দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ভাল অস্ত্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা by এনামুল হক
দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন যত সহজ অনেক সময় সেই অর্থ ব্যয় করা তত কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ধনী দেশগুলোতে অসৎ পথে অর্থোপার্জনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার মতো বেশ কিছু কার্যকর হাতিয়ার বা অস্ত্র আছে। যেমন সম্পদ আটক করা কিংবা ভিসা নিষিদ্ধ করা। কিন্তু আইন থাকলেও অনেক সময় সেগুলোর সঠিক প্রয়োগ হয় না।
আজ সেই আইন প্রয়োগের দাবিতেই প্রচার-আন্দোলন চলছে আমেরিকা, ব্রিটেন ও অন্যান্য দেশে; যাতে দুর্নীতির সুফল ভোগ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি একই লক্ষ্যে প্রচারাভিযানকারীদের আবেদনটি পদক্ষেপের প্রতিও জনসমর্থন বাড়ছে। সেটা হলো জনগণের তরফ থেকে বিদেশী দুর্বৃত্তদের ভিসার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া ও সম্পদ আটক করা।
এতদিন এই কাজগুলো শুধুমাত্র সরকারই করত। তবে প্রায়শই সঙ্কীর্ণ পরিসরে টার্গেট করা এবং গোপনে প্রয়োগ করা হতো এবং তাও আবার কূটনৈতিক বিবেচনার কাছে জিম্মি হয়ে ছিল। কিন্তু ভবিষ্যতে দুর্নীতিবাজ বিদেশীদের কালো তালিকা আইনপ্রণেতা কিংবা জনসাধারণের কাছ থেকেও আসতে পারে।
এই প্রচারান্দোলনের উৎপত্তি হয়েছে সার্গেই ম্যাগনিটস্কি নামে এক রুশ আইনজীবীর মামলা থেকে। সেই আইনজীবী ২৩ কোটি ডলার জালিয়াতির ঘটনা উদঘাটন করেছিলেন বলে দাবি করেন। একটি বিদেশী বিনিয়োগ তহবিলের সেই অর্থ জালিয়াতির সঙ্গে যেসব কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন তারাই ম্যাগনিটস্কিকে জেলে পাঠান এবং ২০০৯ সালে কারাগারেই তিনি মারা যান। তহবিলের প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকায় জন্ম নেয়া বিল ব্রাউডার এই জালিয়াতি কিংবা ম্যাগনিটস্কির নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ৬০ ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেছেন। তিনি চান পাশ্চাত্য দেশগুলো যাতে এই ৬০ জনকে ভিসা না দেয় এবং তাদের সম্পদ আটক করে।
ব্রাউডারের প্রচারান্দোলন এত বেগবান হয়েছে যে মার্কিন কংগ্রেসের উভয় পরিষদ এই প্রচারাভিযান সমর্থন করেছে এবং এ সংক্রান্ত একটি খসড়া বিলও পাস হবার অপেক্ষায় তৈরি হয়ে আছে। বিলটি পাস হলে মানবাধিকার কর্মীরা এক নতুন ধারলো অস্ত্র হাতে পেয়ে যাবে। কারণ তখন প্রশাসন অন্যায়কারীদের কিংবা অন্যান্য উৎপীড়নমূলক ঘটনায় জড়িতদের নাম সঙ্কলিত করে প্রকাশ করতে বাধ্য থাকবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর একাই বেলারুশ ও ইরানের মতো দেশগুলোর এ জাতীয় কর্মকর্তাদের একটা কালো তালিকা প্রণয়ন করেছে। কংগ্রেস স্টাফরা ইতোমধ্যে বাহরাইনের কিছু কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করেছেন। তারা চান যে এদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হোক। এভাবেই ম্যাগনিটস্কির ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের ওপর বৃহত্তর আঘাত হানার দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
