কাতারের প্রতিবেশিরা চাইছে কাতার চরম মূল্য দিক
কাতার
''সন্ত্রাসবাদে'' মদত জোগাচ্ছে এই অভিযোগের জেরে এক বিতর্কের পটভূমিতে
কাতারের প্রতিবেশি দেশগুলো কাতারের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তা
মেটাতে মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমীরাত, বাহারাইন আর মিশর উপসাগরীয় দেশ কাতারকে এক দাবিনামা পাঠিয়েছে এবং এসব দাবি মানার জন্য দেশটিকে ১০ দিনের সময় দিয়েছে।
এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য কাতারের প্রতিদ্বন্দ্বী চারটি দেশের মূল দাবিগুলোর মূল্যায়ন করেছেন বিবিসি আরবী বিভাগের আমীর রাওয়াশ।
কাতারের সংবাদমাধ্যম ভেঙে ফেলা
এই চারটি দেশের সঙ্গে কাতারী কর্তৃপক্ষের বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে সংবাদমাধ্যমের বিষয়টি।
কাতারের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে একটি বিতর্কিত খবর প্রকাশের মধ্যে দিয়ে কার্যত এই সংকটের সূচনা।
কাতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ কাতারী অর্থায়নপুষ্ট আল জাজিরা সংবাদ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশটির কর্তৃপক্ষ ''রাষ্ট্রদ্রোহ উস্কে'' দিচ্ছে। তারা বলছে এর মাধ্যমে মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যরা তাদের মতাদর্শ তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে যে সংগঠনকে রিয়াদ, আবুধাবি আর কায়রো ''সন্ত্রাসী'' তকমা দিয়েছে।
২০১৪ সালেও এই চারটি দেশ ও কাতারের মধ্যে বিতর্কের কারণ হয়েছিল আল জাজিরা। ওই ঘটনার পর আল জাজিরা তাদের মিশরীয় চ্যানেল মুবাশের মিসির (লাইভ ইজিপ্ট) সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয়। চারটি দেশ গত মাসে আল জাজিরার ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়।
কাতার যদিও এখনও পর্যন্ত এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি তারা দাবি মানতে স্বীকৃতি জানায়, তাহলে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে কাতার নিজেকে তুলে ধরার জন্য তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রটি হারাবে। কাতারের জন্য একটা পরোক্ষ শক্তি হল আল জাজিরা।
তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি গুটিয়ে ফেলা
এমাসের গোড়ার দিকে দোহার ওপর যখন চাপ বাড়ছিল, তখন তুরস্ক এগিয়ে এসেছিল দেশটির সাহায্যে। তুরস্ক কাতারে তাদের সেনা মোতায়েন অনুমোদন করে আইন প্রণয়ন করেছিল।
এখন আরেকটি দাবি হল কাতারকে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দিতে হবে।
তুরস্কের এনটিভির খবর অনুযায়ী তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফিকরি ইসিক এই আহ্বান নাকচ করে দিয়েছেন।
সংকট শুরু হওয়ার পর তুরস্ক কাতারকে খাদ্য ও অন্যান্য সাহায্য দিচ্ছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান কাতারকে এই ''অমানবিকভাবে একঘরে করে দেওয়ার'' প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সংকল্পবদ্ধ।
কাতারের আল- উবেইদে রয়েছে মধ্য প্রাচ্যে আমেরিকার সবেচয়ে বড় সামরিক বিমান ঘাঁটি।
তবে এই বিবাদে কাতার যেহেতু আমেরিকার কোনরকম সমর্থন কার্যত পাচ্ছে না, তাই তারা স্পষ্টতই এখন তাদের মিত্র তুরস্কের মুখাপেক্ষী হয়ে আছে।
মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার
২০১১-র পর থেকে কাতার এবং তার প্রতিবেশি দেশগুলো আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিবর্তনে পরস্পরবিরোধী পক্ষকে সমর্থন করে এসেছে।
যখন ২০১৩য় মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, তখন কাতার ছিল মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ।
২০১৪-য় প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের সময় দোহা কর্তৃপক্ষ দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সেদেশ থেকে চলে যেতে বলেছিল।
তবে এসব পদক্ষেপের অর্থ এই ছিল না যে কাতার এ কারণে ইসলামপন্থীদের প্রতি তাদের সমর্থন ঢেলে দিয়েছে।
কাতারের বিরুদ্ধে অন্যান্য ''সন্ত্রাসবাদী'' গোষ্ঠিকে সমর্থনের অভিযোগ আনা হয়েছে। রিয়াদ, আবু ধাবি, মানামা এবং কায়রোতে কর্তৃপক্ষ দোহার সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন সন্ত্রাসী ব্যক্তি ও সংস্থার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।
কাতার কোনরকম সন্ত্রাসের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে।
ইরানের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা
সৌদি আরবের ইরানের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক বেশ স্পষ্ট । গত কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় টানাপোড়েন চলছে।
দুটি দেশই সিরিয়া আর ইয়েমেনে যুদ্ধরত পক্ষের সমর্থক।
সৌদিদের অভিযোগ দোহা সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে শিয়া প্রধান এলাকা ''কাতিফে ইরানী সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসী দলগুলোর কার্যকলাপে মদত দিচ্ছে।'' এই অভিযোগ কাতার অস্বীকার করেছে।
কাতারের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক ওই এলাকার অন্য প্রতিবেশিদের থেকে আলাদা।
ইরানও নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে সৃষ্ট সংকটে কাতারকে সাহায্য করার জন্য বিমানভর্তি খাবারদাবার পাঠিয়েছে।
