পবিত্র কোরআনের আলো-মানুষের মনের কথা সম্পর্কে আল্লাহ সম্পূর্ণ অবগত
১৫৪. ছুম্মা আনযালা আ'লাইকুম্ মিম্ বা'দিল গাম্মি আমানাতান্ নুআ'-ছান ইয়্যাগশা-ত্বা-য়িফাতাম্ মিনকুম; ওয়া ত্বা-য়িফাতুন ক্বাদ আহাম্মাতহুম আনফুছুহুম ইয়াযুন্নূনা বিল্লাহি গাইরাল হাক্কি যান্নাল জা-হিলিয়্যাতি; ইয়াক্বূলূনা হাল লানা-মিনাল আমরি মিন শাইয়িন; ক্বুল ইন্নাল আমরা কুল্লাহূ লিল্লাহি; ইউখফূনা ফী আনফুছিহিম মা- লা-ইউবদূনা লাকা;
ইয়াক্বূলূনা লাও কা-না লানা-মিনাল আমরি শাইউম্ মা-ক্বুতিলনা-হা-হুনা-; ক্বুল্ লাও কুনতুম ফী বুইঊতিকুম লাবারাযাল্লাযীনা কুতিবা আ'লাইহিমুল ক্বাতলু ইলা-মাদ্বা-জিয়ি'হিম; ওয়া লিইয়াবতালিয়াল্লা-হু মা-ফী সুদূরিকুম ওয়া লিইউমাহ্হিসা মা- ফী ক্বুলূবিকুম; ওয়াল্লা-হু আ'লিমুম্ বিযা-তিস্ সুদূর। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৪]
অনুবাদ : ১৫৪. অতঃপর আল্লাহ সেই দুঃখের পর তোমাদের ওপর শান্তি নাজিল করলেন, যা তোমাদের এক দলকে তন্দ্রাচ্ছন্ন করে ফেলে। আরেক দল যারা নিজের প্রাণের চিন্তায় উদ্বিগ্ন ছিল; তারা আল্লাহ সম্পর্কে অবাস্তব ধারণা পোষণ করছিল, যা ছিল জাহেলিয়াতের ধারণা। তারা বলছিল, এ কাজে অর্থাৎ যুদ্ধ পরিচালনায় কি আমাদের কোনো ভূমিকা আছে? (হে নবী), আপনি বলে দিন, সব ভূমিকা বা কর্তৃত্ব আল্লাহর। এসব লোক তাদের মনের ভেতর যেসব কথা গোপন রাখে, সেগুলো আপনার কাছে প্রকাশ করে না। এরা বলে যদি আমাদের কোনো ভূমিকা বা কর্তৃত্ব থাকত তবে আমরা সেখানে নিহত হতাম না। আপনি বলে দিন, তোমরা যদি তোমাদের ঘরে থাকতে তবু যাদের নিহত হওয়া নির্ধারিত ছিল, তারা বের হয়ে পড়ত ওই স্থানের দিকে, যেখানে তারা পতিত হয়েছে। আর এভাবে তোমাদের মনের ভেতর লুকিয়ে রাখা বিষয়গুলো সম্পর্কে আল্লাহ তোমাদের পরীক্ষা করেন এবং এ ঘটনার মধ্য দিয়ে তিনি তোমাদের অন্তরের বিষয় পরিশুদ্ধ করেন। তোমাদের মনের কথা সম্পর্কে আল্লাহ সম্পূর্ণ অবগত আছেন।
ব্যাখ্যা : এ আয়াতে ওহুদ যুদ্ধের সময় এবং এর অব্যবহিত আগে মুসলিম সমাজে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল এবং যুদ্ধের পরেও যে জটিলতা চলছিল এর অন্তর্নিহিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। আল্লাহর রাসুল ওই যুদ্ধে এক হাজার যোদ্ধার এক বাহিনী নিয়ে মদিনা থেকে বের হয়েছিলেন। পথিমধ্যে মোনাফিক আবদুল্লাহ ইবনে ওবাইয়ের নেতৃত্বে ৩০০ যোদ্ধার একটি দল রণকৌশলসংক্রান্ত বিতর্কে জড়িয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আল্লাহর রাসুল ৭০০ যোদ্ধার বাহিনী নিয়ে ওহুদ প্রান্তরে কোরাইশদের তিন হাজার যোদ্ধার বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে প্রায় বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। ওই সময় গিরিপথ পাহারারত ৫০ জন যোদ্ধার ভুলের কারণে মুসলিম বাহিনী আকস্মিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। আকস্মিক এ পরাজয়ে মুসলিম বাহিনীর অনেকেরই মন ভেঙে যায়। অনেকে শাহাদাত বরণ করেন। ফলে মুসলিম বাহিনীর ভেতরে পরস্পরকে দোষারোপ করা এবং রণকৌশল নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ আয়াতে এ রকম দুটি দলের কথাই উল্লেখ করা হয়। এদের এক দল সাময়িক বিভ্রান্তিতে নিপতিত হয়। সাময়িক বিভ্রান্তিগুলোর কথা এ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ আয়াতে অন্য যে দলের কথা বলা হয়েছে, তারা আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
ওহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের তরফে অনেক ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু যারা মনে করে, এই ক্ষতির জন্য মদিনা থেকে বের হয়ে এসে ওহুদ পাহাড়ের পাদদেশে আক্রমণ করা দায়ী, তারা বিভ্রান্ত। ওই সিদ্ধান্ত খোদ আল্লাহর রাসুল গ্রহণ করেছিলেন এবং এটাই ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত। সেদিন যারা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে ছিল তাদের মনের ভেতরেই ছিল দুর্বলতা। আল্লাহতায়ালা সেদিন সব ইমানদার ও দুর্বল ইমানদারকে পরখ করেছেন। এরপর তিনি সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা মানুষের মনের ভেতরে কী আছে তা সম্যক জানেন। এ আয়াতে ঘটনার অন্তর্নিহিত বিবরণ তুলে
