মাধবকুণ্ডে মৃত্যু-পর্যটন কেন্দ্র নিরাপদ হোক

ঢাকা থেকে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে বেড়াতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার হলেন তিন শিক্ষার্থী। ঘটনার বিবরণে স্পষ্ট হয়েছে, কলেজপড়ূয়া ওই তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু দুর্ঘটনাজনিত। দুর্ঘটনা বলে-কয়ে আসে না, অনেক ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু রোধ করাও কঠিন। কিন্তু দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।


এ জন্য আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়াই প্রত্যাশিত। বিশেষত, আনন্দভ্রমণের স্থানগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু যে দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিরাই ক্ষতিগ্রস্ত হন, তা নয়_ বিয়োগান্ত দুর্ঘটনাগুলো অন্য পর্যটকদের প্রভাবিত করে। দুর্ঘটনার খবর ভ্রমণেচ্ছুদের নিরুৎসাহিতও করতে পারে। তাই এসব স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা দরকার। মাধবকুণ্ডের এই দুর্ঘটনা বলে দিচ্ছে, দুর্ঘটনার শিকার শিক্ষার্থীদের জলপ্রপাত সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট ছিল না। তাদের বয়স ছিল কম, সঙ্গে অভিভাবকরা ছিলেন না। বয়সের দোষে সাঁতার না জানা সত্ত্বেও তারা জলপ্রপাতে নেমে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। পর্যটকদের জন্য সাবধানবাণী উচ্চারণের ব্যবস্থা হয়তো সেখানে আছে, নিরাপত্তা রশিও ছিল বলে খবরে জানা গেছে। কিন্তু কম বয়সী দুরন্ত পর্যটকদের নিবৃত্ত করার যথাযথ ব্যবস্থা কি ছিল? পর্যটনস্থল তদারকির ব্যবস্থা থাকলে, পানিতে নামার আগেই এ শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করা যেত। সবচেয়ে বড় কথা, পানির মৌসুমে জলপ্রপাতে নেমে সাঁতার জানা লোকেরাও বিপদে পড়তে পারেন। ফলে পর্যটন এলাকার আশপাশে উদ্ধার ব্যবস্থা থাকা দরকার এবং বিপদের সময় দ্রুত উদ্ধার কাজ শুরু হওয়া দরকার। শুধু মাধবকুণ্ড নয়, বর্ষা মৌসুমে সমুদ্রসৈকতসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে বিপদ বাড়তে থাকে। প্রায়ই দুর্ঘটনার খবরও মেলে। এসব স্থানে ভ্রমণকে সুখকর ও নিরাপদ করতে ব্যবস্থাপনা জোরদার হওয়া দরকার। পাশাপাশি, পর্যটকদেরও উচিত জেনেশুনে, খবর নিয়ে ভ্রমণ করা। বিশেষত, স্কুল ও কলেজপড়ূয়াদের ভ্রমণে পাঠানোর আগে অভিভাবকদের উচিত তাদের বিশেষভাবে পরামর্শ দিয়ে প্রস্তুত করা। তাদের নিরাপত্তা ও দেখাশোনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও তাদের দায়িত্ব। কম বয়সীদের একাকী ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করাই ভালো। কেউ-ই চায় না আনন্দ-ভ্রমণ বিষাদময় হয়ে উঠুক। সে জন্য অন্তত পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।
 

No comments

Powered by Blogger.