উৎসব-ঈদ তো সবার জন্যই by তৌহিদা শিরোপা
আবারও এসে গেল ঈদ। সবারই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। চলছে কেনাকাটা। ঈদ উৎসবে শরিক হওয়ার জন্য সারা বছর সবাই থাকে অপেক্ষায়। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। এর মধ্যেই ঢাকা মহানগর ছাড়তে শুরু করেছে অনেকেই। রাস্তাঘাট কিছুটা ফাঁকা হয়ে এসেছে। কিন্তু শপিং মল বা কমপ্লেক্সগুলোয় এখনো রয়েছে ভিড়।
ওই এলাকাগুলো দেখে এখনো বোঝার উপায় নেই, ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। সেখানে যানজট এখনো মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। হল ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা। পড়াশোনার চাপ নেই এখন। এখন কেবল ঈদের আনন্দ। মা-বাবার কাছে ফিরে যাওয়া। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই এতদিনে পৌঁছে গেছেন বাড়িতে।
বিপণিবিতান ও ফুটপাতে বেশ ভিড়। কিছু বাদ পড়ে গেল কি না, এমন ভাবনা থেকে কেউ কেউ তালিকা করে নিয়ে বাজারে আসছেন। তবে যাঁরা ঢাকায় ঈদ করবেন, তাঁরা যেন আগামী দুই দিনের জন্য অপেক্ষা করছেন। কেননা, দুই দিন পরই ঢাকা শহর সত্যি সত্যিই প্রায় ফাঁকা হয়ে যাবে।
ঈদের আনন্দ সবাই ভাগ করে নেয়। এমন একজন মানুষের সঙ্গে দেখা হলো, যিনি শুধু ঈদের সময়ই ঢাকায় রিকশা চালাতে আসেন। বুলবুল নামের এই লোকটি এসেছিলেন ময়মনসিংহ থেকে। ধানমন্ডির অর্কিড প্লাজা থেকে তাঁর রিকশায় চেপে বসি। বলি, যাব ফুলার রোড। ঘাড় বাঁকা করে তিনি বলেন, ‘পাঁচ টাকা বেশি দিতে হবে।’ ভাড়া ঠিক না করেই যিনি পাঁচ টাকা বেশি চান, তিনি যে এই শহরের হাল-হকিকত জানেন না, সেটা নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায়। তাঁর কাছেই জানা যায়, ঈদের সময় একটু বাড়তি রোজগার করে আবার ফিরে যাবেন বাড়িতে। যাওয়ার আগে পরিবার ও স্বজনদের জন্য কিনে নিয়ে যাবেন ঈদ উপহার। ছোট ছোট শিশুদের মুখে হাসি ফুটে উঠবে, এই আনন্দে এখনই তিনি বিভোর।
এ সময় তরুণীরা ব্যস্ত নিজেদের সাজাতে। ত্বক ও চুলের যত্নের জন্য তাঁরা ভিড় করছেন বিউটি পারলারগুলোতে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবকে ফোন করে যোগাযোগ করছেন। বাড়ি যাওয়ার সেই কাঙ্ক্ষিত টিকিটখানা পেয়েছে কিনা। না পেলে কীভাবে যাবে, তা নিয়েও দুঃশ্চিন্তা করছেন। তবে যেভাবেই হোক, বাড়ি যে যেতেই হবে। পরিবারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সময় কাটাতে চান সবাই। হয়তো দীর্ঘদিন দেখা হয় না, এমন বন্ধুর সঙ্গেও দেখা হয়। দাদা-দাদি, নানা-নানিরা তাঁদের নাতি-নাতনির জন্য অপেক্ষা করেন। সারা বছর তো ওরা আসতে পারে না। তাই ওদের পছন্দের সব জিনিস তৈরি করে রাখেন। প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটানোই আসল কথা।
ঢাকা কলেজের উল্টো দিকের বিপণিবিতানগুলোতে মানুষের ভিড় লেগেই আছে। দোকানিরা বিক্রিতে ব্যস্ত। এদেরই একজনকে জিজ্ঞেস করি, ‘ভাই তুমি কি তোমার ঈদের পোশাক কিনেছ?’
‘না।’
‘কিনবে কবে?’
