রেললাইনের পাশে লাশ-নিরাপত্তায় ছাড় চলবে না

সড়কপথের চেয়ে নিরাপদ বিবেচিত বলেই শত বিড়ম্বনা ঠেলে আমাদের রেলপথে দেখা যায় উপচেপড়া ভিড়। কয়দিন পরপরই লাইনচ্যুতি, অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের বিপত্তি, এমনকি কখনও কখনও ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষও রেলের প্রতি মানুষের আগ্রহ দমিয়ে রাখতে পারেনি।


কিন্তু গাজীপুর এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী রেলপথের পাশে যেভাবে লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে, তা ভীতি সঞ্চার না করে পারে না। নির্দিষ্ট কয়েক কিলোমিটার এলাকায় এক মাসে ৪৭টি লাশপ্রাপ্তির খবর সংবাদমাধ্যমে আসার আগ পর্যন্ত প্রশাসন যেভাবে নির্বিকার ছিল, তাও কম ভীতিকর নয়। মানুষের জীবনের মূল্য কি এতটাই কম? বিলম্বে হলেও অবশ্য সংশ্লিষ্টদের টনক নড়েছে। রেলমন্ত্রীর নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখন কমিটি নির্ধারিত সাত কর্মদিবসের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কিনা, সেদিকে নজর রাখব আমরা। এ ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে থাকার যে নজির বিভিন্ন সময় দেখা যায়, এ ক্ষেত্রে তার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়। পরিদর্শনকালে এলাকাবাসী ওই স্পটে মাদক চালান নামানোর যে অভিযোগ করেছে, তা অমূলক নয় বলেই আমাদের বিশ্বাস। কারণ, রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে মাদক বিশেষত ফেনসিডিল পাচারের অভিযোগ অনেক পুরনো। লাশগুলো কি মাদক ব্যবসায়ীদের বিরোধের বলি? খতিয়ে দেখা হবে নিশ্চয়ই। সেখানে ট্রেন থামানো কিংবা গতি ধীর করার অভিযোগ যদি সত্যি হয়, মাদক চোরাচালান ও প্রাণহানির দায় রেলওয়ের কর্মকর্তা-চালকরাও এড়াতে পারেন না। তদন্ত কমিটি সম্ভাব্য সব দিক বিবেচনা করে দেখুক। তবে সবকিছুর আগে নজর দিতে হবে যাত্রীর নিরাপত্তার দিকে। রেললাইনের পাশে এভাবে আর লাশ পড়ে থাকা দেখতে চাই না আমরা।
রেলের উন্নয়নে বিভিন্ন পক্ষ থেকে যে উদ্যম দেখা যাচ্ছে, ভীতিকর
পরিস্থিতি যেন তা গ্রাস করে না ফেলে।

No comments

Powered by Blogger.