পদ্মা সেতু- বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত by ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোকে প্রায়ই এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় যে বাংলাদেশের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবেশে ঋণ-সহায়তার কাজ কীভাবে করা যায়। সহজ শর্তে দেওয়া ঋণের অর্থ যেন দুর্নীতির কারণে অপচয় না হয়, সেদিকে দাতাদের আন্তরিক উদ্বেগ কাজ করে বটে, কিন্তু তারা এই সমস্যা মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে পূর্বাপর সংগতি খুব কমই দেখা গেছে।
দৃষ্টান্তস্বরূপ, বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতার পরিমাণ কখনো বেড়েছে, কখনো কমেছে এবং এই হ্রাস-বৃদ্ধি নির্ভর করেছে বাংলাদেশের পরিচালন পদ্ধতির (গভর্ন্যান্স) সমস্যাগুলো মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংকের কৌশলের ওপর। ১৯৯০ দশকের শেষের দিকে একটা পর্যায়ে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতা হ্রাস পেতে পেতে প্রায় শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছিল, কারণ অবকাঠামো ও জ্বালানিসহ অনেক খাতে সুশাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নীতি-সংস্কারের অভাবে বিশ্বব্যাংক ক্রমেই অর্থায়ন হ্রাস করেছিল। কিন্তু তারপর বিশ্বব্যাংক অবস্থান পরিবর্তন করে, সংস্কারের অপেক্ষায় সমস্যাকীর্ণ খাতগুলোতে অর্থায়ন থেকে বিরত থাকার পরিবর্তে সেসব খাতে কাজ করার পক্ষে অবস্থান নেয়। অতি সাম্প্রতিক কালে পদ্মা সেতু প্রকল্পে প্রস্তাবিত অর্থায়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাংকের অবস্থান আবারও পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যায়। এবার মনে হয়, বিশ্বব্যাংক কথিত দুর্নীতির বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে।
নিম্ন আয়ের প্রায় ৮০টি দেশ রয়েছে, যারা বিশ্বব্যাংকের সহজ শর্তের ঋণ-সহায়তা শাখা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সমিতির (আইডিএ) ঋণ পাওয়ার যোগ্য। সেসব দেশের মধ্যে আইডিএর ঋণ বরাদ্দ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক তার দেশভিত্তিক নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যায়ন বা কান্ট্রি পলিসি অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল অ্যাসেসমেন্টের (সিপিআইএ) ভিত্তিতে তৈরি করা একটি সংখ্যাগত মূল্যায়ন পদ্ধতি (নিউম্যারিক্যাল কান্ট্রি রেটিং সিস্টেম) ব্যবহার করে। সময়ে সময়ে মূল্যায়নের মানদণ্ড পরিবর্তিত হয়েছে, প্রধানত সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা থেকে সরে এসে ক্রমেই বেশি করে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে সুশাসনসংক্রান্ত সূচকগুলোর দিকে। ফলে কোন দেশের জন্য কী পরিমাণ ঋণ বরাদ্দ করা হবে, তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এখন সুশাসনের বিষয়টিই প্রধান নির্ধারক হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা সিপিআইএর ভিত্তিতে আইডিএর অর্থ বরাদ্দ করার বিষয়টির সমালোচনা করেন। কারণ, এতে সুশাসনের ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো একধরনের অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে পড়েছে। সর্বোপরি, বাংলাদেশ প্রকল্প বাস্তবায়নসংক্রান্ত সমস্যার কারণে সিপিআইএর মূল্যায়নের ভিত্তিতে বরাদ্দকৃত আইডিএর তহবিল এখনো পুরোপুরি লাভ করার সুযোগ পায়নি। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার উভয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ঋণের অর্থ ব্যবহারের এমন পদ্ধতি নির্ধারণ করা, যার মধ্য দিয়ে সরকার বরাদ্দকৃত অর্থের পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পারবে এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশের সিপিআইএ রেটিং বাড়ানোরও চেষ্টা করবে। এসব লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত অর্থ একটি বড় সুযোগ, এর দায়িত্ব উভয় পক্ষের।