সৌদি আরব, বাহারাইন এবং সংযুক্ত আরব আমীরাতে কাতারকে তাদের আকাশসীমায় ঢোকার অনুমতি তুলে নেওয়ার পর কাতারী বিমান চলাচলের জন্য ইরান তার আকাশসীমাও উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমীরাত, বাহারাইন আর মিশর উপসাগরীয় দেশ কাতারকে এক দাবিনামা পাঠিয়েছে এবং এসব দাবি মানার জন্য দেশটিকে ১০ দিনের সময় দিয়েছে।
এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য কাতারের প্রতিদ্বন্দ্বী চারটি দেশের মূল দাবিগুলোর মূল্যায়ন করেছেন বিবিসি আরবী বিভাগের আমীর রাওয়াশ।
কাতারের সংবাদমাধ্যম ভেঙে ফেলা
এই চারটি দেশের সঙ্গে কাতারী কর্তৃপক্ষের বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে সংবাদমাধ্যমের বিষয়টি।
কাতারের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে একটি বিতর্কিত খবর প্রকাশের মধ্যে দিয়ে কার্যত এই সংকটের সূচনা।
কাতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ কাতারী অর্থায়নপুষ্ট আল জাজিরা সংবাদ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশটির কর্তৃপক্ষ ''রাষ্ট্রদ্রোহ উস্কে'' দিচ্ছে। তারা বলছে এর মাধ্যমে মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যরা তাদের মতাদর্শ তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে যে সংগঠনকে রিয়াদ, আবুধাবি আর কায়রো ''সন্ত্রাসী'' তকমা দিয়েছে।
২০১৪ সালেও এই চারটি দেশ ও কাতারের মধ্যে বিতর্কের কারণ হয়েছিল আল জাজিরা। ওই ঘটনার পর আল জাজিরা তাদের মিশরীয় চ্যানেল মুবাশের মিসির (লাইভ ইজিপ্ট) সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয়। চারটি দেশ গত মাসে আল জাজিরার ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়।
কাতার যদিও এখনও পর্যন্ত এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি তারা দাবি মানতে স্বীকৃতি জানায়, তাহলে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে কাতার নিজেকে তুলে ধরার জন্য তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রটি হারাবে। কাতারের জন্য একটা পরোক্ষ শক্তি হল আল জাজিরা।
তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি গুটিয়ে ফেলা
এমাসের গোড়ার দিকে দোহার ওপর যখন চাপ বাড়ছিল, তখন তুরস্ক এগিয়ে এসেছিল দেশটির সাহায্যে। তুরস্ক কাতারে তাদের সেনা মোতায়েন অনুমোদন করে আইন প্রণয়ন করেছিল।
এখন আরেকটি দাবি হল কাতারকে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দিতে হবে।
তুরস্কের এনটিভির খবর অনুযায়ী তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফিকরি ইসিক এই আহ্বান নাকচ করে দিয়েছেন।
সংকট শুরু হওয়ার পর তুরস্ক কাতারকে খাদ্য ও অন্যান্য সাহায্য দিচ্ছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান কাতারকে এই ''অমানবিকভাবে একঘরে করে দেওয়ার'' প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সংকল্পবদ্ধ।
কাতারের আল- উবেইদে রয়েছে মধ্য প্রাচ্যে আমেরিকার সবেচয়ে বড় সামরিক বিমান ঘাঁটি।
তবে এই বিবাদে কাতার যেহেতু আমেরিকার কোনরকম সমর্থন কার্যত পাচ্ছে না, তাই তারা স্পষ্টতই এখন তাদের মিত্র তুরস্কের মুখাপেক্ষী হয়ে আছে।
মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার
২০১১-র পর থেকে কাতার এবং তার প্রতিবেশি দেশগুলো আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিবর্তনে পরস্পরবিরোধী পক্ষকে সমর্থন করে এসেছে।
যখন ২০১৩য় মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, তখন কাতার ছিল মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ।
২০১৪-য় প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের সময় দোহা কর্তৃপক্ষ দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সেদেশ থেকে চলে যেতে বলেছিল।
তবে এসব পদক্ষেপের অর্থ এই ছিল না যে কাতার এ কারণে ইসলামপন্থীদের প্রতি তাদের সমর্থন ঢেলে দিয়েছে।
কাতারের বিরুদ্ধে অন্যান্য ''সন্ত্রাসবাদী'' গোষ্ঠিকে সমর্থনের অভিযোগ আনা হয়েছে। রিয়াদ, আবু ধাবি, মানামা এবং কায়রোতে কর্তৃপক্ষ দোহার সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন সন্ত্রাসী ব্যক্তি ও সংস্থার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।
কাতার কোনরকম সন্ত্রাসের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে।
ইরানের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা
সৌদি আরবের ইরানের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক বেশ স্পষ্ট । গত কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় টানাপোড়েন চলছে।
দুটি দেশই সিরিয়া আর ইয়েমেনে যুদ্ধরত পক্ষের সমর্থক।
সৌদিদের অভিযোগ দোহা সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে শিয়া প্রধান এলাকা ''কাতিফে ইরানী সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসী দলগুলোর কার্যকলাপে মদত দিচ্ছে।'' এই অভিযোগ কাতার অস্বীকার করেছে।
কাতারের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক ওই এলাকার অন্য প্রতিবেশিদের থেকে আলাদা।
ইরানও নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে সৃষ্ট সংকটে কাতারকে সাহায্য করার জন্য বিমানভর্তি খাবারদাবার পাঠিয়েছে।
সৌদি আরব, বাহারাইন এবং সংযুক্ত আরব আমীরাতে কাতারকে তাদের আকাশসীমায় ঢোকার অনুমতি তুলে নেওয়ার পর কাতারী বিমান চলাচলের জন্য ইরান তার আকাশসীমাও উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
বিবিসি বাংলা
No comments