আসছে ৯ ধাপের বিদ্যুৎ বিল-দরিদ্রবান্ধব হতে হবে
অনিয়ম ও দুর্বল পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে গত পাঁচ মাসে ৪০০ কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে গেছে। আর এ অর্থ জনগণের পকেট থেকে চলে গেছে বিল কাঠামো পরিবর্তনে যথাযথ ব্যবস্থা আগেই গ্রহণ না করার ফলে।
কর্তৃপক্ষ একটি জটিল কাঠামো প্রস্তুত করেছিল বিদ্যুৎ বিল প্রদানের বেলায়, যা নিজেদের আগ্রহে বুঝতে চেষ্টা করেও জনগণের বেগ পেতে হয়েছে। সেই কাঠামো পরিবর্তনের পর থেকে অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল আসতে শুরু করে গ্রাহকদের কাছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে এবং জনগণের ক্ষোভের মুখে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বা বিইআরসি আবার বিল কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নেয়। জানা গেছে, বিইআরসি ৯টি স্তরে স্ল্যাব তৈরির কাজ শুরু করেছে। কিন্তু বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা চান, কাঠামো বর্তমানে যেমন আছে তেমন থাকুক। সে জন্য তারা চাপ প্রয়োগ করছেন বলে বর্তমানে আবাসিক গ্রাহকদের জন্য তিনটি ধাপ রয়েছে। কিন্তু প্রাপ্ত তথ্য মতে, বিইআরসি ৯টি ধাপ বা স্ল্যাব করার জন্য কাজ করছে।
বিদ্যুতের বর্তমান কাঠামো কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ধাপে যারা কম বিদ্যুৎ ভোগ করে, তাদের জন্য অধিক ব্যবহারকারীদের চেয়ে বেশি মূল্য গুনতে হয়। যাঁরা কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, তাঁরা সাধারণ মানুষ অথবা সাধারণ গ্রাহক। যেমন- ৪২৫ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর বিল বেড়েছে ৮৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর অন্যদিকে ১০০ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিল বেড়েছে ২৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। আমরা জানি, স্বল্প বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন সাধারণ, মধ্য ও নিম্নবিত্তের গ্রাহকরা। ১০০০ ইউনিট বা অধিক যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁরা হয় বিদ্যুৎ বাণিজ্যিক কারণে ব্যবহার করেন অথবা বিলাসিতায় ব্যবহার করেন। সুতরাং বিদ্যুতের যে ৯টি স্তরে দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে, তা খুবই যুক্তিযুক্ত। সবচেয়ে ভালো হতো যদি বিদ্যুতের বাড়তি মূল্য জনগণকে পরিশোধ করতে না হতো। কিন্তু সেটা যেহেতু এখন আর সম্ভব হচ্ছে না, তাই সাধারণ জনগণের দিকেই সরকারকে আগে দৃষ্টি দিতে হবে। অন্যদিকে পরবর্তী যে মূল্য ও স্ল্যাব নির্ধারণ করা হচ্ছে, তার হিসাব জনগণকে সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দিতে হবে। যতটা জানা গেছে, আগামী মাসেই এ নতুন ঘোষণা আসতে পারে। সেটা আসার আগেই প্রচারণা চালিয়ে জনগণকে সঠিক হিসাবটি জানাতে হবে। আর বিদ্যুতের ভৌতিক বিল যেন কারো ঘাড়ে না চাপে, সেদিকে কঠোর দৃষ্টি
রাখতে হবে।
No comments