মুন্সীগঞ্জে খোলা আকাশের নিচে আলুঃ ভালো চাইলে চাষীদের দিকে তাকান
মুন্সীগঞ্জে এখন আলুর ছড়াছড়ি চলছে। ক্ষেতে আলু, রাস্তায় আলু, বাড়ির উঠানেও আলু। হাজার হাজার বস্তা আলু পড়ে আছে বাজারে এবং খোলা আকাশের নিচেও। হঠাত্ শুনলে মনে হতে পারে যেন ডিজিটাল উত্পাদনের সুফল আলুচাষীদের জীবনে মহাযুগান্তর ঘটিয়ে ফেলেছে! অন্যদিকে চাষীদের কিন্তু ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। আলু তারা না গিলতে পারছেন, না পারছেন উগড়ে দিতে।
কারণ যে দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তা দিয়ে উত্পাদন খরচও উঠছে না। প্রতি কেজি আলু উত্পাদন করতে যেখানে সাড়ে ১১ থেকে ১২ টাকা ব্যয় করতে হয়েছে, সেখানে বিক্রি করতে গিয়ে চাষীরা সাত-আট টাকার বেশি এক কানা আধুলিও পাচ্ছেন না। সঙ্গে রয়েছে বাজার পর্যন্ত আলু নিয়ে যাওয়ার খরচ। জায়গা নেই কোল্ড স্টোরেজগুলোতেও। সুযোগ বুঝে কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা শুধু বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়াই বাড়াননি, আগেভাগে জায়গা বা কোটাও বিক্রি করে দিয়েছেন। খালি থাকলেও অবশ্য খুব একটা কাজে লাগত না। কারণ দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছেন চাষীরা। আলু বিক্রি হলো কি হলো না এবং বিক্রিতে লাভ না লোকসান হলো, এসব বিবেচনার কোনো চুক্তি নেই দাদন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। সুতরাং ঋণ শোধ করার জন্য লোকসান দিয়ে হলেও বিক্রি চাষীদের করতেই হচ্ছে। আর বিক্রি করতে গিয়েই একেবারে মাথায় হাত পড়েছে মুন্সীগঞ্জের আলুচাষীদের। একই অবস্থা চলছে দেশের অন্য সব এলাকাতেও। যেমন আমার দেশ-এ প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, কম দাম এবং কোল্ড স্টোরেজে জায়গা খালি না থাকায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ১০ লাখ বস্তা আলু নষ্ট হতে যাচ্ছে। সেখানেও চাষীরা আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলছেন, ‘কী আর কমো বাহে, হামার আলু কেউ নেওছে না।’
চাষীদের এ দুরবস্থা এবং এত বিপুল পরিমাণ আলু পড়ে থাকার খবরকে শুধু আশঙ্কাজনক বলা যথেষ্ট হতে পারে না। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে যেন বেশি আলু উত্পাদন করে চাষীরা বিরাট কোনো অপরাধ করে ফেলেছে! অথচ বর্তমান সরকার তো বটেই, সব সরকারই চাষাবাদের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল হিসেবে পরিচিত জরুরি সরকারের নেপথ্য নায়ক তো জাতিকে ভাতের বদলে বেশি করে আলু খাওয়ার জন্য হেদায়েতও করে গেছেন। কে জানে সেজন্যই কিনা, ওই নায়কদের ব্যবস্থাপনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আলুর চাষও এবার যথেষ্টই হয়েছে। সংরক্ষণের যদি সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা যেত এবং চাষীদের যদি সামান্যও লাভের মুখ দেখানো যেত, তাহলে উপকার হতো দেশেরই। খাদ্য সমস্যারও সমাধান হতো অনেকাংশে। কিন্তু সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার সময় কোথায় ক্ষমতাসীনদের? তারা তো ব্যস্ত রয়েছেন হামলা-মামলা থেকে ইতিহাস শেখানো পর্যন্ত হাজার রকমের মহাকম্মে!
