জুলাই হত্যার বিচার করতে না পারলে আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার নাই- আসিফ নজরুল

সুবিচার নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ। জুলাই-আগস্টের হত্যার বিচার করতে না পারলে আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এ সময় তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার চাইতে বর্তমান সরকারের বিচার যে ভিন্ন তা প্রমাণ করতে চাই। বুধবার সকালে বাংলা একাডেমিতে দ্য জুলাই রেভ্যুলেশন এভিডেন্স অব এট্রোসিটি শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান। আইন উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্টের হত্যার বিচার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার, মার্চ মাস থেকে শুনানি শুরু হবে ট্রাইব্যুনালে। বিচার করতে না পারলে আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই। যত দ্রুত সম্ভব বিচার করবো। এ ছাড়াও সংস্কার বিষয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কার করার উদ্দেশ্য ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যেন কোনো শাসক এত নির্মম হয়ে উঠতে না পারে। জানা যায়, ‘ব্লাডশেড ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে গত বছরের ১৯শে জুলাই ৬০ পাতার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। উক্ত প্রতিবেদনে যতজন লোক নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল পরে তাদেরই এক প্রতিবেদনে তার চেয়ে ৩ গুণ বেশি লোক নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এ সময় ধারাবাহিকতায় ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস প্রজেক্ট এবং টিক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় গত ৫ই আগস্ট পুলিশের গণহত্যা এবং হৃদয় আলী নামের এক ছেলেকে ধরে কয়েকজন পুলিশ কর্তৃক গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় ২টি ডকুমেন্টারি দেখানো হয়। এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, অতীতে ট্রাইব্যুনালকে যেভাবে কলঙ্কিত করা হয়েছিল, এবার সেই ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য কাজ চলছে। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে কারা পেছন থেকে নির্দেশ দিয়েছে, তা বের করার চেষ্টা চলছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে শহীদ পরিবারের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, বিচারে দেরি করা হবে না। তবে কিছুটা সময় আমরা নিবো। যাতে যুক্তিসঙ্গতভাবে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া যায়। শহীদ পরিবারের কাছে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই আমাদের অঙ্গীকার। এ ছাড়াও জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে কারা পেছন থেকে নির্দেশ দিয়েছে, তা বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস প্রজেক্ট এর নির্বাহী পরিচালক, আন্তর্জাতিক আইনজীবী ইয়াসমিন সুকা বলেন, শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই জানতেন কী ঘটছে। এবং কেন ঘটছে। কিন্তু তা বন্ধ করতে তিনি কিছুই করেননি। তিনি আরও বলেন, পুলিশ বেআইনি এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে যে নৃশংসতা চালিয়েছিল তা ছিল মানবতাবিরোধী অপরাধ। আদালতে এটি প্রমাণ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
mzamin

No comments

Powered by Blogger.