সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ-অ্যাসাঞ্জের মতপ্রকাশের অধিকার by মোহাম্মদ আলী
অ্যাসাঞ্জ স্ফুলিঙ্গের যে দাবানল জ্বালিয়েছেন তা সারাবিশ্বে এমনকি আমেরিকা, হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগনে এর উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ূক। ওবামা প্রশাসনের সব দম্ভ ও অহঙ্কার চূর্ণ-বিচূর্ণ হোক। একদিন না একদিন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে।
আমেরিকার সব অন্যায় নীতি এক মহাবিস্ফোরণে চূর্ণ-বিচূর্ণ হবে। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী
আমেরিকা নাকি মতপ্রকাশের স্বর্গরাজ্য! মতপ্রকাশের মায়াকান্নায় গোটা আমেরিকা ও হোয়াইট হাউসের আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয় প্রতিনিয়ত। অথচ যখন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের উইকিলিকস মতপ্রকাশে 'অ্যাটম বোমা' ফাটাল, তখন আমেরিকার হৃৎপিণ্ড প্রকম্পিত হয়ে উঠল। কেঁপে উঠল পেন্টাগন, ঝড় উঠল হোয়াইট হাউসে। আমেরিকা 'উইকিলিকস পরমাণু' বোমার ভয়ে জড়সড় হয়ে উঠল। বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বর্গরাজ্য এবং পবিত্র ত্রাণকর্তা আমেরিকা যেন হতচকিত। জনগণকে বেশিদিন বোকা বানিয়ে রাখা যায় না। তাই এ বোমার বিস্টেম্ফারণ ঘটল স্বয়ং আমেরিকার ভেতর থেকেই। আমেরিকার রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার বাতাবরণ খান খান হয়ে পলেস্তারার মতো খসে খসে পড়ল। এ ঘটনার মহানায়ক হলেন অ্যাসাঞ্জ। আর এ 'তথ্যবোমা' বিস্টেম্ফারণে সহযোগিতা করছেন স্বয়ং মার্কিনি একজন 'বিবেকবান সেনা কর্মকর্তা' ব্র্যাডলি ম্যানিং। তিনিও অ্যাসাঞ্জের মতো একজন সাহসী বীর। তিনি যেন মহামতি কারলাইলের দর্শনের অনুসারী। মহামতি কারলাইল একবার বলেছিলেন, আমি তোমার মতের সঙ্গে একমত নাও হতে পারি, তবে তোমার মতপ্রকাশের জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত। তিনি একজন সৈনিক হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ কাজটি করেছেন। সেই ঘটনা বিশ্ব বিবেকের চোখ খুলে দিয়েছে। বিবেকের তাড়নায় চালিত হয়ে তিনি পেন্টাগনের গোপন নথিপত্র ফাঁস করেছেন। এ ঘটনা বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনায়কদের ঘুম হারাম করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
তিনি যেন আমেরিকার 'গোপন তথ্যভাণ্ডারের বিষের হাঁড়ি' অ্যাসাঞ্জের হাতে তুলে দিয়েছেন। তিনি যদি এ কাজ সত্যিই করে থাকেন তাহলে তো মহৎ কাজটিই করেছেন। এ ধরনের দায়িত্বশীল ও সাহসী কাজ ক'জন নিজের কাঁধে তুলে নিতে পারেন? তিনি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করেছেন। তাকে ধন্যবাদ।
ইতিমধ্যে এমন একটি বার্তা বিশ্বের কাছে পেঁৗছে গেছে যে উন্নত প্রযুক্তির যুগে যে কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক না কেন সেটি কোনো না কোনো দিন প্রকাশ পাবেই। বিশ্বের দেশে দেশে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ যেসব তুঘলকি কাণ্ডকারখানা ঘটাক না কেন, তার জারিজুরি যে কোনো মুহূর্তে ফাঁস হয়ে যেতে পারে। এ ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। যদি ব্র্যাডলি এসব তথ্য সত্যিই ফাঁস করে থাকেন তাহলে তিনি মহান কাজটি করেছেন। আর সেই 'অপরাধে' অভিযুক্ত করে তাকে গ্রেফতার করে ১৮৫ দিন আটক রাখা হয়েছে। অথচ আইনে বলা আছে_ কোনো ব্যক্তিকে ১২০ দিনের বেশি আটক রাখা যাবে না। এ ঘটনাই প্রমাণ করে, আমেরিকার মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কতটা নাজুক।
বর্তমানে অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাজ্যে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি সুইডেনে প্রত্যাবর্তন ও গ্রেফতার এড়াতে এ ধরনের মানবিক আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। এ যেন কোনো শিকারি পাখিকে জালে ফেলে আটকে রাখার মতো ঘটনা। উল্লেখ্য, ইকুয়েডর লাতিন আমেরিকার একটি দেশ। ইতিমধ্যে ইকুয়েডরের সরকার তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বীরোচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিকার্ডো পাতিনো যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাতে ওবামা প্রশাসনের কাছে এ বার্তা পেঁৗছে গেছে_ অন্যায়কারীকে সবাই সমর্থন করেন না। সত্যের পথেও অনেকে আছেন। আর অন্যায় করে বেশিদিন পার পাওয়া যায় না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য কোনো না কোনো সাহসী বীর প্রাকৃতিক কারণেই জন্ম নেন।
এদিকে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতারের জন্য যুক্তরাজ্যের পুলিশ তৎপর। কিন্তু সেখানকার অনেক প্রতিবাদী মানুষও অ্যাসাঞ্জকে সমর্থন দিয়েছেন। ইকুয়েডরের দূতাবাসের দোতলায় অ্যাসাঞ্জ একটি বক্তৃতা দিয়েছেন। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। একসময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন এক বক্তৃতা দিয়ে মানুষের মন জয় করেছিলেন। যদিও লিংকনের বক্তৃতা আর অ্যাসাঞ্জের বক্তৃতা এক নয়। ঘটনাও ভিন্ন। কিন্তু অ্যাসাঞ্জ ও উইকিলিকস মতপ্রকাশের শক্তিশালী একটি আণবিক বোমা।
আজও গোটা বিশ্বকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ পদদলিত করছে, অনুগত করে রাখতে চাইছে। ওদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যে কেবলই কথার কথা সে বিষয়টি গোটা বিশ্বের কাছে আজ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সুতরাং অ্যাসাঞ্জের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যুদ্ধ একটি ন্যায়যুদ্ধ। বিশ্বের সব বিবেকবান মানুষের দায়িত্ব মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অন্যায় তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া; একই সঙ্গে অ্যাসাঞ্জের পথে দাঁড়ানো।
মূলত এ ঘটনার মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়, আমেরিকা অন্য দেশের স্বার্থের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন; যার একমাত্র লক্ষ্য গোটা বিশ্বকে পদদলিত করে রাখা। আজ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে, আমরা কী করব? এর একমাত্র উত্তর অ্যাসাঞ্জের পাশে দাঁড়ানো। মতপ্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সোচ্চার হওয়া। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ভাষাতত্ত্ব ও দর্শন বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক চমস্কি লিখেছেন, 'যে ব্যক্তি গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সাহস নিয়ে দাঁড়িয়েছে, নিন্দা বা শাস্তি নয়_ তিনি অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য।'
অ্যাসাঞ্জ স্ফুলিঙ্গের যে দাবানল জ্বালিয়েছেন তা সারাবিশ্বে এমনকি আমেরিকা, হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগনে এর উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ূক। ওবামা প্রশাসনের সব দম্ভ ও অহঙ্কার চূর্ণ-বিচূর্ণ হোক। একদিন না একদিন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে। আমেরিকার সব অন্যায় নীতি এক মহাবিস্ফোরণে চূর্ণ-বিচূর্ণ হবে। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী।
অ্যাসাঞ্জ এক বিদ্রোহের নাম। সত্য প্রকাশের নাম। সত্য প্রকাশ করতে গিয়েই ব্রুনোকে জীবন দিতে হয়েছিল, গ্যালিলিওকে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। তবু সেসব সত্য আজ গোটা বিশ্বে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার যে দীপ্ত সংগ্রাম অ্যাসাঞ্জ শুরু করেছেন তা নিশ্চয় জয়ী হবে। ওবামা ও তার প্রশাসন অন্যায় নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। অন্যায়ের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী।
