বিদেশে কাজ পেতে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দেয় রুশ-চীনা কম্পানি

বিদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের কম্পানিগুলোর মধ্যে ঘুষ দেওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। বার্লিনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) বিশ্বজুড়ে দুর্নীতি-সংক্রান্ত নতুন এক গবেষণায় গতকাল বুধবার এ কথা জানায়। ঘুষ দাতাদের সূচকে সুইজারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের কম্পানিগুলো সবচেয়ে সৎ বলে প্রতিয়মান হয়েছে গভেষণায়।সূচকটি তৈরির জন্য ২৮ দেশে জরিপ চালানো হয়। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ, আমদানির পরিমাণ ও আঞ্চলিক প্রভাবের ভিত্তিতে ওই দেশগুলোকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এসব দেশের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত তিন হাজার নির্বাহী কর্মকর্তার মতামত নেওয়া হয়।


কোন কোন কম্পানি ঘুষ দিতে চায়_সে ব্যাপারে তাদের মতামত নেওয়া হয়। জরিপে রাশিয়া ও চীনের কম্পানিগুলোকে সবচেয়ে বড় ঘুষদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাশিয়া তেল ও গ্যাসের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। আর চীন বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে খনি ও অবকাঠামো খাতে।
টিআই জানায়, ২০১০ সালে চীন ও রাশিয়া বিদেশে প্রায় ১২ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে 'এ দেশগুলোর বৈদেশিক বাণিজ্য ক্রমশ বাড়ছে। যেসব দেশে তারা যাচ্ছে, সেখানে ঘুষ ও দুর্নীতির প্রভাবও বাড়ছে। এ কারণে যেসব কম্পানি ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রতিযোগিতা করতে পারত তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।'
ঘুষ দাতাদের সূচকে শূন্য থেকে ১০ পর্যন্ত একটি স্কেল নির্ধারণ করা হয়েছে। কখনই ঘুষ দেয়নি_এমন দেশগুলোর জন্য ১০ পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়। দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলো সবচেয়ে কম পয়েন্ট পেয়ে শেষের দিকে আছে। রাশিয়া ৬ দশমিক ১ পয়েন্ট পেয়ে সবার শেষে অবস্থান করছে। ৬ দশমিক ৫ পয়েন্ট পেয়ে চীন তার নিকটতম অবস্থানে আছে। ৮ দশমিক ৮ পয়েন্ট পেয়ে ডাচ ও সুইস কম্পানিগুলো সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত সাব্যস্ত হয়েছে। ব্রিটেন অষ্টম ও যুক্তরাষ্ট্র দশম অবস্থানে আছে।
টিআই জানায়, সরকারি কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রেই ঘুষ দেওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। সরকারি টেন্ডার পাওয়া, নিয়ম-নীতি এড়ানো, সরকারি কর্মকাণ্ডের গতি বাড়ানো বা নীতি প্রভাবিত করার জন্যই প্রধানত ঘুষ দেওয়া হয়। ১৯টি শিল্পের মধ্যে তেল ও খনি শিল্পে ঘুষ লেনদেনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। আর কৃষিখাতকে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
টিআই চেয়ারওম্যান হগেট লেবেল বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি বৈদেশকি ঘুষ সামাল দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অবশ্য, চীন ও রাশিয়া সম্প্রতি বিদেশি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানে ঘুষ বন্ধ-সংক্রান্ত আইন পাস করেছে। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.