পাঠকের মন্তব্য: অনলাইন থেকে-ভালো সিদ্ধান্তের জন্যবিসিবিকে ধন্যবাদ

প্রথম আলোর অনলাইনে (prothom-alo.com) প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলা, প্রযুক্তি ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে পাঠকের মতামত প্রকাশিত হয়। তাঁদের এই মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষর‌্যা সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।


বিশ্রাম পেলেন সাকিব
জিম্বাবুয়ে সফরে যাওয়ার পরিবর্তে বিশ্রাম চেয়ে আবেদন করেছিলেন সাকিব আল হাসান। এ সম্পর্কে রাশেদ লিখেছেন: বিসিবিকে ধন্যবাদ একটা ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।
কামরুল: টেন্ডুলকার কোনো দিন ক্লাব ক্রিকেট খেলে এসে জাতীয় দলে না খেলার জন্য বিশ্রাম চাননি। এখানেই গুড স্পোর্টসম্যান আর গ্রেট স্পোর্টসম্যানের পার্থক্য। আমাদের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই দেশের স্বার্থকে নিজের স্বার্থের ওপর ভাবতে শেখেননি। কলকাতায় খেলে এসে, দেশে এই গরমে তিনটি ৫০ ওভারের খেলা খেলে সাকিব দেশের জন্য খেলতে ক্লান্ত। জিম্বাবুয়ের এই সফরটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মোল্লা বাবুল: খুবই ভালো খবর। একটা ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। সাকিবের আবেদন বিবেচনা করে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আমার মনে হয়, এই ছুটিটা সাকিবের খুব দরকার ছিল। দুই বছর ধরে তিনি যে রকম একটানা ক্রিকেট খেলছেন, খেলতে খেলতে আসলেই একটু ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট লিজেন্ড সাকিব আল হাসান, যাঁর হাত ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রতিটি কোনে বাংলাদেশ ঠিকানা করে নিচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠার অনন্য এক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজেকে নিজেই হারিয়ে দেন সাকিব।

