পদ্মা সেতু প্রকল্প: মালয়েশিয়ার প্রস্তাবের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ- ব্যয় বাড়বে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা by আনোয়ার হোসেন
মালয়েশিয়ার অর্থে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয় হবে। মালয়েশিয়ার দেওয়া প্রস্তাব এবং সেতু বিভাগের বিশ্লেষণ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, মালয়েশিয়ার অর্থে প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে খরচ হবে ৪১৭ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় প্রায় ৩৩ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা।
আর বিশ্বব্যাংকসহ দাতাদের অর্থে এই সেতু করতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার বা ২৩ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা।
প্রতি ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা ৮০ টাকা ধরলে নির্মাণ শুরুর আগে শুধু বিনিয়োগকারী বা অর্থায়ন পরিবর্তনেই ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে নয় হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
গত সোমবার মালয়েশিয়া পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবটি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ পর্যালোচনা করছে। সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, মালয়েশিয়া তাদের প্রস্তাবে মূল সেতু, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক নির্মাণ, সার্ভিস এলাকা নির্মাণে ২৮৭ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ের প্রস্তাব দিয়েছে।
এর বাইরে জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, পরামর্শক নিয়োগ, প্রকল্প কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা, ঋণের সুদ ও ভ্যাট-ট্যাক্সের ব্যয় যোগ হবে। মালয়েশিয়ার প্রস্তাব পাওয়ার পর সেতু বিভাগ হিসাব করে দেখেছে, এসব কাজে আরও খরচ হবে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ করা অর্থের ওপর সাড়ে ৬ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ৪১৭ কোটি মার্কিন ডলার। এ ছাড়া সেতু নির্মাণের পর রক্ষণাবেক্ষণ খাতেও ব্যয় হবে। সেটাও খরচের সঙ্গে যোগ হবে। পুরো অর্থই টোল হিসেবে আদায় করে নেবে মালয়েশিয়া। এর আগে দাতাদের অর্থে সেতু নির্মাণ, বেতন-ভাতা, জমি অধিগ্রহণ—সব ধরেই ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় ধরা হয়েছিল। সরকার ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ, যানবাহন ক্রয় ও বেতন-ভাতা বাবদ প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে। এই অর্থ মোট ব্যয় থেকে বাদ যাবে।
জানতে চাইলে সেতু বিভাগের সচিব খোন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ার দেওয়া প্রস্তাবই চূড়ান্ত নয়। আমরা প্রতিটি কাজের আলাদা আলাদা ব্যয়ের হিসাব করে প্রকৃত ব্যয় বের করব। কারিগরি কমিটি আলোচনা করবে। এতে কয়েক দিন লেগে যাবে। এরপর চূড়ান্ত কথা বলা যাবে।’
তবে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, মালয়েশিয়ার প্রস্তাব অনুযায়ী সেতু করলে ব্যয় বাড়বে না, বরং কমে যাবে।
সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়া তাদের প্রস্তাবে সেতু নির্মাণের কারিগরি দিক, ব্যয় এবং নির্মাণকালীন ও নির্মাণ-পরবর্তী সময়ের জন্য শুল্ক ও কর-সুবিধা চেয়ে বেশ কিছু কঠিন শর্ত দিয়েছে। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দাতাদের অর্থে সেতু নির্মাণের যে হিসাব করা হয়েছিল, তার সঙ্গে তুলনা করলে মালয়েশিয়ার প্রস্তাবটি খুবই উচ্চাভিলাষী এবং ব্যয়বহুল। শর্তগুলোও বেশ কঠিন।
এদিকে মালয়েশিয়ার প্রস্তাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে, প্রস্তাবটি কতটা বাস্তবসম্মত এবং দেশীয় স্বার্থ কতটা রক্ষা হয়, সেটি পর্যালোচনা করে তা প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার রাতে যোগাযোগমন্ত্রী, সেতু বিভাগের সচিব ও পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক বৈঠক করেছেন। গতকাল পদ্মা সেতু প্রকল্পের কর্মকর্তারা মালয়েশিয়ার প্রস্তাবের খুঁটিনাটি দিক বিশ্লেষণ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাতে একটি সারসংক্ষেপ তৈরির জন্য একাধিক বৈঠক করেন।
সেতু বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে আর মাত্র দুই দিন অর্থাৎ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় আছে। শেষ সময়ে মালয়েশিয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে সমাধানে আসা গেলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। সে জন্য মালয়েশিয়ার প্রস্তাবটির সারসংক্ষেপ করার উদ্যোগ নিয়েছে সেতু বিভাগ।