ধরা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১৫৪. অতঃপর আল্লাহ সেই দুঃখের পর তোমাদের ওপর শান্তি নাজিল করলেন, যা তোমাদের এক দলকে তন্দ্রাচ্ছন্ন করে ফেলে। আরেক দল যারা নিজের প্রাণের চিন্তায় উদ্বিগ্ন ছিল; তারা আল্লাহ সম্পর্কে অবাস্তব ধারণা পোষণ করছিল, যা ছিল জাহেলিয়াতের ধারণা। তারা বলছিল, এ কাজে অর্থাৎ যুদ্ধ পরিচালনায় কি আমাদের কোনো ভূমিকা আছে? (হে নবী), আপনি বলে দিন, সব ভূমিকা বা কর্তৃত্ব আল্লাহর। এসব লোক তাদের মনের ভেতর যেসব কথা গোপন রাখে, সেগুলো আপনার কাছে প্রকাশ করে না। এরা বলে যদি আমাদের কোনো ভূমিকা বা কর্তৃত্ব থাকত তবে আমরা সেখানে নিহত হতাম না। আপনি বলে দিন, তোমরা যদি তোমাদের ঘরে থাকতে তবু যাদের নিহত হওয়া নির্ধারিত ছিল, তারা বের হয়ে পড়ত ওই স্থানের দিকে, যেখানে তারা পতিত হয়েছে। আর এভাবে তোমাদের মনের ভেতর লুকিয়ে রাখা বিষয়গুলো সম্পর্কে আল্লাহ তোমাদের পরীক্ষা করেন এবং এ ঘটনার মধ্য দিয়ে তিনি তোমাদের অন্তরের বিষয় পরিশুদ্ধ করেন। তোমাদের মনের কথা সম্পর্কে আল্লাহ সম্পূর্ণ অবগত আছেন।
ব্যাখ্যা : এ আয়াতে ওহুদ যুদ্ধের সময় এবং এর অব্যবহিত আগে মুসলিম সমাজে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল এবং যুদ্ধের পরেও যে জটিলতা চলছিল এর অন্তর্নিহিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। আল্লাহর রাসুল ওই যুদ্ধে এক হাজার যোদ্ধার এক বাহিনী নিয়ে মদিনা থেকে বের হয়েছিলেন। পথিমধ্যে মোনাফিক আবদুল্লাহ ইবনে ওবাইয়ের নেতৃত্বে ৩০০ যোদ্ধার একটি দল রণকৌশলসংক্রান্ত বিতর্কে জড়িয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আল্লাহর রাসুল ৭০০ যোদ্ধার বাহিনী নিয়ে ওহুদ প্রান্তরে কোরাইশদের তিন হাজার যোদ্ধার বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে প্রায় বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। ওই সময় গিরিপথ পাহারারত ৫০ জন যোদ্ধার ভুলের কারণে মুসলিম বাহিনী আকস্মিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। আকস্মিক এ পরাজয়ে মুসলিম বাহিনীর অনেকেরই মন ভেঙে যায়। অনেকে শাহাদাত বরণ করেন। ফলে মুসলিম বাহিনীর ভেতরে পরস্পরকে দোষারোপ করা এবং রণকৌশল নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ আয়াতে এ রকম দুটি দলের কথাই উল্লেখ করা হয়। এদের এক দল সাময়িক বিভ্রান্তিতে নিপতিত হয়। সাময়িক বিভ্রান্তিগুলোর কথা এ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ আয়াতে অন্য যে দলের কথা বলা হয়েছে, তারা আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
ওহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের তরফে অনেক ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু যারা মনে করে, এই ক্ষতির জন্য মদিনা থেকে বের হয়ে এসে ওহুদ পাহাড়ের পাদদেশে আক্রমণ করা দায়ী, তারা বিভ্রান্ত। ওই সিদ্ধান্ত খোদ আল্লাহর রাসুল গ্রহণ করেছিলেন এবং এটাই ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত। সেদিন যারা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে ছিল তাদের মনের ভেতরেই ছিল দুর্বলতা। আল্লাহতায়ালা সেদিন সব ইমানদার ও দুর্বল ইমানদারকে পরখ করেছেন। এরপর তিনি সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা মানুষের মনের ভেতরে কী আছে তা সম্যক জানেন। এ আয়াতে ঘটনার অন্তর্নিহিত বিবরণ তুলে
ধরা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments