রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, ১৯৬১ থেকে ২০১১ by সেরাজুল ইসলাম সিরাজ
অর্ধ শতাব্দী পর আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এটি নির্মাণে বুধবার রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সই করেছে সরকার। দেড় থেকে দুই বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে প্রকল্পটি চালু হলে এখান থেকে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। নির্মাণ শুরু হওয়ার ৫ বছর পর প্রকল্পটি উৎপাদনে যেতে পারবে।
সরকার ১৯৬১ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নেয়। শুরুর দিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা ধরা হয়ে ছিলো ২শ’ মেগাওয়াট।
রাশিয়া সরকারের সাথে সম্পাদিত কারিগরি এবং আর্থিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের পর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে আর কোন জটিলতা থাকলনা বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
তিনি বলেছেন, ‘এখন শুধুই এগিয়ে যাওয়ার পালা।’
পরিকল্পনাধীন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পাবনার ইশ্বরদীর থানার রূপপুরে স্থাপন করা হবে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ২৬০ একর এবং আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘১৯৬১ সালে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এর ২ বছর পর ১৯৬৪ সালে একটি দেশ থেকে জাহাজ যোগে যন্ত্রপাতি আনার পথে জাহাজটির গতি পরিবর্তন করে পাকিস্তানের করাচি বন্দরে নেওয়া হয়।’
পরে ১৯৬৯ সালে ২শ’ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের লক্ষে একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
‘স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে আবারও এ উদ্যোগ ঝিমিয়ে পড়ে।’
’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আবারও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং ১৯৯৬ সালে প্রণীত জ্বালানি নীতিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়।
১৬ অক্টোবর ’৯৭ সালে মন্ত্রিসভায় দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ’৯৯ সালে প্রকল্পের প্রাক-বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়।
২০০০ সালে বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্লান (বিএএনপিএপি) অনুমোদন দেয় সরকার।
কিন্তু সরকার পরিবর্তনের কারণে আবারও থমকে যায় এই প্রকল্পের কাজ।
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এলে আবারও এর কাজ শুরু করা হয়।
এ নিয়ে ২০০৯ সালের ৩১ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ও রাশিয়া সরকারের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
একই বছরের ১৩ মে স্বাক্ষর করা হয় সমঝোতা স্মারক। একই মাসের ২১ তারিখে ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর হয় রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে।
‘২০১০ সালের জুনের ৯ তারিখে প্রধানমন্ত্রীকে সভাপতি করে একটি জাতীয় কমিটি, বিজ্ঞান প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীকে প্রধান করে কারিগরি কমিটি, সচিবের নেতৃত্বে ওয়ার্কিং গ্রুপ ও ১৭ জুন ৮টি সাব কমিটি গঠন করা হয়।
এর মধ্যে রাশিয়ান বিশেষজ্ঞ দল সরেজমিন পরিদর্শন ও একাধিক বৈঠক করেন। ২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদে ‘দেশে ক্রমবর্ধমান ‘বিদ্যুৎ সংকট নিরসনের লক্ষে অবিলম্বে আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হউক’ শীর্ষক একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়।
১৪-১৫ ডিসেম্বর ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি অথরিটি (আইএইএ) মহাপরিচালক বাংলাদেশ সফর করে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং ৩টি প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করেন।
২০১১ এর ১ আগস্ট রাশিয়ার সাথে সম্পাদিত চুক্তির খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
যার চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে আজ বুধবার সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতার জন্য আগামী ৯ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত আইএইএ’র উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসবে।
এদিকে এ প্রকল্পের জন্য ভূমি উন্নয়ন, অফিস রেস্ট হাউস, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন নির্মাণ ও ৭২ টি আবাসিক ইউনিটের নির্মাণ কাজ আংশিক সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম সরবরাহ ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাশিয়া সরকার ফেরত নেওয়ার অঙ্গীকার করায় এর সকল জটিলতা দূর হয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত এগিয়ে নিতে মিডিয়াসহ সকলের সহযোগিতা রয়েছে। আমরা আশা করছি সকলে সহযোগিতার ধারা অব্যহত রাখবে।’