মোহাম্মদ আলী : পুস্তক প্রকাশক
nanditaali@gmail.com
আমেরিকা নাকি মতপ্রকাশের স্বর্গরাজ্য! মতপ্রকাশের মায়াকান্নায় গোটা আমেরিকা ও হোয়াইট হাউসের আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয় প্রতিনিয়ত। অথচ যখন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের উইকিলিকস মতপ্রকাশে 'অ্যাটম বোমা' ফাটাল, তখন আমেরিকার হৃৎপিণ্ড প্রকম্পিত হয়ে উঠল। কেঁপে উঠল পেন্টাগন, ঝড় উঠল হোয়াইট হাউসে। আমেরিকা 'উইকিলিকস পরমাণু' বোমার ভয়ে জড়সড় হয়ে উঠল। বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বর্গরাজ্য এবং পবিত্র ত্রাণকর্তা আমেরিকা যেন হতচকিত। জনগণকে বেশিদিন বোকা বানিয়ে রাখা যায় না। তাই এ বোমার বিস্টেম্ফারণ ঘটল স্বয়ং আমেরিকার ভেতর থেকেই। আমেরিকার রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার বাতাবরণ খান খান হয়ে পলেস্তারার মতো খসে খসে পড়ল। এ ঘটনার মহানায়ক হলেন অ্যাসাঞ্জ। আর এ 'তথ্যবোমা' বিস্টেম্ফারণে সহযোগিতা করছেন স্বয়ং মার্কিনি একজন 'বিবেকবান সেনা কর্মকর্তা' ব্র্যাডলি ম্যানিং। তিনিও অ্যাসাঞ্জের মতো একজন সাহসী বীর। তিনি যেন মহামতি কারলাইলের দর্শনের অনুসারী। মহামতি কারলাইল একবার বলেছিলেন, আমি তোমার মতের সঙ্গে একমত নাও হতে পারি, তবে তোমার মতপ্রকাশের জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত। তিনি একজন সৈনিক হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ কাজটি করেছেন। সেই ঘটনা বিশ্ব বিবেকের চোখ খুলে দিয়েছে। বিবেকের তাড়নায় চালিত হয়ে তিনি পেন্টাগনের গোপন নথিপত্র ফাঁস করেছেন। এ ঘটনা বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনায়কদের ঘুম হারাম করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
তিনি যেন আমেরিকার 'গোপন তথ্যভাণ্ডারের বিষের হাঁড়ি' অ্যাসাঞ্জের হাতে তুলে দিয়েছেন। তিনি যদি এ কাজ সত্যিই করে থাকেন তাহলে তো মহৎ কাজটিই করেছেন। এ ধরনের দায়িত্বশীল ও সাহসী কাজ ক'জন নিজের কাঁধে তুলে নিতে পারেন? তিনি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করেছেন। তাকে ধন্যবাদ।
ইতিমধ্যে এমন একটি বার্তা বিশ্বের কাছে পেঁৗছে গেছে যে উন্নত প্রযুক্তির যুগে যে কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক না কেন সেটি কোনো না কোনো দিন প্রকাশ পাবেই। বিশ্বের দেশে দেশে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ যেসব তুঘলকি কাণ্ডকারখানা ঘটাক না কেন, তার জারিজুরি যে কোনো মুহূর্তে ফাঁস হয়ে যেতে পারে। এ ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। যদি ব্র্যাডলি এসব তথ্য সত্যিই ফাঁস করে থাকেন তাহলে তিনি মহান কাজটি করেছেন। আর সেই 'অপরাধে' অভিযুক্ত করে তাকে গ্রেফতার করে ১৮৫ দিন আটক রাখা হয়েছে। অথচ আইনে বলা আছে_ কোনো ব্যক্তিকে ১২০ দিনের বেশি আটক রাখা যাবে না। এ ঘটনাই প্রমাণ করে, আমেরিকার মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কতটা নাজুক।
বর্তমানে অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাজ্যে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি সুইডেনে প্রত্যাবর্তন ও গ্রেফতার এড়াতে এ ধরনের মানবিক আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। এ যেন কোনো শিকারি পাখিকে জালে ফেলে আটকে রাখার মতো ঘটনা। উল্লেখ্য, ইকুয়েডর লাতিন আমেরিকার একটি দেশ। ইতিমধ্যে ইকুয়েডরের সরকার তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বীরোচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিকার্ডো পাতিনো যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাতে ওবামা প্রশাসনের কাছে এ বার্তা পেঁৗছে গেছে_ অন্যায়কারীকে সবাই সমর্থন করেন না। সত্যের পথেও অনেকে আছেন। আর অন্যায় করে বেশিদিন পার পাওয়া যায় না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য কোনো না কোনো সাহসী বীর প্রাকৃতিক কারণেই জন্ম নেন।