মার্কিন প্রশাসন অবশ্য মনে করে যে বিলটি অপ্রয়োজনীয় এবং তাতে বাড়াবাড়ি আছে। কিন্তু প্রচারাভিযানে নিয়োজিতরা এতে মহাখুশি। ফ্রিডম হাউস নামে এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ডেভিড ক্রেমার বলেন, কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকা ভাল। অসৎ লোকেরা যদি ভাবে তাদের নাম কালো তালিকায় থাকতে পারে তাহলে মন্দ কি। একই ধরনের উদ্যোগ অন্যান্য দেশেও গ্রহণের আয়োজন চলছে। ব্রিটেনে এমন এক উদ্যোগের প্রধান হলেন রক্ষণশীল এমপি ডোমিনিক রাব। কমন্সসভায় তার আনীত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মত সমর্থন পেয়েছে যা শীঘ্রই বিল আকারে উপস্থাপিত হবে। বিলে ম্যাগনিটস্কির তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের এবং অন্যান্য দুর্নীতিবাজ ও দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
রাব বলেন, জনগণের যে কারোরই ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের কাছে গিয়ে কোন অন্যায় কর্মকা-ের সাক্ষ্যপ্রমাণ দাখিল করতে পারা উচিত। ক্রাউন অফিস সেই সাক্ষ্যপ্রমাণে সন্তুষ্ট হলে তখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বা সম্পদ আটক করার সুপারিশ করবে। বিদেশীরা যদি মনে করে তাদের অন্যায়ভাবে টার্গেট করা হয়েছে সেক্ষেত্রে তাদের আপীল করার সুযোগ থাকবে।
দুর্নীতিবাজ অফিসাররা স্বভাবতই তাদের দুর্নীতির সুফল এমন দেশে ভোগ করতে চায় যেখানে তারা অধিকতর নিরাপদ। মজার কথা, এমন দেশের অভাবও এই পৃথিবীতে নেই। কিছু দেশ আছে বিদেশীদের অর্থ পেলে বর্তে যায়। পাছে তাদের রোষানলে পড়তে হয় এ জন্য তারা তাদের স্পর্শ করতেও সাহস পায় না। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অনেক সরকার ম্যাগনিটষ্কির ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানালেও কেউ সবার আগে বিধিনিষেধ আরোপ করে রাশিয়ার বিরাগভাজন হতে চায় না। অন্যান্য দেশও এ নিয়ে পাল্টা খেলা খেলতে পারে। যেমন রাশিয়া পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে গুয়ান্তানামো বে ও আবু গারিব কারাগারের ঘটনাবলীর সঙ্গে যুক্ত আমেরিকান কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এতদিন এই কাজগুলো শুধুমাত্র সরকারই করত। তবে প্রায়শই সঙ্কীর্ণ পরিসরে টার্গেট করা এবং গোপনে প্রয়োগ করা হতো এবং তাও আবার কূটনৈতিক বিবেচনার কাছে জিম্মি হয়ে ছিল। কিন্তু ভবিষ্যতে দুর্নীতিবাজ বিদেশীদের কালো তালিকা আইনপ্রণেতা কিংবা জনসাধারণের কাছ থেকেও আসতে পারে।
এই প্রচারান্দোলনের উৎপত্তি হয়েছে সার্গেই ম্যাগনিটস্কি নামে এক রুশ আইনজীবীর মামলা থেকে। সেই আইনজীবী ২৩ কোটি ডলার জালিয়াতির ঘটনা উদঘাটন করেছিলেন বলে দাবি করেন। একটি বিদেশী বিনিয়োগ তহবিলের সেই অর্থ জালিয়াতির সঙ্গে যেসব কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন তারাই ম্যাগনিটস্কিকে জেলে পাঠান এবং ২০০৯ সালে কারাগারেই তিনি মারা যান। তহবিলের প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকায় জন্ম নেয়া বিল ব্রাউডার এই জালিয়াতি কিংবা ম্যাগনিটস্কির নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ৬০ ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেছেন। তিনি চান পাশ্চাত্য দেশগুলো যাতে এই ৬০ জনকে ভিসা না দেয় এবং তাদের সম্পদ আটক করে।
