পুষ্টি কথা- ‘পুঁইশাকের ইতিকথা’
শেষ হয়েছে ঈদ-উৎসব। যেকোনো উৎসবেই রীতি অনুযায়ী তেল-মসলাজাতীয় খাবার খাওয়া হয়েছে বেশি। এ ধরনের খাবারগুলোর দুর্বল হজমক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের গ্যাস, অ্যাসিডিটির পরিমাণ বাড়ায়। অনেকের ক্ষেত্রে তৈরি করে কোষ্ঠকাঠিন্য। ফুড পয়জনিংয়ে আক্রান্ত করে অনেককে।
আমরা খাবার খাওয়ার পর তা জমা হয় পাকস্থলীতে (পাকস্থলী পেটের একটি অঙ্গ, যেখানে খাবার জমা থাকে)। পাকস্থলী থেকে খাদ্যদ্রব্য নানা রকম নালির ভেতর দিয়ে যাওয়ার পর প্রয়োজনীয় অংশ রক্তে মিশে আর অপ্রয়োজনীয় অংশ বর্জ্য হয়ে দেহের বাইরে চলে যায়।
বর্জ্য পদার্থের মাধ্যমে শরীরের রোগজীবাণু দেহের বাইরে যায়। কোনো কারণে সঠিকভাবে নিষ্কাশন হতে না পারলে বদহজম, গ্যাস, অ্যাসিডিটিসহ নানা সমস্যা তৈরি হয়। এ সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য খেতের খাবারগুলোর মধ্যে পুঁইশাক অন্যতম।
পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, দেহের বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে বাইরে যেতে সাহায্য করে। এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ এবং ‘সি’, যা ত্বকের রোগজীবাণু দূর করে, বৃদ্ধি ও বর্ধনে সাহায্য করে, চোখের পুষ্টি জোগানো ও চুলকে মজবুত রাখে।
গবেষণা করে দেখা গেছে, যারা নিয়মিত শাক, বিশেষ করে আঁশজাতীয় শাক, যেমন—পুঁই বা মিষ্টিকুমড়ার শাক খায়, তাদের পাইলস, ফিস্টুলা ও হেমোরয়েড (এসব পায়ুপথের রোগ) হওয়ার সম্ভাবনা থাকে খুবই কম। আর আঁশজাতীয় খাবার পাকস্থলী ও কোলনের ক্যানসার প্রতিরোধ করে। পুঁইশাকে রক্তে চর্বির মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনো ভয় নেয়।
নতুন দাঁত বের হয়েছে বা খিচুড়ি খেতে পারে, এমন শিশুদের জন্য পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া ও অন্যান্য সবজির খিচুড়ি যথেষ্ট পুষ্টিকর।
ডা. ফারহানা মোবিন
No comments