নাভিশ্বাস উঠেছে শ্রমজীবী মানুষেরঃ দরকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সহানুভূতি
বাজারে পণ্যের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। বেড়ে চলেছে বাস, রিকশা ও সিএনজিসহ যানবাহনের ভাড়া। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাড়ি ভাড়া। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের দামও বাড়িয়ে চলেছে সরকার। অন্যদিকে এসবের তুলনায় আয় তো বাড়ছেই না, বরং অনেকের রোজগার কমে যাচ্ছে। দিনমজুররা দৈনিক কাজ পাচ্ছে না। মূল্যস্ফীতির দাপটে প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। সব মিলিয়েই শ্রমজীবী মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। মধ্যবিত্তরাও চোখে অন্ধকার দেখছেন।
কোনো একটি প্রসঙ্গেই এখন আর শতকরা হিসাব মেলানো যাচ্ছে না। বলা যাচ্ছে না, অমুক পণ্যের দাম এত শতাংশ বেড়েছে। মাস তিনেক আগে প্রকাশিত পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছিল, জীবনযাত্রার ব্যয় দ্বিগুণ বেড়েছে। ফলে মানুষ সাড়ে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত ভাত খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। সর্বশেষ কয়েকটি পরিসংখ্যানেও দেখা গেছে, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। কিন্তু এ পরিসংখ্যানকেও একশ ভাগ সঠিক বলার উপায় নেই। কারণ মূল্য ও ব্যয় বাড়ছে প্রতি মুহূর্তে। মূল্য ও ব্যয় শুধু খাদ্যের বাড়ছে না। এসবের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য যানবাহনের ভাড়া যেমন বাড়ানো হচ্ছে, তেমনি বাড়ানো হচ্ছে বাড়ি ভাড়াও। অর্থাত্ বিক্রেতা থেকে বাস, রিকশা ও সিএনজিসহ যানবাহনের মালিকরা তো বটেই, বাড়িওয়ালারাও যার যার ঘাটতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য দাম বাড়িয়ে চলেছেন। মাঝখান দিয়ে চিড়েচ্যাপ্টা হচ্ছে সাধারণ মানুষ। জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে দৈনিক আমার দেশ যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা পড়লে যে কাউকেই ভীতসন্ত্রস্ত হতে হবে। ক্ষমতাসীনদের কথা অবশ্য আলাদা। কারণ মানুষের যখন জিহ্বা বেরিয়ে পড়ছে তখনও কল্পিত সফলতার ঢেঁকুর তুলে বেড়াচ্ছেন তারা। এই তো কিছুদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী বলে বসেছেন, মানুষ নাকি চারবেলা পেট পুরে খাচ্ছে! অথচ তার সরকারের বদৌলতে সাধারণ মানুষ তো বটেই, মধ্যবিত্তরাও আজকাল বাজারে যাওয়ার কথায় রীতিমত আঁতকে উঠছেন। আড়াইশ-তিনশ টাকার সবজি কিনেও চার-পাঁচজনের পেট ভরাতে পারছেন না তারা। মাছ-মাংস ও ডিমের কথা তো অনেকে ভুলতেই বসেছেন।
এমন অবস্থার কারণ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে লেখালেখি কম করা হয়নি, কিন্তু ক্ষমতাসীনদের মধ্যে মানুষের স্বার্থে উদ্যোগী হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি। গলার স্বরও নামিয়ে আনেননি তারা। সব সময় তারা বরং উল্টো পথেই হেঁটেছেন। যেমন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উত্পাদন না হওয়া সত্ত্বেও সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কেনার পরিবর্তে সরকার মিল মালিকদের মাধ্যমে ধান কেনার বিচিত্র সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর ফলে কৃষকরা বঞ্চিত হয়েছে, অন্যদিকে যথেচ্ছভাবে দাম বাড়িয়েছে মিল মালিকরা। এ জন্যই বাজারে চালের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে এবং দাম কখনও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসেনি। একই কথা প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রেও সমান সত্য। অন্য কিছু কারণেরও উল্লেখ করা দরকার। যেমন—গ্যাস ও বিদ্যুত্সহ জ্বালানির সঙ্কটে পণ্যের উত্পাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে যে শিল্পপতিরা ফার্নেস অয়েলনির্ভর বিদ্যুত্ ব্যবহার করেছেন তারাও লোকসান সামাল দেয়ার জন্য পণ্যের দাম না বাড়িয়ে পারেননি। কথা শুধু এটুকুই নয়। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে না পারলেও সরকার দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুত্ এবং পেট্রল, অকটেন, ফার্নেস অয়েল ও সিএনজিসহ জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে। এর ফলে উত্পাদন ব্যয়ের পাশাপাশি পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে গেছে। সব কিছুর জন্যই শেষ পর্যন্ত বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে শুধু নয়, সামগ্রিকভাবে আর্থিক ব্যবস্থাপনাতেও সরকার ব্যর্থতা দেখিয়ে এসেছে। সব মিলিয়ে বাজার পরিস্থিতি দেখে বলার উপায় নেই যে, দেশে সত্যি কোনো সরকার রয়েছে। কারণ কোনো পণ্যের দামই রাতারাতি বাড়েনি। বেড়ে চলেছে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে। কিন্তু কোনো পর্যায়েই ধমক দেয়ার এবং লম্বা আশ্বাস ও গালগল্প শোনানোর বাইরে মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার ফলপ্রসূ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ঔদাসীন্যের আড়ালে সরকারের প্রশ্রয় বরং ব্যবসায়ীদের বেপরোয়া করেছে, যার মাশুল গুনতে গিয়ে সাধারণ মানুষের তো বটেই, নাভিশ্বাস উঠছে মধ্যবিত্তদেরও। মানুষ এখন কোনোভাবে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছে।