সূত্র আরও জানায়, মালয়েশিয়া তাদের প্রস্তাবে বলেছে, তিন বছরের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ ৩৫ বছরে তুলে নেবে তারা। সে ক্ষেত্রে সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন পারাপার করার বিনিময়ে যমুনা সেতুতে যে হারে টোল দিতে হয়, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দিতে হবে বলে সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বর্তমানে যমুনা সেতুতে বড় ট্রাকের (আট টনের ওপরে) টোল এক হাজার ৪০০ টাকা। মাঝারি ট্রাকের এক হাজার ১০০ এবং ছোট ট্রাকের টোল ৮৫০ টাকা। বড় বাসের (৩০ আসনের বেশি) ৯০০ এবং ছোট বাসের টোল নির্ধারিত আছে ৬৫০ টাকা। এ ছাড়া কার-জিপসহ হালকা যানের টোল ৫০০ টাকা এবং মোটরসাইকেলের ৪০ টাকা টোল ধার্য করা আছে।
পদ্মা সেতুর নকশাপ্রণেতা প্রতিষ্ঠান মনসেল একম নকশা প্রণয়নের পাশাপাশি সেতু নির্মাণ হলে ২০১৪ থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত কী পরিমাণ যানবাহন চলাচল করবে, এর একটা হিসাব দিয়েছে। যমুনা সেতুর সমান টোল আদায় করলে কী পরিমাণ যানবাহন চলবে এবং টোল দ্বিগুণ করলে কী পরিমাণ চলবে, সেটা আলাদা করে দেখিয়েছে মনসেল। সে হিসাব অনুযায়ী, টোল দ্বিগুণ হলে ২০১৪ সালে সেতু দিয়ে প্রতিদিন ছয় হাজার ৪৫২টি এবং যমুনা সেতুর সমান টোল হলে সাত হাজার ৮৩৫টি যানবাহন চলাচল করবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
টোল দ্বিগুণ ধরে ২০২০ সালে প্রতিদিন যানবাহন চলাচল করবে আনুমানিক ২১ হাজার ৭৬৩টি। ২০৩০ সালেও যদি বর্তমানে যমুনা সেতুতে যে হারে টোল আদায় হয় তার দ্বিগুণ হারে আদায় করা হয়, তাহলে ৩৬ হাজার ৫৮৭টি যানবাহন চলাচল করবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়া তাদের প্রস্তাবে অন্তত ৩০টি শর্ত দিয়েছে। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে মালয়েশিয়া টোল বাবদ যে আয় করবে তা আয়করমুক্ত রাখতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত বিদেশি কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতাও করমুক্ত করতে হবে। সেতু নির্মাণে যেসব যন্ত্রপাতি আমদানি করা হবে, সেগুলোর ভ্যাট-ট্যাক্স সরকারকে বহন করতে হবে। প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ৮০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ছয় হাজার ৪০০ কোটি টাকা জোগান দিতে হবে। সেতুর নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে থাকবে মালয়েশিয়ার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মালয়েশিয়ার প্রস্তাবের মূল বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয়েছে। এখন কারিগরি কমিটি বিচার-বিশ্লেষণ করে মতামত দেবে। প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
প্রতি ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা ৮০ টাকা ধরলে নির্মাণ শুরুর আগে শুধু বিনিয়োগকারী বা অর্থায়ন পরিবর্তনেই ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে নয় হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
গত সোমবার মালয়েশিয়া পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবটি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ পর্যালোচনা করছে। সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, মালয়েশিয়া তাদের প্রস্তাবে মূল সেতু, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক নির্মাণ, সার্ভিস এলাকা নির্মাণে ২৮৭ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ের প্রস্তাব দিয়েছে।
এর বাইরে জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, পরামর্শক নিয়োগ, প্রকল্প কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা, ঋণের সুদ ও ভ্যাট-ট্যাক্সের ব্যয় যোগ হবে। মালয়েশিয়ার প্রস্তাব পাওয়ার পর সেতু বিভাগ হিসাব করে দেখেছে, এসব কাজে আরও খরচ হবে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ করা অর্থের ওপর সাড়ে ৬ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ৪১৭ কোটি মার্কিন ডলার। এ ছাড়া সেতু নির্মাণের পর রক্ষণাবেক্ষণ খাতেও ব্যয় হবে। সেটাও খরচের সঙ্গে যোগ হবে। পুরো অর্থই টোল হিসেবে আদায় করে নেবে মালয়েশিয়া। এর আগে দাতাদের অর্থে সেতু নির্মাণ, বেতন-ভাতা, জমি অধিগ্রহণ—সব ধরেই ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় ধরা হয়েছিল। সরকার ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ, যানবাহন ক্রয় ও বেতন-ভাতা বাবদ প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে। এই অর্থ মোট ব্যয় থেকে বাদ যাবে।
