মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে আন্দোলনের আহ্বানঃ দয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে বিকল্প থাকে না
মানবাধিকার লঙ্ঘন চরম আকার ধারণ করার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে হলে গণআন্দোলনের বিকল্প নেই বলে যে রব দিন দিন সরব হচ্ছে, তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করলে ব্যাপারটা অন্ধের প্রলয় বন্ধ করার চেষ্টার মতো দাঁড়াবে। গত বৃহস্পতিবারও সেন্টার ফর ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত মানবাধিকার সংলাপে বক্তারা বলেছেন, দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মহোত্সব চলছে।
মানবাধিকার রক্ষার অনুষঙ্গগুলোও দুর্বল হওয়ায় রাষ্ট্রীয়ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে জনগণ বাধ্য হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। বক্তারা ইডেন কলেজসহ সারাদেশে নারী নির্যাতন, বিচার বিভাগে আইনের শাসনের নড়বড়ে অবস্থা, বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সরকারের দলননীতি, সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা, বিডিআর ধ্বংসের ষড়যন্ত্র, সাংবাদিক নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তথ্য তুলে ধরে বলেছেন, দেশে এখন যা চলছে, সেটা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। রাষ্ট্রযন্ত্র যখন নিজে সন্ত্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, তখন দেশবাসী অসহায় বোধ করতে বাধ্য।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওই সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী এমকে আনোয়ার এমপি বলেছেন, সরকার পরিচালিত সন্ত্রাসের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে ভয়ভীতির মধ্যে রাখা। এক্ষেত্রে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না— এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেছেন, সংসদে কথা বলতে গেলে মাইক বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। আবার রাজপথেও কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না সরকার। আমার দেশ সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান বলেছেন, একটি রাষ্ট্রযন্ত্র যখন জালিমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, তখন তার রাশ টেনে ধরার জন্য প্রধানত চারটি গ্রুপকে সক্রিয় হতে হয়। এগুলো হলো বিচার বিভাগ, গণমাধ্যম, মানবাধিকার সংগঠন ও বিরোধী দল। হতাশার ব্যাপার হচ্ছে, এগুলো একটার পরিস্থিতিও আশাব্যঞ্জক নয়। বর্তমান সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গী বিচার বিভাগ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় অধিকাংশ মিডিয়া নিশ্চুপ। মানবাধিকার সংগঠনগুলো চোখ বুঁজে আছে। আবার বিরোধী দল দুর্বল। এতে সরকারের অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়বে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে হলে জনগণের সম্পৃক্ততায় গণঅভ্যুত্থান জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন বক্তার বক্তব্যে প্রায় অভিন্ন সুরে ফুটে উঠেছে দেশব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা দিক।
আসলেই দেশের পরিস্থিতি এখন শ্বাসরুদ্ধকর বললেও কম বলা হয়। রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্পেষণে মানুষ আজ দিশেহারা। গণতান্ত্রিক সমাজে ক্ষমতাসীন দল, বিরোদী দল, বিচার বিভাগ ও মিডিয়ার সমবেত তত্পরতায় যে ভারসাম্য বিরাজ করে, তা আজ পুরোপুরি হারিয়ে গেছে ‘গণতান্ত্রিক’ বাংলাদেশ থেকে। বহুমতের প্রকাশ দূরে থাকুক, এক মতের অনুসারীরাই নিজেদের মধ্যে খুনোখুনি করে নরক গুলজার করে তুলেছে। কলেজ ছাত্রীদের কারা কীভাবে ভোগ করবে, কাকে কাকে উপঢৌকন দেবে, কাদের কাছে ভাড়া দেবে, তা নিয়ে কোনো ছাত্র সংগঠনের প্রকাশ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা বাংলাদেশ এই প্রথম প্রত্যক্ষ করল। দিনবদলের প্রতীক হিসেবে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে যেভাবে টেন্ডারবাজি ও বিভিন্ন অংকের তোলা আদায় চলছে, তাও এদেশের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। সবচেয়ে বিচিত্র ব্যাপার হচ্ছে, মানবাধিকারের জন্য কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জনে অভ্যস্ত সংগঠনগুলো এসব দেখেশুনে একেবারেই চুপ। আর মিডিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বৈষ্ণব প্রেমে বিভোর হয়ে ‘মেরেছিস কলসির কানা, তাই বলে কি প্রেম দেব না’ বলে কীর্ত্তন ধরেছে।