আমরা মনে করি, এভাবে চলতে পারে না। মানুষ চারবেলা খাচ্ছে ধরনের গালগল্প শোনানোর মাধ্যমে টাউট ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় ও সহযোগিতা দেয়ার পরিবর্তে সরকারের উচিত কঠোরতার সঙ্গে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা ও পণ্যের মূল্য কমিয়ে আনা। তেমন চেষ্টা করলেই জয়ধ্বনি উঠবে চারদিকে। এ জন্য বেশি দরকার সরবরাহ ঠিক রাখাসহ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। দরকার জনগণের জন্য একটু সহানুভূতি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া মানুষের যে উপায় থাকে না সে কথাটা আমরা অবশ্য স্মরণ করিয়ে দিতে চাই না।
এমন অবস্থার কারণ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে লেখালেখি কম করা হয়নি, কিন্তু ক্ষমতাসীনদের মধ্যে মানুষের স্বার্থে উদ্যোগী হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি। গলার স্বরও নামিয়ে আনেননি তারা। সব সময় তারা বরং উল্টো পথেই হেঁটেছেন। যেমন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উত্পাদন না হওয়া সত্ত্বেও সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কেনার পরিবর্তে সরকার মিল মালিকদের মাধ্যমে ধান কেনার বিচিত্র সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর ফলে কৃষকরা বঞ্চিত হয়েছে, অন্যদিকে যথেচ্ছভাবে দাম বাড়িয়েছে মিল মালিকরা। এ জন্যই বাজারে চালের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে এবং দাম কখনও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসেনি। একই কথা প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রেও সমান সত্য। অন্য কিছু কারণেরও উল্লেখ করা দরকার। যেমন—গ্যাস ও বিদ্যুত্সহ জ্বালানির সঙ্কটে পণ্যের উত্পাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে যে শিল্পপতিরা ফার্নেস অয়েলনির্ভর বিদ্যুত্ ব্যবহার করেছেন তারাও লোকসান সামাল দেয়ার জন্য পণ্যের দাম না বাড়িয়ে পারেননি। কথা শুধু এটুকুই নয়। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে না পারলেও সরকার দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুত্ এবং পেট্রল, অকটেন, ফার্নেস অয়েল ও সিএনজিসহ জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে। এর ফলে উত্পাদন ব্যয়ের পাশাপাশি পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে গেছে। সব কিছুর জন্যই শেষ পর্যন্ত বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে শুধু নয়, সামগ্রিকভাবে আর্থিক ব্যবস্থাপনাতেও সরকার ব্যর্থতা দেখিয়ে এসেছে। সব মিলিয়ে বাজার পরিস্থিতি দেখে বলার উপায় নেই যে, দেশে সত্যি কোনো সরকার রয়েছে। কারণ কোনো পণ্যের দামই রাতারাতি বাড়েনি। বেড়ে চলেছে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে। কিন্তু কোনো পর্যায়েই ধমক দেয়ার এবং লম্বা আশ্বাস ও গালগল্প শোনানোর বাইরে মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার ফলপ্রসূ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ঔদাসীন্যের আড়ালে সরকারের প্রশ্রয় বরং ব্যবসায়ীদের বেপরোয়া করেছে, যার মাশুল গুনতে গিয়ে সাধারণ মানুষের তো বটেই, নাভিশ্বাস উঠছে মধ্যবিত্তদেরও। মানুষ এখন কোনোভাবে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছে।
আমরা মনে করি, এভাবে চলতে পারে না। মানুষ চারবেলা খাচ্ছে ধরনের গালগল্প শোনানোর মাধ্যমে টাউট ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় ও সহযোগিতা দেয়ার পরিবর্তে সরকারের উচিত কঠোরতার সঙ্গে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা ও পণ্যের মূল্য কমিয়ে আনা। তেমন চেষ্টা করলেই জয়ধ্বনি উঠবে চারদিকে। এ জন্য বেশি দরকার সরবরাহ ঠিক রাখাসহ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। দরকার জনগণের জন্য একটু সহানুভূতি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া মানুষের যে উপায় থাকে না সে কথাটা আমরা অবশ্য স্মরণ করিয়ে দিতে চাই না।
No comments