এদিকে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতারের জন্য যুক্তরাজ্যের পুলিশ তৎপর। কিন্তু সেখানকার অনেক প্রতিবাদী মানুষও অ্যাসাঞ্জকে সমর্থন দিয়েছেন। ইকুয়েডরের দূতাবাসের দোতলায় অ্যাসাঞ্জ একটি বক্তৃতা দিয়েছেন। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। একসময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন এক বক্তৃতা দিয়ে মানুষের মন জয় করেছিলেন। যদিও লিংকনের বক্তৃতা আর অ্যাসাঞ্জের বক্তৃতা এক নয়। ঘটনাও ভিন্ন। কিন্তু অ্যাসাঞ্জ ও উইকিলিকস মতপ্রকাশের শক্তিশালী একটি আণবিক বোমা।
আজও গোটা বিশ্বকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ পদদলিত করছে, অনুগত করে রাখতে চাইছে। ওদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যে কেবলই কথার কথা সে বিষয়টি গোটা বিশ্বের কাছে আজ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সুতরাং অ্যাসাঞ্জের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যুদ্ধ একটি ন্যায়যুদ্ধ। বিশ্বের সব বিবেকবান মানুষের দায়িত্ব মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অন্যায় তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া; একই সঙ্গে অ্যাসাঞ্জের পথে দাঁড়ানো।
মূলত এ ঘটনার মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়, আমেরিকা অন্য দেশের স্বার্থের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন; যার একমাত্র লক্ষ্য গোটা বিশ্বকে পদদলিত করে রাখা। আজ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে, আমরা কী করব? এর একমাত্র উত্তর অ্যাসাঞ্জের পাশে দাঁড়ানো। মতপ্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সোচ্চার হওয়া। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ভাষাতত্ত্ব ও দর্শন বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক চমস্কি লিখেছেন, 'যে ব্যক্তি গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সাহস নিয়ে দাঁড়িয়েছে, নিন্দা বা শাস্তি নয়_ তিনি অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য।'
অ্যাসাঞ্জ স্ফুলিঙ্গের যে দাবানল জ্বালিয়েছেন তা সারাবিশ্বে এমনকি আমেরিকা, হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগনে এর উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ূক। ওবামা প্রশাসনের সব দম্ভ ও অহঙ্কার চূর্ণ-বিচূর্ণ হোক। একদিন না একদিন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে। আমেরিকার সব অন্যায় নীতি এক মহাবিস্ফোরণে চূর্ণ-বিচূর্ণ হবে। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী।
অ্যাসাঞ্জ এক বিদ্রোহের নাম। সত্য প্রকাশের নাম। সত্য প্রকাশ করতে গিয়েই ব্রুনোকে জীবন দিতে হয়েছিল, গ্যালিলিওকে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। তবু সেসব সত্য আজ গোটা বিশ্বে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার যে দীপ্ত সংগ্রাম অ্যাসাঞ্জ শুরু করেছেন তা নিশ্চয় জয়ী হবে। ওবামা ও তার প্রশাসন অন্যায় নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। অন্যায়ের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী।
মোহাম্মদ আলী : পুস্তক প্রকাশক
nanditaali@gmail.com
No comments