সরকারের উপলব্ধি করা প্রয়োজন, আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের যে ভাবমূর্তি, তাতে দুর্নীতির চিত্রে আমাদের অবস্থান ভালো নয়, কিন্তু স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অনেক সামাজিক উন্নয়ন সূচকে আমাদের অবস্থান ভালো। আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রবল প্রতিযোগিতার এই যুগে যেকোনো তালিকার শীর্ষে স্থান করে নেওয়া সহজ কাজ নয়। দৃষ্টান্তস্বরূপ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকের তালিকায় সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর সারির প্রথম দিকে স্থান পেতে হলে অনেক সরকারি সংস্থার মধ্যে চমৎকার কর্মসমন্বয়ের প্রয়োজন। পদ্মা সেতু প্রকল্প আসলে আমাদের জন্য একটি সুযোগ। এই প্রকল্প আমাদের ভাবার সুযোগ করে দিয়েছে যে কীভাবে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে নিজেদের উপস্থাপন করব এবং কীভাবে অর্থনৈতিক কূটনীতিতে আত্মনিয়োগ করব। স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে কাজ করার মধ্য দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উন্নত করার একটি বড় সুযোগ এসেছে আমাদের সামনে। অস্বীকার করার মানসিকতা এ ক্ষেত্রে আমাদের সহায়ক হবে না।
নিজেদের সম্পদ ব্যবহার করে পদ্মা সেতু নির্মাণের সামর্থ্য হয়তো আমাদের আছে। কিন্তু তাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে আমাদের ভাবমূর্তির উন্নতি ঘটবে না, বরং আরও অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। মধ্য আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করতে হলে আমাদের অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎস থেকে শত শত কোটি ডলারের সম্পদ আহরণ করতে হবে। চীন ও ভারত বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ঋণ নেওয়ার পরও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বিপুল অঙ্কের আইডিএ ঋণ-সহায়তা পেয়ে থাকে। ভিয়েতনামও বর্তমানে
বার্ষিক প্রায় ২০০ কোটি ডলার আইডিএ ঋণ পাচ্ছে, যা বাংলাদেশের প্রাপ্ত ঋণ-সহায়তার দ্বিগুণেরও বেশি। অথচ ভিয়েতনাম একটি মধ্য আয়ের দেশ, যার লোকসংখ্যা বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক।
বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলোর প্রসঙ্গে বলতে হয়, শুধু ধারণার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বরং তথ্য-উপাত্ত ও সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। ২০০৬-০৯ সময়কালের জন্য বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি অ্যাসিস্ট্যান্স স্ট্র্যাটেজি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় (এবং শুধু আইডিএর ঋণগ্রহীতা সব দেশের মধ্যে) বাংলাদেশের প্রকল্প বাস্তবায়নের চিত্র গড়পড়তা ভালো ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পের হার বা সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত প্রকল্পের ভিত্তিতে ওই মূল্যায়ন করা হয়েছিল। অস্বীকার করার কিছু নেই যে বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুতর সুশাসনগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবু দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঋণ-সহায়তার অবদানের বিবেচনায় বাংলাদেশের ঋণপ্রাপ্তির যোগ্যতা অনেক বেশি।
একদিকে বাংলাদেশকে আরও স্বনির্ভর হওয়া শিখতে হবে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে রয়েছে উন্নয়নের লক্ষ্যগুলো অর্জনে দেশটিকে সহযোগিতা করার চ্যালেঞ্জ। এই আলোকেই বিশ্বব্যাংকের উচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা।
ইংরেজি থেকে অনূদিত।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ: অর্থনীতিবিদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
নিম্ন আয়ের প্রায় ৮০টি দেশ রয়েছে, যারা বিশ্বব্যাংকের সহজ শর্তের ঋণ-সহায়তা শাখা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সমিতির (আইডিএ) ঋণ পাওয়ার যোগ্য। সেসব দেশের মধ্যে আইডিএর ঋণ বরাদ্দ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক তার দেশভিত্তিক নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যায়ন বা কান্ট্রি পলিসি অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল অ্যাসেসমেন্টের (সিপিআইএ) ভিত্তিতে তৈরি করা একটি সংখ্যাগত মূল্যায়ন পদ্ধতি (নিউম্যারিক্যাল কান্ট্রি রেটিং সিস্টেম) ব্যবহার করে। সময়ে সময়ে মূল্যায়নের মানদণ্ড পরিবর্তিত হয়েছে, প্রধানত সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা থেকে সরে এসে ক্রমেই বেশি করে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে সুশাসনসংক্রান্ত সূচকগুলোর দিকে। ফলে কোন দেশের জন্য কী পরিমাণ ঋণ বরাদ্দ করা হবে, তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এখন সুশাসনের বিষয়টিই প্রধান নির্ধারক হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা সিপিআইএর ভিত্তিতে আইডিএর অর্থ বরাদ্দ করার বিষয়টির সমালোচনা করেন। কারণ, এতে সুশাসনের ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো একধরনের অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে পড়েছে। সর্বোপরি, বাংলাদেশ প্রকল্প বাস্তবায়নসংক্রান্ত সমস্যার কারণে সিপিআইএর মূল্যায়নের ভিত্তিতে বরাদ্দকৃত আইডিএর তহবিল এখনো পুরোপুরি লাভ করার সুযোগ পায়নি। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার উভয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ঋণের অর্থ ব্যবহারের এমন পদ্ধতি নির্ধারণ করা, যার মধ্য দিয়ে সরকার বরাদ্দকৃত অর্থের পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পারবে এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশের সিপিআইএ রেটিং বাড়ানোরও চেষ্টা করবে। এসব লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত অর্থ একটি বড় সুযোগ, এর দায়িত্ব উভয় পক্ষের।
সরকারের উপলব্ধি করা প্রয়োজন, আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের যে ভাবমূর্তি, তাতে দুর্নীতির চিত্রে আমাদের অবস্থান ভালো নয়, কিন্তু স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অনেক সামাজিক উন্নয়ন সূচকে আমাদের অবস্থান ভালো। আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রবল প্রতিযোগিতার এই যুগে যেকোনো তালিকার শীর্ষে স্থান করে নেওয়া সহজ কাজ নয়। দৃষ্টান্তস্বরূপ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকের তালিকায় সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর সারির প্রথম দিকে স্থান পেতে হলে অনেক সরকারি সংস্থার মধ্যে চমৎকার কর্মসমন্বয়ের প্রয়োজন। পদ্মা সেতু প্রকল্প আসলে আমাদের জন্য একটি সুযোগ। এই প্রকল্প আমাদের ভাবার সুযোগ করে দিয়েছে যে কীভাবে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে নিজেদের উপস্থাপন করব এবং কীভাবে অর্থনৈতিক কূটনীতিতে আত্মনিয়োগ করব। স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে কাজ করার মধ্য দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উন্নত করার একটি বড় সুযোগ এসেছে আমাদের সামনে। অস্বীকার করার মানসিকতা এ ক্ষেত্রে আমাদের সহায়ক হবে না।
নিজেদের সম্পদ ব্যবহার করে পদ্মা সেতু নির্মাণের সামর্থ্য হয়তো আমাদের আছে। কিন্তু তাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে আমাদের ভাবমূর্তির উন্নতি ঘটবে না, বরং আরও অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। মধ্য আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করতে হলে আমাদের অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎস থেকে শত শত কোটি ডলারের সম্পদ আহরণ করতে হবে। চীন ও ভারত বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ঋণ নেওয়ার পরও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বিপুল অঙ্কের আইডিএ ঋণ-সহায়তা পেয়ে থাকে। ভিয়েতনামও বর্তমানে
বার্ষিক প্রায় ২০০ কোটি ডলার আইডিএ ঋণ পাচ্ছে, যা বাংলাদেশের প্রাপ্ত ঋণ-সহায়তার দ্বিগুণেরও বেশি। অথচ ভিয়েতনাম একটি মধ্য আয়ের দেশ, যার লোকসংখ্যা বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক।
বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলোর প্রসঙ্গে বলতে হয়, শুধু ধারণার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বরং তথ্য-উপাত্ত ও সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। ২০০৬-০৯ সময়কালের জন্য বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি অ্যাসিস্ট্যান্স স্ট্র্যাটেজি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় (এবং শুধু আইডিএর ঋণগ্রহীতা সব দেশের মধ্যে) বাংলাদেশের প্রকল্প বাস্তবায়নের চিত্র গড়পড়তা ভালো ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পের হার বা সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত প্রকল্পের ভিত্তিতে ওই মূল্যায়ন করা হয়েছিল। অস্বীকার করার কিছু নেই যে বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুতর সুশাসনগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবু দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঋণ-সহায়তার অবদানের বিবেচনায় বাংলাদেশের ঋণপ্রাপ্তির যোগ্যতা অনেক বেশি।
একদিকে বাংলাদেশকে আরও স্বনির্ভর হওয়া শিখতে হবে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে রয়েছে উন্নয়নের লক্ষ্যগুলো অর্জনে দেশটিকে সহযোগিতা করার চ্যালেঞ্জ। এই আলোকেই বিশ্বব্যাংকের উচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা।
ইংরেজি থেকে অনূদিত।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ: অর্থনীতিবিদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
No comments