ব্রাউডারের প্রচারান্দোলন এত বেগবান হয়েছে যে মার্কিন কংগ্রেসের উভয় পরিষদ এই প্রচারাভিযান সমর্থন করেছে এবং এ সংক্রান্ত একটি খসড়া বিলও পাস হবার অপেক্ষায় তৈরি হয়ে আছে। বিলটি পাস হলে মানবাধিকার কর্মীরা এক নতুন ধারলো অস্ত্র হাতে পেয়ে যাবে। কারণ তখন প্রশাসন অন্যায়কারীদের কিংবা অন্যান্য উৎপীড়নমূলক ঘটনায় জড়িতদের নাম সঙ্কলিত করে প্রকাশ করতে বাধ্য থাকবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর একাই বেলারুশ ও ইরানের মতো দেশগুলোর এ জাতীয় কর্মকর্তাদের একটা কালো তালিকা প্রণয়ন করেছে। কংগ্রেস স্টাফরা ইতোমধ্যে বাহরাইনের কিছু কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করেছেন। তারা চান যে এদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হোক। এভাবেই ম্যাগনিটস্কির ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের ওপর বৃহত্তর আঘাত হানার দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
মার্কিন প্রশাসন অবশ্য মনে করে যে বিলটি অপ্রয়োজনীয় এবং তাতে বাড়াবাড়ি আছে। কিন্তু প্রচারাভিযানে নিয়োজিতরা এতে মহাখুশি। ফ্রিডম হাউস নামে এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ডেভিড ক্রেমার বলেন, কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকা ভাল। অসৎ লোকেরা যদি ভাবে তাদের নাম কালো তালিকায় থাকতে পারে তাহলে মন্দ কি। একই ধরনের উদ্যোগ অন্যান্য দেশেও গ্রহণের আয়োজন চলছে। ব্রিটেনে এমন এক উদ্যোগের প্রধান হলেন রক্ষণশীল এমপি ডোমিনিক রাব। কমন্সসভায় তার আনীত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মত সমর্থন পেয়েছে যা শীঘ্রই বিল আকারে উপস্থাপিত হবে। বিলে ম্যাগনিটস্কির তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের এবং অন্যান্য দুর্নীতিবাজ ও দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
রাব বলেন, জনগণের যে কারোরই ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের কাছে গিয়ে কোন অন্যায় কর্মকা-ের সাক্ষ্যপ্রমাণ দাখিল করতে পারা উচিত। ক্রাউন অফিস সেই সাক্ষ্যপ্রমাণে সন্তুষ্ট হলে তখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বা সম্পদ আটক করার সুপারিশ করবে। বিদেশীরা যদি মনে করে তাদের অন্যায়ভাবে টার্গেট করা হয়েছে সেক্ষেত্রে তাদের আপীল করার সুযোগ থাকবে।
দুর্নীতিবাজ অফিসাররা স্বভাবতই তাদের দুর্নীতির সুফল এমন দেশে ভোগ করতে চায় যেখানে তারা অধিকতর নিরাপদ। মজার কথা, এমন দেশের অভাবও এই পৃথিবীতে নেই। কিছু দেশ আছে বিদেশীদের অর্থ পেলে বর্তে যায়। পাছে তাদের রোষানলে পড়তে হয় এ জন্য তারা তাদের স্পর্শ করতেও সাহস পায় না। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অনেক সরকার ম্যাগনিটষ্কির ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানালেও কেউ সবার আগে বিধিনিষেধ আরোপ করে রাশিয়ার বিরাগভাজন হতে চায় না। অন্যান্য দেশও এ নিয়ে পাল্টা খেলা খেলতে পারে। যেমন রাশিয়া পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে গুয়ান্তানামো বে ও আবু গারিব কারাগারের ঘটনাবলীর সঙ্গে যুক্ত আমেরিকান কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
No comments