আফগানিস্তানে কোরআন অবমাননা-ছয় মার্কিন সেনার প্রশাসনিক সাজা
আফগানিস্তানে গত ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ছয় সেনার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি তালেবান যোদ্ধাদের মরদেহের ওপর প্রশ্রাব করার ঘটনায় জড়িত তিন মেরিন সেনার বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মার্কিন সামরিক বাহিনী গত সোমবার এ কথা জানিয়েছে।
তবে এই সেনাদের সাজা ফৌজদারি আইনে দেওয়া হচ্ছে না। তারা 'প্রশাসনিক সাজা' পাচ্ছে মাত্র। এর মধ্যে পদমর্যাদা কমিয়ে দেওয়া বা আর্থিক জরিমানা অথবা অতিরিক্ত সময় কাজ করানোর মতো সাজা রয়েছে। ফলে এই সাজায় আফগানিস্তানিদের ক্ষোভ প্রশমিত হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ ব্যাপারে গতকাল মঙ্গলবার আফগান সরকারের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা ছিল।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি উত্তর কাবুলের বাগরাম বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাদের কোরআন পোড়ানোর জেরে আফগানিস্তানজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী সহিংসতা শুরু হয়। বেশ কয়েক দিন ধরে চলা ওই সহিংসতায় কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়। এর আগে জানুয়ারিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যায়, তিন মার্কিন মেরিন সেনা কয়েকজন মৃত তালেবান যোদ্ধার দেহের ওপর প্রশ্রাব করছে। পরপর এ দুই ঘটনায় ওয়াশিংটন-কাবুল সম্পর্কের চরম অবনতি হয়।
আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই কোরআন পোড়ানোয় জড়িত সেনাদের প্রকাশ্যে বিচারের (পাবলিক ট্রায়াল) দাবি জানান এবং ভিডিওর ঘটনাকে 'অমানুষিক' অভিহিত করেন।
কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় মার্কিন সেনাবাহিনীর গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়েছে সোমবার। এতে তদন্ত কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ব্রায়ান ওয়াটসন দাবি করেন, ঘটনার পেছনে ইসলামকে অবমাননা করার মতো কোনো বিদ্বেষপূর্ণ অভিপ্রায় ছিল না। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোরআনসহ সর্বোচ্চ ১০০টি অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ পুড়িয়েছে মার্কিন সেনারা।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়, সাজাপ্রাপ্ত সেনাদের চারজন অফিসার, বাকি দুজন কমিশনবিহীন সেনা। মেরিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভিডিওর ঘটনায় জড়িত তিনজন তাদের দোষ স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা পরে জানানো হবে। সেনাদের কারো নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি।
No comments