ভারতের পুবে তাকাও নীতি ও মিয়ানমার by মনমোহন সিং
ইয়াঙ্গুনে মিয়ানমার বাণিজ্য ও শিল্প সমিতি এবং মিয়ানমার উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আয়োজিত 'ভারত ও মিয়ানমার : সমৃদ্ধি ও আঞ্চলিক উন্নয়নের এক অংশীদারিত্ব' শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের ভাষণ_
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের গত বছরের ভারত সফর দু'দেশের মধ্যে সহযোগিতার এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের গত বছরের ভারত সফর দু'দেশের মধ্যে সহযোগিতার এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
ভারত ও মিয়ানমারের সাংস্কৃতিক এবং সভ্যতাগত বন্ধন যুগপুরনো। বণিক, সাধক ও সওদাগররা একে অপরের সঙ্গে প্রভাব ও প্রথা বিনিময় করেছেন। আমাদের স্বাধীনতার আন্দোলনের সময় আমাদের নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতা সংগ্রাম বিষয়ক ধারণা ও চিন্তা বিনিময় করেছিলেন। মহাত্মা গান্ধী বেশ কয়েকবার মিয়ানমার সফর করেছেন এবং তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, মিয়ানমারের নারীদের স্বাধীনতা ও কর্মোদ্যম দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন। লোকমন্য তিলক ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের মতো ভারতের মহান নেতৃবৃন্দ মিয়ানমারের কারাগারে দীর্ঘকাল অবস্থান করেছিলেন।
ভারতের 'পুবে তাকাও' নীতির খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মিয়ানমার, ভারত ও চীনের মধ্যে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সেতুর ভূমিকা পালনে একেবারে সঠিক অবস্থানে রয়েছে। একটি আঞ্চলিক অর্থনীতি গঠনে আমাদের একত্রে কাজ করা উচিত, যা এই অঞ্চলের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও যোগাযোগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে। অর্থনৈতিক সমন্বয় সাধনের জন্য শ্রেয়তর যোগাযোগ হলো শ্রেষ্ঠ পন্থা এবং তার থেকেও অনেক বেশি আমরা করতে পারি যোগাযোগের পুরনো শাখা-প্রশাখাগুলোকে সচল করে ও নতুন পথ সৃষ্টি করে। বেশ কয়েকটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করতে দু'দেশের সরকার সম্মত হয়েছে। আশা করি খুবই প্রতীকী ত্রিদেশীয় মহাসড়কের নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে সমাপ্ত হবে, যা ভারত-মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডকে সংযুক্ত করবে। ভারত কালাদান বহুমুখী পরিবহন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার মধ্যে রয়েছে সিত্তে বন্দরের আধুনিকায়ন এবং চিন প্রদেশের পালেত্তা শহরের সঙ্গে মিজোরাম প্রদেশের ভারতীয় সীমান্তকে সংযুক্ত করার জন্য একটি মহাসড়ক নির্মাণ।
বিমসটেক ও মেকং গঙ্গা সহযোগিতার মতো উদ্যোগগুলো বর্ধিত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সংযোগের জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করে দেয়। মিয়ানমারের সরকার আমাদের সীমান্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দুটি এলাকা সাগাইন অঞ্চলের নাগা স্বশাসিত এলাকা এবং চিন প্রদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহায়তার জন্য আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরা কয়েকটি সীমান্ত হাট স্থাপনের ব্যাপারে একমত হয়েছি, যার সূচনা হবে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও মিয়ানমারের সাগাইন প্রদেশের সীমান্তবর্তী পাংসাউয়ে। আমরা সীমান্ত অবকাঠামো উন্নয়নেও কাজ করছি।
ভারতীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো মিয়ানমারের প্রতি দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে। আমাদের অর্থনীতির পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে, আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সহায়তা করতে হবে। আর্থিক লেনদেন সহজ করার জন্য দ্বিপক্ষীয় ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের মোট বাণিজ্য ২০১৫ সালের মধ্যে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের বাণিজ্যের ঝোলায় আরও বৈচিত্র্য আনা দরকার। ভারত আরও বেশি করে কৃষিজাত পণ্য, কয়লা ও অন্যান্য খনিজসম্পদ আমদানি করতে পারে এবং ভারী শিল্পবিষয়ক উপাদান, রাসায়নিক দ্রব্যাদি, ওষুধপত্র এবং কাপড় রফতানি করতে পারে। সহযোগিতার জন্য জ্বালানি একটি বিরাট সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। তেল ক্ষেত্রে আমাদের দু'দেশের দীর্ঘ ঐতিহাসিক সহযোগিতার অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা সেই বার্মা শেলের দিনগুলো থেকে চলে আসছে। ভারতের জ্ঞাত তেলের মজুদ রয়েছে দেশটির উত্তর-পশ্চিম অংশে এবং তার সঙ্গে সংযুক্ত উত্তর ও পশ্চিম মিয়ানমারের ভূপ্রকৃতি একই রকম। আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ জ্বালানি অংশীদারির ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতার উন্নয়ন ঘটাতে পারি।
কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতায় ভালোই উন্নতি হচ্ছে। আমরা নায়পেইতাওয়ের কাছে একটি কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা বিষয়ক আধুনিক কেন্দ্র স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এই কেন্দ্র উভয় দেশের আগ্রহের শস্য নিয়ে কাজ করবে, যার মধ্যে রয়েছে ধান, ডাল ও তেলবীজ এবং সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে। আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতাও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, যা কেবল আমাদের স্থল সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেই সঙ্গে সমুদ্র পথে বাণিজ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও জরুরি। আমরা আশা করি, কলকাতা ও সিত্তের মধ্যে সমুদ্রপথ স্থাপনের মাধ্যমেই তা শুরু হবে। পারস্পরিক স্বার্থে আঞ্চলিক ফোরামগুলোতে আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা মিয়ানমারকে আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্বের স্থানে দেখতে চাই, যেহেতু তারা এই বছর বিমসটেক সম্মেলন এবং ২০১৪ সালে আসিয়ান সম্মেলনের স্বাগতিক।
আমার অং সান সু চির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ হয়েছে। তিনি একজন দেশপ্রেমিক নারী। আমি আশা করি, এ সুন্দর দেশটিতে যে পরিবর্তন ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলছে, তিনি তাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবেন। আমরা উদ্ভাসিত যে, তিনি সম্মানজনক নেহরু স্মৃতি বক্তৃতা দিতে সম্মত হয়েছেন। মিয়ানমারের জনগণের একটি প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র গঠন, সব আদিবাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে একত্রে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পাদন ও অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পুনর্গঠনের অগ্রযাত্রায় ভারতের জনগণ তাদের মঙ্গল কামনা করে। গণতন্ত্রের পথ অবশ্যই মিয়ানমারের অনন্য ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রয়োজনানুসারে গড়ে উঠবে এবং তা হবে স্থানীয় প্রতিভা ও জনগণের ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে। ভারতে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ আলাপ-আলোচনা হলো সত্যিকার সমন্বয় সাধনের সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমঝোতায় আসতে পারার জন্য আমি মিয়ানমার সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। তাদের এখন পুরোপুরি গণতান্ত্রিক পথ অবলম্বন করা উচিত এবং দেশের উন্নয়নে সক্রিয় অংশীদার হয়ে ওঠা উচিত। অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পথ প্রায়ই বিতর্কিত এবং খুব কমই অনায়াস হয়ে থাকে। উন্মুক্ত অর্থনীতিতে প্রবেশের পথে, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অংশগুলোকে সাহায্য করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাবলি গ্রহণ করা প্রয়োজন, যারা এখনও পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ও বিশ্বায়নের সুফল ভোগ করার মতো ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেনি। স্থানীয় সম্প্রদায় ও আধুনিকায়নের প্রক্রিয়ায় স্থানচ্যুত মানুষের প্রয়োজনকে বড় করে দেখতে হবে। আমাদের এমন কিছু করা উচিত হবে না, যা পরিবেশের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
ইংরেজি থেকে ভাষান্তরিত
ভারতের 'পুবে তাকাও' নীতির খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মিয়ানমার, ভারত ও চীনের মধ্যে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সেতুর ভূমিকা পালনে একেবারে সঠিক অবস্থানে রয়েছে। একটি আঞ্চলিক অর্থনীতি গঠনে আমাদের একত্রে কাজ করা উচিত, যা এই অঞ্চলের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও যোগাযোগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে। অর্থনৈতিক সমন্বয় সাধনের জন্য শ্রেয়তর যোগাযোগ হলো শ্রেষ্ঠ পন্থা এবং তার থেকেও অনেক বেশি আমরা করতে পারি যোগাযোগের পুরনো শাখা-প্রশাখাগুলোকে সচল করে ও নতুন পথ সৃষ্টি করে। বেশ কয়েকটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করতে দু'দেশের সরকার সম্মত হয়েছে। আশা করি খুবই প্রতীকী ত্রিদেশীয় মহাসড়কের নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে সমাপ্ত হবে, যা ভারত-মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডকে সংযুক্ত করবে। ভারত কালাদান বহুমুখী পরিবহন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার মধ্যে রয়েছে সিত্তে বন্দরের আধুনিকায়ন এবং চিন প্রদেশের পালেত্তা শহরের সঙ্গে মিজোরাম প্রদেশের ভারতীয় সীমান্তকে সংযুক্ত করার জন্য একটি মহাসড়ক নির্মাণ।
বিমসটেক ও মেকং গঙ্গা সহযোগিতার মতো উদ্যোগগুলো বর্ধিত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সংযোগের জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করে দেয়। মিয়ানমারের সরকার আমাদের সীমান্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দুটি এলাকা সাগাইন অঞ্চলের নাগা স্বশাসিত এলাকা এবং চিন প্রদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহায়তার জন্য আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরা কয়েকটি সীমান্ত হাট স্থাপনের ব্যাপারে একমত হয়েছি, যার সূচনা হবে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও মিয়ানমারের সাগাইন প্রদেশের সীমান্তবর্তী পাংসাউয়ে। আমরা সীমান্ত অবকাঠামো উন্নয়নেও কাজ করছি।
ভারতীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো মিয়ানমারের প্রতি দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে। আমাদের অর্থনীতির পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে, আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সহায়তা করতে হবে। আর্থিক লেনদেন সহজ করার জন্য দ্বিপক্ষীয় ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের মোট বাণিজ্য ২০১৫ সালের মধ্যে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের বাণিজ্যের ঝোলায় আরও বৈচিত্র্য আনা দরকার। ভারত আরও বেশি করে কৃষিজাত পণ্য, কয়লা ও অন্যান্য খনিজসম্পদ আমদানি করতে পারে এবং ভারী শিল্পবিষয়ক উপাদান, রাসায়নিক দ্রব্যাদি, ওষুধপত্র এবং কাপড় রফতানি করতে পারে। সহযোগিতার জন্য জ্বালানি একটি বিরাট সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। তেল ক্ষেত্রে আমাদের দু'দেশের দীর্ঘ ঐতিহাসিক সহযোগিতার অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা সেই বার্মা শেলের দিনগুলো থেকে চলে আসছে। ভারতের জ্ঞাত তেলের মজুদ রয়েছে দেশটির উত্তর-পশ্চিম অংশে এবং তার সঙ্গে সংযুক্ত উত্তর ও পশ্চিম মিয়ানমারের ভূপ্রকৃতি একই রকম। আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ জ্বালানি অংশীদারির ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতার উন্নয়ন ঘটাতে পারি।
কৃষিক্ষেত্রে সহযোগিতায় ভালোই উন্নতি হচ্ছে। আমরা নায়পেইতাওয়ের কাছে একটি কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা বিষয়ক আধুনিক কেন্দ্র স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এই কেন্দ্র উভয় দেশের আগ্রহের শস্য নিয়ে কাজ করবে, যার মধ্যে রয়েছে ধান, ডাল ও তেলবীজ এবং সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে। আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতাও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, যা কেবল আমাদের স্থল সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেই সঙ্গে সমুদ্র পথে বাণিজ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও জরুরি। আমরা আশা করি, কলকাতা ও সিত্তের মধ্যে সমুদ্রপথ স্থাপনের মাধ্যমেই তা শুরু হবে। পারস্পরিক স্বার্থে আঞ্চলিক ফোরামগুলোতে আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা মিয়ানমারকে আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্বের স্থানে দেখতে চাই, যেহেতু তারা এই বছর বিমসটেক সম্মেলন এবং ২০১৪ সালে আসিয়ান সম্মেলনের স্বাগতিক।
আমার অং সান সু চির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ হয়েছে। তিনি একজন দেশপ্রেমিক নারী। আমি আশা করি, এ সুন্দর দেশটিতে যে পরিবর্তন ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলছে, তিনি তাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবেন। আমরা উদ্ভাসিত যে, তিনি সম্মানজনক নেহরু স্মৃতি বক্তৃতা দিতে সম্মত হয়েছেন। মিয়ানমারের জনগণের একটি প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র গঠন, সব আদিবাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে একত্রে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পাদন ও অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক পুনর্গঠনের অগ্রযাত্রায় ভারতের জনগণ তাদের মঙ্গল কামনা করে। গণতন্ত্রের পথ অবশ্যই মিয়ানমারের অনন্য ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রয়োজনানুসারে গড়ে উঠবে এবং তা হবে স্থানীয় প্রতিভা ও জনগণের ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে। ভারতে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ আলাপ-আলোচনা হলো সত্যিকার সমন্বয় সাধনের সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমঝোতায় আসতে পারার জন্য আমি মিয়ানমার সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। তাদের এখন পুরোপুরি গণতান্ত্রিক পথ অবলম্বন করা উচিত এবং দেশের উন্নয়নে সক্রিয় অংশীদার হয়ে ওঠা উচিত। অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পথ প্রায়ই বিতর্কিত এবং খুব কমই অনায়াস হয়ে থাকে। উন্মুক্ত অর্থনীতিতে প্রবেশের পথে, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অংশগুলোকে সাহায্য করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাবলি গ্রহণ করা প্রয়োজন, যারা এখনও পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ও বিশ্বায়নের সুফল ভোগ করার মতো ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেনি। স্থানীয় সম্প্রদায় ও আধুনিকায়নের প্রক্রিয়ায় স্থানচ্যুত মানুষের প্রয়োজনকে বড় করে দেখতে হবে। আমাদের এমন কিছু করা উচিত হবে না, যা পরিবেশের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
ইংরেজি থেকে ভাষান্তরিত
No comments