হয় এমিরেটস প্যালেস হোটেলের প্রধান লবির গ্যালারিতে এবং সেগুলো ছাপাও হয় ‘স্পেসেস অব লাইট’ নামে।
চকচকে শ্বেত-মর্মরে মোড়ানো রূপকথার মতো সুন্দর এই স্থাপত্যের স্থপতি এবং স্থাপত্য উপকরণের বৈচিত্র্যের মধ্যেও যেন এই মসজিদের সবাইকে ধারণ করার বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতের স্থপতিদের মিলিত প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়েছে এ মসজিদ। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে তুরস্কের টাইলস, নিউজিল্যান্ডের উল ও জার্মানির স্ফটিক।
শেখ জায়েদ মসজিদের সবার জন্য ‘দ্বার খোলা রাখার নীতি’ মনে করিয়ে দেয় ইসলামের স্বর্ণযুগের কথা, যখন মসজিদগুলোই ছিল মানুষের মিলনমেলার কেন্দ্র। প্রতিবছর ১০ লাখেরও বেশি দর্শনার্থী আসেন এই মসজিদ দেখতে। মসজিদের ট্যুর-গাইড লায়লা আহমেদ জানান, এখানে সবাইকে স্বাগত জানানো হয়, তিনি ইহুদি, খ্রিষ্টান বা যে কেউ হন না কেন। তিনি বলেন, এর এটাই বিশেষত্ব। শেখ জায়েদের ভাবনায় কেবল মুসলিমদের জন্য একটা মসজিদ ছিল না, বরং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটা পাটাতন গড়ে তোলার চিন্তা ছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান রূপকার ও দীর্ঘ সময় ধরে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের নামেই মসজিদটির নাম রাখা হয়েছে শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মস্ক।
>>শেখ জায়েদ মসজিদের কেন্দ্রীয় চত্বর। ছবি: বিবিসি
শেখ জায়েদের সমাধিসৌধ
আরবের বেদুইন গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাফল্যের মধ্য দিয়ে চল্লিশের দশকে পাদপ্রদীপে আসেন শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান। ১৯৬৬ সালে আবুধাবির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হন তিনি। ১৯৭১ সালে তাঁর উদ্যোগে দুবাই আমিরাতের সঙ্গে আবুধাবির ফেডারেশন গঠনের মধ্য দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত গঠনের পথ সুগম হয়। প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনিই সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্ব দেন। আবুধাবির বিপুল তেলের রাজস্ব কাজে লাগিয়ে দেশটির আধুনিকায়ন এবং সেখানে বিশ্বমানের সব স্থাপত্য নির্মিত হয় তাঁর আমলেই। এই গ্র্যান্ড মস্ক বা বড় মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার তিন বছর আগে ২০০৪ সালে শেখ জায়েদ মারা যান। এই মসজিদ প্রাঙ্গণের উত্তর দিকে সমাধিসৌধ বানিয়ে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
মসজিদের কেন্দ্রীয় চত্বর
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরতে মুসলিম সভ্যতা বিকাশের বিভিন্ন পর্বে বিভিন্ন দেশে বিকশিত স্থাপত্যশৈলীর সমাহারে এই মসজিদের নকশা করা হয়েছে। বিশাল এই উঠোন এবং জলাধারকে ঘিরে রেখেছে মনোহর সব থাম আর খিলান। এই চত্বর এতই বড় যে এখানে একত্রে ৩০ হাজার মানুষ সমবেত হতে পারবেন। পাকিস্তানের বাদশাহি মসজিদ এবং মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসান মসজিদের শৈলী দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে এই কেন্দ্রীয় চত্বরের নকশা। চত্বরের চার কোনায় রয়েছে ১০৭ মিটার উচ্চতার চারটি মিনার। মিনারগুলোর নিচের ভাগ মিসরীয় মামলুক ধারার চৌকো আকৃতির, মধ্যভাগ উত্তর আফ্রিকার ফাতিমি আমলের ষড়ভুজ আকৃতির এবং ওপরের ভাগ তুরস্কের উসমানীয় আমলের গোলাকৃতির।
>>শেখ জায়েদ মসজিদের প্রধান হলঘরের ঝাড়বাতি। ছবি: বিবিসি
নান্দনিক খিলানের পথ
ইসলামের মোগল যুগের সৌন্দর্যবোধ, আবেগ এবং সৌকর্যকে অনুসরণ করে লাহোরের বাদশাহি মসজিদের অনুকরণে নকশা করা হয়েছে এখানকার মনোহর গম্বুজগুলোর। শেখ জায়েদ মসজিদে সাতটি ভিন্ন ভিন্ন আকারের মোট ৮২টি গম্বুজ আছে আর খোদাই করা কারুকার্যে খচিত খিলান দেওয়া পথগুলোয় চোখে পড়বে উত্তর আফ্রিকার মুসলিম বা মুরিশ স্থাপত্যশৈলীর স্পষ্ট প্রভাব। প্রতিদিন অন্তত চারবার শেখ জায়েদ মসজিদের ট্যুর গাইডরা এই অনন্য স্থাপত্যের নানা বৈশিষ্ট্য বুঝিয়ে দেন এবং ঘুরে ঘুরে দেখান দর্শনার্থীদের।
প্রধান হলঘর ও ঝাড়বাতি
মসজিদের প্রধান হলঘরে প্রবেশের আগেই দর্শনার্থীদের জুতা খুলে নিতে হবে। পুরুষদের প্যান্ট বা পাজামা গোড়ালির ওপরে গুটিয়ে নিতে হবে। নারীদের মাথা এবং হাত-পা আবৃত করে নিতে হবে, আর এ জন্য মসজিদ দেখতে আসা নারীদের ওড়না ধার দেওয়া হয় মসজিদের ফটকের কাছে গাড়ি রাখার স্থান থেকেই। প্রধান হলঘরের ওপরের গম্বুজটি ভেতর থেকে নানান কারুকার্যে খচিত। আর চারদিক ঘিরে আছে ক্যালিগ্রাফি, সোনার হরফে লেখা কোরআনের বাণী। সাতটি বিশাল আকারের ঝাড়বাতি আছে শেখ জায়েদ মসজিদে। জার্মানির বিখ্যাত স্ফটিক নির্মাতা ‘ফাউস্টিশ’ এই অনিন্দ্যসুন্দর ঝাড়বাতিগুলো বানিয়েছে। একেকটা ঝাড়বাতির ওজন প্রায় আট থেকে ১২ মেট্রিক টন।
>>শেখ জায়েদ মসজিদের প্রধান নামাজঘর। ছবি: বিবিসি
প্রধান নামাজঘর
মসজিদের হলঘর পেরোলেই আপনি এসে হাজির হবেন প্রধান নামাজঘরে। এর দুই পাশে আছে একটু ছোট আরও দুটি নামাজঘর। একটি শুধু নারীদের জন্য। এই নামাজঘরগুলোতে একত্রে ১০ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারবেন। অসাধারণ কারুকার্যখচিত সব থাম আর ছাদ পর্যন্ত অনেকটা উঁচুতে খিলান-গম্বুজে সাজানো বিশালাকার এই নামাজঘরে প্রবেশ করলে যে কেউ বিস্মিত হয়ে যাবেন এর অনন্য সৌন্দর্যে। মোট ৯৬টি থাম আছে এই নামাজঘরে। মেসিডোনিয়ার মর্মর পাথরে মোড়ানো থামগুলো নানা মণি-মুক্তো দিয়ে অলংকৃত।
সব গালিচার গালিচা
বিখ্যাত ইরানি গালিচা নকশাকারদের বানানো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হাতে-বোনা গালিচাটি আছে এই শেখ জায়েদ মসজিদের প্রধান নামাজঘরে। তিন পুরুষ ধরে গালিচার নকশাকার হিসেবে কাজ করছেন আলি খালিকির পরিবার। আর তাঁর নেতৃত্বে এক হাজার ২০০ বুননশিল্পী ১৬ মাস ধরে এই গালিচা বুনেছেন। পাঁচ হাজার ৭০০ বর্গমিটার আয়তনের এই গালিচা বুনতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রধানত নিউজিল্যান্ডের বিখ্যাত উল।
>>শেখ জায়েদ মসজিদের জলছবির চৌবাচ্চা। ছবি: বিবিসি
জলছবির চৌবাচ্চা
শেখ জায়েদ মসজিদের প্রায় চারদিক ঘিরে রেখেছে স্বচ্ছ টলটলে জলের চৌবাচ্চা। রাতের বেলায় বিশেষভাবে আলোকিত এই মসজিদ চত্বরে চলে আলোর খেলা। দিন আর রাতে জলের চৌবাচ্চায় ভবনের প্রতিবিম্ব প্রতিফলিত হয়ে তৈরি করে দারুণ এক জলছবির খেলা। বিষয়টা এমনই যে, বছরজুড়ে মসজিদ দেখতে আসা দর্শনার্থীদের তোলা এসব চৌবাচ্চা আর মসজিদ চত্বরের ছবি নিয়ে আয়োজন করা হয় আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার। সেরা ছবিগুলো প্রদর্শিত হয় এমিরেটস প্যালেস হোটেলের প্রধান লবির গ্যালারিতে এবং সেগুলো ছাপাও হয় ‘স্পেসেস অব লাইট’ নামে।
No comments