কিন্তু একুশ শতকের বিশ্ব-বাস্তবতার সঙ্গে এ পরিস্থিতি যে মোটেও খাপ খায় না—এ কথা আমাদের মনে রাখতে হবে। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত পরিস্থিতির সংশোধন না হলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে গণশক্তির ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। তার অভিঘাতে অনেক কিছু, এমনকি সবকিছু ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রযন্ত্রের চরিত্র সংশোধন সবার জন্য মঙ্গল। তবে ‘চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী’ বলে একটা কথা দীর্ঘদিন ধরে চালু আছে। আমাদের বিপদ সেখানেই।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওই সংলাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী এমকে আনোয়ার এমপি বলেছেন, সরকার পরিচালিত সন্ত্রাসের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে ভয়ভীতির মধ্যে রাখা। এক্ষেত্রে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না— এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেছেন, সংসদে কথা বলতে গেলে মাইক বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। আবার রাজপথেও কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না সরকার। আমার দেশ সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান বলেছেন, একটি রাষ্ট্রযন্ত্র যখন জালিমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, তখন তার রাশ টেনে ধরার জন্য প্রধানত চারটি গ্রুপকে সক্রিয় হতে হয়। এগুলো হলো বিচার বিভাগ, গণমাধ্যম, মানবাধিকার সংগঠন ও বিরোধী দল। হতাশার ব্যাপার হচ্ছে, এগুলো একটার পরিস্থিতিও আশাব্যঞ্জক নয়। বর্তমান সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গী বিচার বিভাগ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় অধিকাংশ মিডিয়া নিশ্চুপ। মানবাধিকার সংগঠনগুলো চোখ বুঁজে আছে। আবার বিরোধী দল দুর্বল। এতে সরকারের অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়বে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে হলে জনগণের সম্পৃক্ততায় গণঅভ্যুত্থান জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন বক্তার বক্তব্যে প্রায় অভিন্ন সুরে ফুটে উঠেছে দেশব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা দিক।
আসলেই দেশের পরিস্থিতি এখন শ্বাসরুদ্ধকর বললেও কম বলা হয়। রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্পেষণে মানুষ আজ দিশেহারা। গণতান্ত্রিক সমাজে ক্ষমতাসীন দল, বিরোদী দল, বিচার বিভাগ ও মিডিয়ার সমবেত তত্পরতায় যে ভারসাম্য বিরাজ করে, তা আজ পুরোপুরি হারিয়ে গেছে ‘গণতান্ত্রিক’ বাংলাদেশ থেকে। বহুমতের প্রকাশ দূরে থাকুক, এক মতের অনুসারীরাই নিজেদের মধ্যে খুনোখুনি করে নরক গুলজার করে তুলেছে। কলেজ ছাত্রীদের কারা কীভাবে ভোগ করবে, কাকে কাকে উপঢৌকন দেবে, কাদের কাছে ভাড়া দেবে, তা নিয়ে কোনো ছাত্র সংগঠনের প্রকাশ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা বাংলাদেশ এই প্রথম প্রত্যক্ষ করল। দিনবদলের প্রতীক হিসেবে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে যেভাবে টেন্ডারবাজি ও বিভিন্ন অংকের তোলা আদায় চলছে, তাও এদেশের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। সবচেয়ে বিচিত্র ব্যাপার হচ্ছে, মানবাধিকারের জন্য কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জনে অভ্যস্ত সংগঠনগুলো এসব দেখেশুনে একেবারেই চুপ। আর মিডিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বৈষ্ণব প্রেমে বিভোর হয়ে ‘মেরেছিস কলসির কানা, তাই বলে কি প্রেম দেব না’ বলে কীর্ত্তন ধরেছে।
কিন্তু একুশ শতকের বিশ্ব-বাস্তবতার সঙ্গে এ পরিস্থিতি যে মোটেও খাপ খায় না—এ কথা আমাদের মনে রাখতে হবে। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত পরিস্থিতির সংশোধন না হলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে গণশক্তির ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। তার অভিঘাতে অনেক কিছু, এমনকি সবকিছু ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রযন্ত্রের চরিত্র সংশোধন সবার জন্য মঙ্গল। তবে ‘চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী’ বলে একটা কথা দীর্ঘদিন ধরে চালু আছে। আমাদের বিপদ সেখানেই।
No comments