‘এখনো জানি না।’
যাঁরা অন্যের জন্য পোশাক বিক্রি করছেন, তাঁরা এখনো জানেন না, নিজের জন্য কিছু জুটবে কি না।
বিজয় সরণি ধরে এগিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ লালবাতিতে দাঁড়িয়ে যায় বাহন। চারদিক থেকে ছুটে আসে মানুষ। নানা বয়সের মানুষ। বয়স্করা আসেন, হাত পাতেন। একটু কম বয়স যাদের, তারা পঙ্গু। নিজেদের অসহায়ত্ব নিয়ে এসে দাঁড়ায় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে। কেউ কিছু দেয়, কেউ দেয় না। কিন্তু কী এক আশায় প্রতিটি গাড়ির দরজায়ই তারা বাড়িয়ে দিচ্ছে হাত।
হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে জাকাতের কাপড়ের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ওতেই যেন ওদের ঈদ। বরাবরের মতো অনেক পরিবারেই ঈদের আনন্দ স্পর্শ করবে না। অন্যসব দিনের মতো তাদের দিন কাটবে। কিংবা কে জানে, হয়তো হঠাৎ করেই ঈদের আনন্দে রাঙিয়ে নিতে পারবে হূদয়।
ঈদ তো সবার জন্যই। সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে থাকাতেই ঈদের আনন্দ।
ঈদ চলে যাবে। আবার ঢাকা শহর তার আপন রূপে ফিরে আসবে। কিন্তু এই যে কয়েক দিনের জন্য সবার আনন্দ-উচ্ছ্বাস, একাত্মতা, এটা যেন সারা বছর ধরে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। হল ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা। পড়াশোনার চাপ নেই এখন। এখন কেবল ঈদের আনন্দ। মা-বাবার কাছে ফিরে যাওয়া। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই এতদিনে পৌঁছে গেছেন বাড়িতে।
বিপণিবিতান ও ফুটপাতে বেশ ভিড়। কিছু বাদ পড়ে গেল কি না, এমন ভাবনা থেকে কেউ কেউ তালিকা করে নিয়ে বাজারে আসছেন। তবে যাঁরা ঢাকায় ঈদ করবেন, তাঁরা যেন আগামী দুই দিনের জন্য অপেক্ষা করছেন। কেননা, দুই দিন পরই ঢাকা শহর সত্যি সত্যিই প্রায় ফাঁকা হয়ে যাবে।
ঈদের আনন্দ সবাই ভাগ করে নেয়। এমন একজন মানুষের সঙ্গে দেখা হলো, যিনি শুধু ঈদের সময়ই ঢাকায় রিকশা চালাতে আসেন। বুলবুল নামের এই লোকটি এসেছিলেন ময়মনসিংহ থেকে। ধানমন্ডির অর্কিড প্লাজা থেকে তাঁর রিকশায় চেপে বসি। বলি, যাব ফুলার রোড। ঘাড় বাঁকা করে তিনি বলেন, ‘পাঁচ টাকা বেশি দিতে হবে।’ ভাড়া ঠিক না করেই যিনি পাঁচ টাকা বেশি চান, তিনি যে এই শহরের হাল-হকিকত জানেন না, সেটা নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায়। তাঁর কাছেই জানা যায়, ঈদের সময় একটু বাড়তি রোজগার করে আবার ফিরে যাবেন বাড়িতে। যাওয়ার আগে পরিবার ও স্বজনদের জন্য কিনে নিয়ে যাবেন ঈদ উপহার। ছোট ছোট শিশুদের মুখে হাসি ফুটে উঠবে, এই আনন্দে এখনই তিনি বিভোর।
এ সময় তরুণীরা ব্যস্ত নিজেদের সাজাতে। ত্বক ও চুলের যত্নের জন্য তাঁরা ভিড় করছেন বিউটি পারলারগুলোতে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবকে ফোন করে যোগাযোগ করছেন। বাড়ি যাওয়ার সেই কাঙ্ক্ষিত টিকিটখানা পেয়েছে কিনা। না পেলে কীভাবে যাবে, তা নিয়েও দুঃশ্চিন্তা করছেন। তবে যেভাবেই হোক, বাড়ি যে যেতেই হবে। পরিবারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সময় কাটাতে চান সবাই। হয়তো দীর্ঘদিন দেখা হয় না, এমন বন্ধুর সঙ্গেও দেখা হয়। দাদা-দাদি, নানা-নানিরা তাঁদের নাতি-নাতনির জন্য অপেক্ষা করেন। সারা বছর তো ওরা আসতে পারে না। তাই ওদের পছন্দের সব জিনিস তৈরি করে রাখেন। প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটানোই আসল কথা।
ঢাকা কলেজের উল্টো দিকের বিপণিবিতানগুলোতে মানুষের ভিড় লেগেই আছে। দোকানিরা বিক্রিতে ব্যস্ত। এদেরই একজনকে জিজ্ঞেস করি, ‘ভাই তুমি কি তোমার ঈদের পোশাক কিনেছ?’
‘না।’
‘কিনবে কবে?’
‘এখনো জানি না।’
যাঁরা অন্যের জন্য পোশাক বিক্রি করছেন, তাঁরা এখনো জানেন না, নিজের জন্য কিছু জুটবে কি না।
বিজয় সরণি ধরে এগিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ লালবাতিতে দাঁড়িয়ে যায় বাহন। চারদিক থেকে ছুটে আসে মানুষ। নানা বয়সের মানুষ। বয়স্করা আসেন, হাত পাতেন। একটু কম বয়স যাদের, তারা পঙ্গু। নিজেদের অসহায়ত্ব নিয়ে এসে দাঁড়ায় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে। কেউ কিছু দেয়, কেউ দেয় না। কিন্তু কী এক আশায় প্রতিটি গাড়ির দরজায়ই তারা বাড়িয়ে দিচ্ছে হাত।
হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে জাকাতের কাপড়ের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ওতেই যেন ওদের ঈদ। বরাবরের মতো অনেক পরিবারেই ঈদের আনন্দ স্পর্শ করবে না। অন্যসব দিনের মতো তাদের দিন কাটবে। কিংবা কে জানে, হয়তো হঠাৎ করেই ঈদের আনন্দে রাঙিয়ে নিতে পারবে হূদয়।
ঈদ তো সবার জন্যই। সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে থাকাতেই ঈদের আনন্দ।
ঈদ চলে যাবে। আবার ঢাকা শহর তার আপন রূপে ফিরে আসবে। কিন্তু এই যে কয়েক দিনের জন্য সবার আনন্দ-উচ্ছ্বাস, একাত্মতা, এটা যেন সারা বছর ধরে থাকে।
No comments