সাহিত্যের সীমানা ও আদালতের দায়
হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশিতব্য দেয়াল উপন্যাস নিয়ে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, সে বিষয়ে গত শনিবার সাজ্জাদ শরিফ এক উপসম্পাদকীয়তে তাঁর সুচিন্তিত মতামত তুলে ধরেছেন। এ সম্পর্কে প্রথম আলোর পাঠকেরাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেছেন। এসরার: সাজ্জাদ সাহেব কী বলতে চাচ্ছেন? স্পর্শকাতর ঐতিহাসিক চরিত্র উপন্যাসে ঢোকানো হবে তাদের প্রকৃত ভূমিকা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবহিত না হয়ে? জনগণ কি ধরে ধরে রেফারেন্স চেক করবেন, নাকি যা লেখা হবে, তা দিয়ে প্রভাবিত হবেন? কাদম্বরী দেবী কীভাবে মারা গেলেন, তা নিয়ে সুনীল গাঙ্গুলি হয়তো একটা বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে লিখতে পারেন। কারণ সেখানে কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুর বেদনাটি সবচেয়ে বড় সত্য। শেখ মুজিব কীভাবে মারা গেলেন বা স্বাধীনতার সময় বুদ্ধিজীবীরা কীভাবে মারা গেলেন, এসব বিষয়ে প্রকৃত সত্য জানাটাই সবচেয়ে বড় সত্য। সব সত্য প্রতিষ্ঠিত হোক, সব ধুলো মাটিতে জমা হোক, তার পর লেখেন। এখন উপন্যাসের নামে আবোলতাবোল ইতিহাস লিখলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি। আপনি বরং কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে ঐতিহাসিক উপন্যাস লেখেন। একটা-দুটো ভুল হলে কেউ কিছু মনে করবেন না। কারণ ওনার পরিচয় ওনার লেখায়, কখন কী করেছেন, তাতে নয়।
কাজী জহিরুল ইসলাম: তার মানে, লেখক চাইলে একটু এগিয়ে গিয়ে তাঁর গল্পে ইতিহাসকে নতুনভাবে পুনর্লিখনও করার অধিকার রাখেন! তাহলে তো যেকোনো কিছুই সম্ভব। সে ক্ষেত্রে সেটা সত্যিকারের ইতিহাস না হয়ে সেই লেখাটি যে একটি ফিকশন হবে, তা বোঝার ক্ষমতা আপনার মতো কবি ও সাহিত্যিকের কি আছে?
আরেকটি কথা জানতে চাইছি, এই লেখকের মাপকাঠি কী? এই লেখক হিসেবে আপনি কাদের বা কাকে বিবেচনা করছেন? আমি নিজে লেখালেখি করি আজ অনেক বছর। কিন্তু লেখক, কবি বা সাহিত্যিকদের সম পর্যায়ে নিজেকে কখনো ভাবিনি। আপনি যদি আমার মতো অর্বাচীনকেও লেখক হিসেবে আখ্যা দেন, তাহলে আজকে থেকেই আমি ইতিহাস একটু এগিয়ে নিয়ে লিখতে চাই! লেখক হিসেবে স্বীকৃতি পাব কি?
তাহসিনা হোসাইন: সৃষ্টিশীলতা কোনো অর্গলে বাঁধার বিষয় নয়। ইতিহাস, সাহিত্য, সমাজাচার—মাধ্যমগুলো সীমানা নির্ধারণ মেনে চলে না। যদি চলত, তবে আর মুক্তির কোনো পথ থাকত না। থেমে যেত সৃষ্টিসুখের সকল অহংকার। সুলিখিত, বিষয়ানুগ, সুখপাঠ্য নিবন্ধ।
শাকিব আসহাব: ‘তাহাই সত্য/যাহা রচিবে তুমি,/ঘটে যাহা তাহা সব সত্য নহে।/ কবি, তব মনভূমি রামের জন্মস্থান,/ অযোধ্যার চেয়েও সত্য জেনো।’—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বলা হয়ে থাকে, যা ঘটে গেছে, তা বিধাতা পরিবর্তন করতে পারেন না কিন্তু ইতিহাসবিদেরা চাইলে পারেন। গল্পকার তো পারেনই। অন্তত রবীন্দ্রনাথ তো সে রকমটাই ইঙ্গিত করেছেন। ইতিহাস হচ্ছে কঙ্কাল আর গল্প হলো রক্ত-মাংস। গল্পের পাঠকেরা ইতিহাসকে নিরসভাবে যেটা যেভাবে যেখানে ঘটেছে, হুবহু সেটা সেভাবে সেখানে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা হিসেবে দেখতে চান না। তাই যদি হতো, তাহলে আদালত যেসব নথি আর দলিল দস্তাবেজ দেখে দেয়াল উপন্যাস সংশোধনের কথা বলেছেন, কোনো প্রকাশনী সংস্থা সেগুলোকেই বাঁধাই করে বাজারে ছেড়ে দিলেই পারত। তবে সেটা আর উপন্যাস হতো না। ঘটে যাওয়া ঘটনার ছায়া অবলম্বনে লেখা হলেও উপন্যাসে থাকে নাটকীয়তা, কিছুটা কল্পনা। মানে কিছুটা ফিকশন। সায়েন্সের ওপর ভিত্তি করে যেমন ‘সায়েন্স ফিকশন’ হয়, সে রকম ইতিহাসকে ঘিরে ‘হিস্ট্রি ফিকশন’। সে ক্ষেত্রে হিস্ট্রি ফিকশনের সার্থকতা নির্ভর করে লিখিত গল্পে মূল ঘটনার ছায়া কতটুকু আছে, তার ওপর।
ভালো কথা, যারা দেয়াল নিয়ে উর‌্যাসাহী, তারা শাহাদুজ্জামানের ক্রাচের কর্নেল উপন্যাসটা পড়ে দেখতে পারেন।