জানতে চাইলে সেতু বিভাগের সচিব খোন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ার দেওয়া প্রস্তাবই চূড়ান্ত নয়। আমরা প্রতিটি কাজের আলাদা আলাদা ব্যয়ের হিসাব করে প্রকৃত ব্যয় বের করব। কারিগরি কমিটি আলোচনা করবে। এতে কয়েক দিন লেগে যাবে। এরপর চূড়ান্ত কথা বলা যাবে।’
তবে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, মালয়েশিয়ার প্রস্তাব অনুযায়ী সেতু করলে ব্যয় বাড়বে না, বরং কমে যাবে।
সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়া তাদের প্রস্তাবে সেতু নির্মাণের কারিগরি দিক, ব্যয় এবং নির্মাণকালীন ও নির্মাণ-পরবর্তী সময়ের জন্য শুল্ক ও কর-সুবিধা চেয়ে বেশ কিছু কঠিন শর্ত দিয়েছে। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দাতাদের অর্থে সেতু নির্মাণের যে হিসাব করা হয়েছিল, তার সঙ্গে তুলনা করলে মালয়েশিয়ার প্রস্তাবটি খুবই উচ্চাভিলাষী এবং ব্যয়বহুল। শর্তগুলোও বেশ কঠিন।
এদিকে মালয়েশিয়ার প্রস্তাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে, প্রস্তাবটি কতটা বাস্তবসম্মত এবং দেশীয় স্বার্থ কতটা রক্ষা হয়, সেটি পর্যালোচনা করে তা প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার রাতে যোগাযোগমন্ত্রী, সেতু বিভাগের সচিব ও পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক বৈঠক করেছেন। গতকাল পদ্মা সেতু প্রকল্পের কর্মকর্তারা মালয়েশিয়ার প্রস্তাবের খুঁটিনাটি দিক বিশ্লেষণ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাতে একটি সারসংক্ষেপ তৈরির জন্য একাধিক বৈঠক করেন।
সেতু বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে আর মাত্র দুই দিন অর্থাৎ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় আছে। শেষ সময়ে মালয়েশিয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে সমাধানে আসা গেলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। সে জন্য মালয়েশিয়ার প্রস্তাবটির সারসংক্ষেপ করার উদ্যোগ নিয়েছে সেতু বিভাগ।
সূত্র আরও জানায়, মালয়েশিয়া তাদের প্রস্তাবে বলেছে, তিন বছরের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ ৩৫ বছরে তুলে নেবে তারা। সে ক্ষেত্রে সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন পারাপার করার বিনিময়ে যমুনা সেতুতে যে হারে টোল দিতে হয়, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দিতে হবে বলে সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বর্তমানে যমুনা সেতুতে বড় ট্রাকের (আট টনের ওপরে) টোল এক হাজার ৪০০ টাকা। মাঝারি ট্রাকের এক হাজার ১০০ এবং ছোট ট্রাকের টোল ৮৫০ টাকা। বড় বাসের (৩০ আসনের বেশি) ৯০০ এবং ছোট বাসের টোল নির্ধারিত আছে ৬৫০ টাকা। এ ছাড়া কার-জিপসহ হালকা যানের টোল ৫০০ টাকা এবং মোটরসাইকেলের ৪০ টাকা টোল ধার্য করা আছে।
পদ্মা সেতুর নকশাপ্রণেতা প্রতিষ্ঠান মনসেল একম নকশা প্রণয়নের পাশাপাশি সেতু নির্মাণ হলে ২০১৪ থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত কী পরিমাণ যানবাহন চলাচল করবে, এর একটা হিসাব দিয়েছে। যমুনা সেতুর সমান টোল আদায় করলে কী পরিমাণ যানবাহন চলবে এবং টোল দ্বিগুণ করলে কী পরিমাণ চলবে, সেটা আলাদা করে দেখিয়েছে মনসেল। সে হিসাব অনুযায়ী, টোল দ্বিগুণ হলে ২০১৪ সালে সেতু দিয়ে প্রতিদিন ছয় হাজার ৪৫২টি এবং যমুনা সেতুর সমান টোল হলে সাত হাজার ৮৩৫টি যানবাহন চলাচল করবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
টোল দ্বিগুণ ধরে ২০২০ সালে প্রতিদিন যানবাহন চলাচল করবে আনুমানিক ২১ হাজার ৭৬৩টি। ২০৩০ সালেও যদি বর্তমানে যমুনা সেতুতে যে হারে টোল আদায় হয় তার দ্বিগুণ হারে আদায় করা হয়, তাহলে ৩৬ হাজার ৫৮৭টি যানবাহন চলাচল করবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়া তাদের প্রস্তাবে অন্তত ৩০টি শর্ত দিয়েছে। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে মালয়েশিয়া টোল বাবদ যে আয় করবে তা আয়করমুক্ত রাখতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত বিদেশি কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতাও করমুক্ত করতে হবে। সেতু নির্মাণে যেসব যন্ত্রপাতি আমদানি করা হবে, সেগুলোর ভ্যাট-ট্যাক্স সরকারকে বহন করতে হবে। প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ৮০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ছয় হাজার ৪০০ কোটি টাকা জোগান দিতে হবে। সেতুর নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে থাকবে মালয়েশিয়ার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মালয়েশিয়ার প্রস্তাবের মূল বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয়েছে। এখন কারিগরি কমিটি বিচার-বিশ্লেষণ করে মতামত দেবে। প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
No comments