বেশি ফলনের কৃতিত্ব নেয়ার সময় কিন্তু এ ক্ষমতাসীনদের সঙ্গেই পাল্লায় টিকতে পারা কঠিন হয়ে পড়বে। এমনকি খোদ চাষীরাও তখন পাত্তাটুকু পাবেন না! আলুর বিষয়টিকে হালকাভাবে নেয়ার পরিণাম ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। কারণ ক’দিন আগে রংপুরের টমেটো চাষীরা জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে টমেটোর পাহাড় বানিয়েছেন। এবার সম্ভবত আলুর পাহাড় বানানোর খবর পাওয়া যাবে। অথচ সরকার একটু নজর দিলেই আলু নিয়ে চাষীদের এমন দুরবস্থায় পড়তে হতো না। আগে থেকে পরিকল্পনা থাকলে কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যেত। শুধু মুন্সীগঞ্জের কোল্ড স্টোরেজেই রাখতে হবে—এমন কথাই বা কে বলেছে? অন্য অনেক স্থানেও তো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা সম্ভব। আমরা মনে করি, সময় এখনও পেরিয়ে যায়নি। সরকারের উচিত চাষীদের কাছ থেকে লাভসহ যুক্তিসঙ্গত দামে সব আলু কিনে নেয়া এবং সংরক্ষণের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা। না হলে চাষীরা শুধু উত্সাহই হারাবেন না, ভবিষ্যতে উচিত শিক্ষা দেয়ারও চিন্তা করবেন।
চাষীদের এ দুরবস্থা এবং এত বিপুল পরিমাণ আলু পড়ে থাকার খবরকে শুধু আশঙ্কাজনক বলা যথেষ্ট হতে পারে না। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে যেন বেশি আলু উত্পাদন করে চাষীরা বিরাট কোনো অপরাধ করে ফেলেছে! অথচ বর্তমান সরকার তো বটেই, সব সরকারই চাষাবাদের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল হিসেবে পরিচিত জরুরি সরকারের নেপথ্য নায়ক তো জাতিকে ভাতের বদলে বেশি করে আলু খাওয়ার জন্য হেদায়েতও করে গেছেন। কে জানে সেজন্যই কিনা, ওই নায়কদের ব্যবস্থাপনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আলুর চাষও এবার যথেষ্টই হয়েছে। সংরক্ষণের যদি সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা যেত এবং চাষীদের যদি সামান্যও লাভের মুখ দেখানো যেত, তাহলে উপকার হতো দেশেরই। খাদ্য সমস্যারও সমাধান হতো অনেকাংশে। কিন্তু সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার সময় কোথায় ক্ষমতাসীনদের? তারা তো ব্যস্ত রয়েছেন হামলা-মামলা থেকে ইতিহাস শেখানো পর্যন্ত হাজার রকমের মহাকম্মে!
বেশি ফলনের কৃতিত্ব নেয়ার সময় কিন্তু এ ক্ষমতাসীনদের সঙ্গেই পাল্লায় টিকতে পারা কঠিন হয়ে পড়বে। এমনকি খোদ চাষীরাও তখন পাত্তাটুকু পাবেন না! আলুর বিষয়টিকে হালকাভাবে নেয়ার পরিণাম ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। কারণ ক’দিন আগে রংপুরের টমেটো চাষীরা জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে টমেটোর পাহাড় বানিয়েছেন। এবার সম্ভবত আলুর পাহাড় বানানোর খবর পাওয়া যাবে। অথচ সরকার একটু নজর দিলেই আলু নিয়ে চাষীদের এমন দুরবস্থায় পড়তে হতো না। আগে থেকে পরিকল্পনা থাকলে কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যেত। শুধু মুন্সীগঞ্জের কোল্ড স্টোরেজেই রাখতে হবে—এমন কথাই বা কে বলেছে? অন্য অনেক স্থানেও তো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা সম্ভব। আমরা মনে করি, সময় এখনও পেরিয়ে যায়নি। সরকারের উচিত চাষীদের কাছ থেকে লাভসহ যুক্তিসঙ্গত দামে সব আলু কিনে নেয়া এবং সংরক্ষণের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা। না হলে চাষীরা শুধু উত্সাহই হারাবেন না, ভবিষ্যতে উচিত শিক্ষা দেয়ারও চিন্তা করবেন।
No comments