‘বিদ্যুতের উন্নয়ন ছাড়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনস্বার্থে এ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জাপানের ফুকশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিপর্যয়ের কারণে অনেকে সংশয় প্রকাশ করলে প্রকৃত সত্য হচ্ছে- অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ায় বাংলাদেশের এই কেন্দ্রটি পুরোপুরি নিরাপদ।’
রাশিয়া সরকারের সাথে সম্পাদিত কারিগরি এবং আর্থিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের পর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে আর কোন জটিলতা থাকলনা বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
তিনি বলেছেন, ‘এখন শুধুই এগিয়ে যাওয়ার পালা।’
পরিকল্পনাধীন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পাবনার ইশ্বরদীর থানার রূপপুরে স্থাপন করা হবে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ২৬০ একর এবং আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘১৯৬১ সালে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এর ২ বছর পর ১৯৬৪ সালে একটি দেশ থেকে জাহাজ যোগে যন্ত্রপাতি আনার পথে জাহাজটির গতি পরিবর্তন করে পাকিস্তানের করাচি বন্দরে নেওয়া হয়।’
পরে ১৯৬৯ সালে ২শ’ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের লক্ষে একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
‘স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে আবারও এ উদ্যোগ ঝিমিয়ে পড়ে।’
’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আবারও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং ১৯৯৬ সালে প্রণীত জ্বালানি নীতিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়।
১৬ অক্টোবর ’৯৭ সালে মন্ত্রিসভায় দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ’৯৯ সালে প্রকল্পের প্রাক-বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়।
২০০০ সালে বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্লান (বিএএনপিএপি) অনুমোদন দেয় সরকার।
কিন্তু সরকার পরিবর্তনের কারণে আবারও থমকে যায় এই প্রকল্পের কাজ।
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এলে আবারও এর কাজ শুরু করা হয়।
এ নিয়ে ২০০৯ সালের ৩১ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ও রাশিয়া সরকারের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
একই বছরের ১৩ মে স্বাক্ষর করা হয় সমঝোতা স্মারক। একই মাসের ২১ তারিখে ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর হয় রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে।
‘২০১০ সালের জুনের ৯ তারিখে প্রধানমন্ত্রীকে সভাপতি করে একটি জাতীয় কমিটি, বিজ্ঞান প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীকে প্রধান করে কারিগরি কমিটি, সচিবের নেতৃত্বে ওয়ার্কিং গ্রুপ ও ১৭ জুন ৮টি সাব কমিটি গঠন করা হয়।
এর মধ্যে রাশিয়ান বিশেষজ্ঞ দল সরেজমিন পরিদর্শন ও একাধিক বৈঠক করেন। ২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদে ‘দেশে ক্রমবর্ধমান ‘বিদ্যুৎ সংকট নিরসনের লক্ষে অবিলম্বে আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হউক’ শীর্ষক একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়।
১৪-১৫ ডিসেম্বর ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি অথরিটি (আইএইএ) মহাপরিচালক বাংলাদেশ সফর করে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং ৩টি প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করেন।
২০১১ এর ১ আগস্ট রাশিয়ার সাথে সম্পাদিত চুক্তির খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
যার চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে আজ বুধবার সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতার জন্য আগামী ৯ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত আইএইএ’র উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসবে।
এদিকে এ প্রকল্পের জন্য ভূমি উন্নয়ন, অফিস রেস্ট হাউস, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন নির্মাণ ও ৭২ টি আবাসিক ইউনিটের নির্মাণ কাজ আংশিক সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম সরবরাহ ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাশিয়া সরকার ফেরত নেওয়ার অঙ্গীকার করায় এর সকল জটিলতা দূর হয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত এগিয়ে নিতে মিডিয়াসহ সকলের সহযোগিতা রয়েছে। আমরা আশা করছি সকলে সহযোগিতার ধারা অব্যহত রাখবে।’
‘বিদ্যুতের উন্নয়ন ছাড়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনস্বার্থে এ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জাপানের ফুকশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিপর্যয়ের কারণে অনেকে সংশয় প্রকাশ করলে প্রকৃত সত্য হচ্ছে- অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ায় বাংলাদেশের এই কেন্দ্রটি পুরোপুরি নিরাপদ।’
No comments