বিচারপতির মন্তব্য সম্পর্কে রুলিং দেবেন স্পিকার
উচ্চ আদালত ও সংসদ নিয়ে সম্প্রতি যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সে সম্পর্কে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয় গত শুক্রবার। এ বিষয়ে আবদুল মজিদ কাজী লিখেছেন: আমাদের দেশে রাষ্ট্রদ্রোহ শব্দটা এত হালকা আর গুরুত্বহীন হয়ে গেছে যে কথায় কথায় যেকোনো ব্যক্তির উক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহ আখ্যা দেওয়া হয়। একজন বিচারপতি যদি এর পার্থক্য নির্ণয়ে অপারগ হন, তাহলে অন্যরা তা যথায়-তথায় ব্যবহার করলে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।
কামাল: রাষ্ট্রদ্রোহ কথাটার সংজ্ঞা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমলে দেশপ্রেমিকদের রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ফাঁসানো হতো। আমরা তো এখন স্বাধীন। এ দেশেও মতামত দিলে যদি রাষ্ট্রদ্রোহ নামক ভয়ংকর বিষয়ে দায়ী হতে হয় দেশের জাতীয় সংসদের স্পিকারকে, তাহলে আমরা সাধারণ নাগরিকেরা তো কথাই বলতে পারব না। এর আগেও আদালত অবমাননার কথা বলে অনেককেই এমন করা হয়েছে।
আবুল কাশেম: আমি যত দূর জানি, শুধু সিটি জরিপেই সড়ক ভবনের জায়গাটি সুপ্রিম কোর্টের নামে রেকর্ড হয়েছে। এসএ রেকর্ডে ওই জমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে রেকর্ড। আর টেকনিক্যাল রুলসের রুল নম্বর ৩৯১ অনুসারে রেকর্ডের ভিত্তি সরেজমিন দখল। যদি সরেজমিন দখল কারও থাকে, তবে দখলের পক্ষে কোনো দলিলাদি না থাকে, তবে খতিয়ানের ৯ নম্বর কলামে ‘জবর দখল’ কথাটি লেখা হয়। অতএব আমাদের জানা প্রয়োজন, সুপ্রিম কোর্ট কি মূলে সড়ক ভবনের বর্তমান অবস্থানের সম্পত্তির মালিক হলো?
আর একটি কথা সত্যি। একজন বিচারপতি তাঁর শপথবাক্য কতটা পরিপালন করেন, তা যাচাই করবার এখতিয়ার জনগণের পক্ষে সংসদের থাকা উচিত। সুপ্রিম কোর্টটি বসেছে এ দেশের মানুষের বিচার-আচার করার জন্য এবং বসেছে এ দেশের মানুষের দ্বারা। অতএব কোনো কোর্ট সবকিছুর ঊর্ধ্বে নয়। জবাবদিহি সবার প্রয়োজন।

সাহারার ‘মাতৃভূমি’ উন্নয়ন
বাংলাদেশে ভারতের সাহারা শিল্পগোষ্ঠীর বিনিয়োগ নিয়ে গতকাল রোববার লিখেছেন এ কে এম জাকারিয়া। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হাসান উল্লাহ লিখেছেন: ঢাকায় একটা হোটেল বানাতে লাগে ৫০০ কোটি টাকা। সাহারা ৮০০ কোটি টাকায় একটা ঢাকা শহর বানিয়ে ফেলবে?
মাহতাফ হোসাইন: আবাসন খাতে বিতর্কিত বিদেশি বিনিয়োগকারী আনার চেয়ে দেশি বিনিয়োগকারীদের সুযোগ-সুবিধা এবং পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানে সরকারের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
নাসের বাবু: যে কোম্পানি তার নিজ দেশের কাছেই (ভারত) প্রশ্নবিদ্ধ, তাদের আবার আমাদের দেশে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসার কোনো যুক্তি দেখি না। খাল কেটে কুমির আনার কথা শুনেছি কিন্তু এবার সেটা সত্যি সত্যি দেখতে পাচ্ছি!
(পাঠকের মতামত বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন prothom-alo.com)

No comments

Powered by Blogger.